ভোলার মনপুরায় শ্রীরাম নামে এক যুবক মহানবী (সা.) ও বিবি আয়শাকে জড়িয়ে কটূক্তিমূলক ফেসবুকে পোস্ট শেয়ারকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও মুসল্লিদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুম্মার পর মনপুরা উপজেলার রামনেওয়াজ জামে মসজিদের মুসল্লি, কাউয়ারটেক কিল্লার পাড় জামে মসজিদের মুসল্লি ও চৌমুহনী জামে মসজিদের মুসল্লিরা রামনেওয়াজ চৌমুহনী বাজারে মিছিলসহ একত্র হয়ে প্রতিবাদ করে।
এ সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ শ্রীরাম দাসের চৌমুহনী বাজারে দোকান ঘরে হামলা শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দিলে উত্তেজিত মানুষের সঙ্গে পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
এদিকে ফেইসবুকে মহানবী ও বিবি আয়েশাকে নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট শেয়ার দেওয়া যুবক শ্রীরামকে গ্রেপ্তার করেছে মনপুরা থানা পুলিশ। শ্রীরাম মনপুরা উপজেলা রামনেওয়াজ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার দুলাল চন্দ্র দাসের ছেলে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
পুলিশের ছোড়া গুলিতে মনপুরা উপজেলার বাসিন্দা জহির, সাইফুল, করিম, আল আমিন, রাহাত ও ছোট করিম আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনার তিন ঘণ্টা পর আবারও মাগরিবের নামাজের পর হাজিরহাট ইউনিয়নে ফকিরহাটে কয়েকটি দোকানে উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করে বলে জানা যায়।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার মনপুরা উপজেলার রামনেওয়াজ ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার দুলাল দাসের ছেলে শ্রীরাম চন্দ্র দাস তার ফেসবুকে মহানবী (সা.) ও বিবি আয়শাকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্যের একটি পোস্ট শেয়ার করে। তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়।
শুক্রবার সকালে উপজেলার ইমামদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রীরামের শাস্তি নিশ্চিত করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরে শ্রীরামকে আটকে দেরি হলে শুক্রবার জুমার পর রামনেওয়াজ বাজার জামে মসজিদের মুসল্লি, কাউয়ারটেক কিল্লারপাড়া জামে মসজিদের মুসল্লি ও চৌমুহনী বাজার জামে মসজিদের মুসল্লিরা এই ঘটনার প্রতিবাদে মিছিলসহকারে মনপুরার রামনেওয়াজ বাজারে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবককে আটকসহ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে কিছুসংখ্যক উত্তেজিত জনতা শ্রীরামের চৌমুহনী বাজারে ভাড়া দেওয়া দোকান ঘরে হামলা করলে পুলিশ বাধা দেয়।
পরে পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ বাঁধে। এই ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। পুলিশের গুলিতে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া য়ায়। আহতদেরকে মনপুরা হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহানবী (সা.) ও বিবি আয়শাকে জড়িয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট শেয়ার দেয়া শ্রীরাম নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন অবস্থা স্বাভাবিক আছে।
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, ফেসবুকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনপুরায় কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। শ্রীরাম নামে এ যুবককে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসন সজাগ দৃষ্টি রাখছে। এলাকাবাসী, ইমামদের ও প্রশাসকের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক চলছে।
kalerkantho