যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে মোট পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার নয়শ ৪১ জন। তার মধ্যে প্রাণ গেছে অন্তত ২৩ হাজার ছয়শ ৪০ জনের। অন্যদিকে উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস সারাবিশ্বে ছড়িয়ে গেলেও চীন দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার দু’শ ৪৯ জন।
সে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে তিন হাজার তিনশ ৪১ জন। সেই হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে চীনের তুলনায় সাত গুণেরও বেশি মানুষ। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার সংখ্যাও চীনের তুলনায় সাতগুণেরও বেশি।
এছাড়া চীনে বর্তমানে আক্রান্ত অবস্থায় আছে মোট ১৭৭০ জন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৬ হাজার তিনশ ৫৩ জন। চীনে গুরুতর রোগীর সংখ্যা মাত্র ১১৬ জন এবং যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর অবস্থায় আছে ১২ হাজার সাতশ ১২ জন।
চীনে আক্রান্তদের মধ্যে ৭৭ হাজার সাতশ ৩৮ জনই সুস্থ হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরেছে ৩৬ হাজার নয়শ ৪৮ জন।
এদিকে উহান শহরে করোনা ছড়িয়ে পড়ার জেরে অস্থায়ীভাবে হাসপাতাল নির্মাণের সময় লেইশেনশেন হসপিটালের প্রধান ওয়াং শিংহুয়ান বলেছিলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মিলে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, মহামারি করোনায় তার তুলনায় অনেক বেশি মানুষ মারা যাবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মতো শহরগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে আগেই সতর্ক থাকতে বলেছিলেন তিনি। বর্তমানে নিউইয়র্কে একের পর এক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে করোনাভাইরাসে।
ওয়াং শিংহুয়ান সম্প্রতি বলেছেন, এই সংক্রামক রোগ দুই বিশ্বযুদ্ধে মারা যাওয়া মোট মানুষের তুলনায় বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। এটা (করোনা) সত্যিই ব্যাপক ভয়ঙ্কর। এই পরিস্থিতিতে যে কোনো রাজনৈতিক শক্তি কেবল নিজস্ব প্রয়োজন বিবেচনা করাটা এবং সাধারণ মানুষের জীবনকে অবহেলা করা অত্যন্ত বোকামি।
তার পরেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর আগে করোনাভাইরাসকে চীনা ভাইরাস বলে বিতর্কে পড়েছেন। ওয়াং শিংহুয়ান মাস্ক পরার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন এবং হাসপাতালে সরঞ্জাম সরবরাহ যথেষ্ট রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যখন নিউইয়র্কের ডাক্তারদের সঙ্গে আমার কথা হয়, তারা বলেছিল ফেস মাস্ক ব্যবহার করা কিংবা না করার বিষয়টা সংস্কৃতির ব্যাপার। আমি মনে করি ফেস মাস্ক ব্যবহার করা কোনো সংস্কৃতির ব্যাপার নয়। এটা বিজ্ঞানসম্মত। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, নিজেদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরতে হবে।
নিউইয়র্কে মহামারিটি ছড়িয়ে যাওয়া নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। তিনি বলেন, উহানে সে ধরনের ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে। অনেক রোগীর মধ্যেই হালকা ধরনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। তাদেরকে বাড়ি ফিরে গিয়ে আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পরে আমরা বুঝেছি, এটা বড় ধরনের ব্যর্থতা। এই ভুল এখন নিউইয়র্ক করছে।