বরিশালের বানারীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ কে এম ইউসুফ আলীর আড়ত থেকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২৫৬ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোবাইল কোর্টে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড় বাজারে ২৫৬ বস্তা চাল ‘নুরজাহান মার্কা’ বস্তায় পরিবর্তন করার সময় স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদকে জানান। তিনি গিয়ে ওই ২৫৬ বস্তা চাল জব্দ করে ইউসুফ আলীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে সেখানে মোবাইল কোর্টে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। এ সময় বানারীপাড়া থানার ওসি শিশির কুমার পাল, উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) কমল কান্তি অধিকারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে ইউসুফ আলী জানান, সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ওরফে কুড়া রফিকের কাছ থেকে সাড়ে ৭ মে.টন চাল তিনি ক্রয় করেন। যার ডিউ তার কাছে রয়েছে। ওই চাল উপজেলার ধারালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্রকল্পের সভাপতি কুদ্দুস হাওলাদারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ক্রয় করে তার কাছে বিক্রি করেছেন। গত ৩১ মার্চ ওই প্রকল্পের চালের ছাড়পত্র দেওয়া হলেও ১৭ এপ্রিল সকালে খাদ্যগুদাম থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ কে এম ইউসুফ আলীর আড়তে নেওয়া হয়। ভিজিএফ, ভিজিডি, কাবিখা কিংবা টিআরের খাদ্যশস্য (চাল/গম) ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান না থাকলেও বানারীপাড়ায় প্রকাশ্যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাদ্যগুদাম থেকে এসব চাল/গম বিকিকিনি হয়ে থাকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ জানান, ইউসুফ আলীর আড়ৎ থেকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২৫৬ বস্তা চাল জব্দ করে তাকে মোবাইল কোর্টে ৬ মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। ওই চাল বরিশালের সংরক্ষিত সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরার কোটার বরাদ্দের প্রকল্পের চাল বলে তাকে ইউসুফ আলী জানিয়েছেন বলে জানিয়ে ইউএনও আরো জানান, সিপিসির বিরুদ্ধেও এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরার অনুকুলে দেওয়া বরাদ্দ থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান আলী হাওলাদারের মাধ্যমে সাড়ে ৫ মে.টন চাল ৫ শতাধিক দরিদ্র পরিবারের মাঝে তিনি বিতরণ করিয়েছেন বলে জানা গেছে।

উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) কমল কান্তি অধিকারী জানান, কয়েকদিনে বিভিন্ন প্রকল্পের সিপিসিরা ৩৮ মে.টন ৮৪৬ কেজি চাল খাদ্যগুদাম থেকে তুলে নিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে ওই চালও খোলাবাজারে বিক্রি করা হয়েছে।