ক্রেতা উপস্থিতি কম থাকায় অলস বসে আছেন দোকানি। ছবিটি গতকাল রাজধানীর ভাটারা বাজার থেকে তোলা

দেশে সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর পরিবহন ও শ্রমিক সংকটে পণ্যের সরবরাহে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ফলে কিছু কিছু পাইকারি বাজারে পণ্যের মজুদ বাড়ালেও খুচরা বাজারে ঘাটতি ছিল। এতে দামও বেড়েছিল অনেক পণ্যের। তবে এখন আবার তা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ঢাকার বাইরে থেকে পণ্য আসছে যেমন, তেমন ঢাকার বাইরে যাচ্ছেও। ফলে দামও স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তবে দাম কমার পেছনে আরেকটি কারণের কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, মৌসুমি ফল বাজারে আসায় নিত্যপণ্যের ওপর চাপ কিছুটা কমে এসেছে। ফলে দাম কমছে। রাজধানীর মালিবাগ, গোপীবাগ, মুগদা ও মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আটা, মায়দা, চিনি, ডাল, মুরগি, পেঁয়াজ-রসুন ও আদার দাম কমেছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত ২৭ মে থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাত দিনে মোট ১৫টি পণ্যের দামে পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ডিম, আলু ও ছোলা এই তিনটি পণ্য ছাড়া বাকিগুলোর দাম কমেছে। কমার তালিকায় রয়েছে ব্রয়লার মুরগি, বড় দানার মসুর ডাল, আটা, ময়দা, সর্বশেষ বুধবার মসলাজাতীয় পণ্য আদা, পেঁয়াজ ও এলাচের দাম কমেছে। এর আগের দিন কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা কমেছে আটা ও ময়দার দাম।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মনিহারি বণিক সমিতির সভাপতি হাজি শফি মাহমুদ বলেন, ‘আগে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা ছিল। ফলে মোকামে পণ্য আনা এবং মোকাম থেকে খুচরা বাজারে সরবরাহে সমস্যা হতো। এখন সেটা নেই। পর্যাপ্ত পণ্য রয়েছে মোকামগুলোতে। তবে চাহিদা কমেছে।’ তিনি বলেন, আগে মানুষ রিলিফ দিতে পণ্য কিনত। এখন তা হচ্ছে না। এ ছাড়া মৌসুমি ফল নামায় ডালসহ কয়েকটি পণ্যের চাহিদা কমেছে। ফলে দামও কমে আসছে। তবে সামনের বর্ষা মৌসুমে আবার কিছুটা সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পর রাজধানীর বাজারগুলোতে একের পর এক পণ্যের দাম কমছে। খুচরা বাজারে প্যাকেট আটার দাম কমেছে তিন থেকে সাত টাকা পর্যন্ত। আগে ৩৩-৪২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া প্যাকেট আটার দাম কমে ৩০-৩৫ টাকা হয়েছে। কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমেছে প্যাকেট ময়দার দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে।

রামপুরার মুদি ব্যবসায়ী শিপলুর দেওয়া তথ্য অনুসারে খোলা ময়দার দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমেছে। আগে যে ময়দা ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল তা এখন ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটার দাম কেজিতে দুই টাকা কমে এখন ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটা ছাড়াও দীর্ঘদিন ভুগিয়ে অবশেষে কমেছে বড় দানার ডালের দাম। রোজার মধ্যে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া বড় দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে ১৫ টাকা কমে এখন ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় নেমেছে।