কণ্ঠশিল্পী আকবরের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল আজীবন ফ্রি করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে এই শিল্পী সারাজীবন বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন। সোমবার বিকেলে কণ্ঠশিল্পী আকবর নিজেই কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আকবর বলেন, ‘আমার স্যার (হানিফ সঙ্কেত) প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর উনি আমার অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্যারের কথা শুনেছেন। তিনি আমার জন্য আরো দুই লাখ টাকার চেক বরাদ্দ করেন এবং পিজি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল) আজীবন ফ্রি করে দিয়েছেন। আমি আমার স্যার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।’
আকবর জানান, ৯ তারিখে চেক ও কাগজপত্র ইস্যু হয়েছে তারা গ্রহণ করেছেন ২০ সেপ্টেম্বর। এছাড়াও আগামী ১ অক্টোবর ভারতে অ্যাপয়েনমেন্ট নেওয়া রয়েছে বলে জানান।
আকবর বলেন, ‘আমি ডিপজল ভাই ও জায়েদ ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। যখন যা লাগে ১০ হাজার ২০ হাজার ডিপজল ভাই পাঠিয়ে দিয়েছে। ভারতে চিকিৎসার খরচ বহন করবেন। ডিপজল ভাইয়ের আগ্রহেই ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। ওখান থেকে ফিরে এলে ফের একটা অ্যাপয়েনমেন্টের দেট দিবে। আপনাদের দোয়ায় আশা করি সুস্থ হয়ে উঠবো।’
কিছুদিন আগেই ডায়াবেটিস ও কিডনিরোগসহ বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত কণ্ঠশিল্পী আকবরকে ঈদের পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় আসেন। এখন বাসাতেই অবস্থান করছেন এই কণ্ঠশিল্পী।
আকবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন।আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন সবসময় উনাকে সুস্থ রাখে এবং নেক হায়াত দান করেন।কারণ আমি উনার প্রতি খু–উ—–উ—ব বেশি কৃতজ্ঞ।উনার মত একজন প্রধানমন্ত্রী আমাদের আছে বলেই আমরা এখনও বাঁচার স্বপ্ন দেখি।আমি নাম না জানা একজন মানুষ।তারপরও গতবার আমি যখন অসুস্থ হয়েছিলাম তখন উনি আমাকে খুব বড় একটা সাহায্য করেছিলেন।আর এবার যখন অসুস্থ হয়ে উনার দারস্থ হয়েছিলাম তখন উনি আমার পরিবারের কথা চিন্তা করে আগের সঞ্চয়পত্রটা স্থির রেখে নতুনভাবে চিকিৎসা করার জন্য দুই লক্ষ টাকার চেক এবং সারাজীবন পিজি হসপিটালে আমার চিকিৎসা ফ্রি করে দিয়েছেন।এমন প্রধানমন্ত্রী পেয়ে সত্যিই আমরা ধন্য। আল্লাহ তুমি এই জনদরদী মানুষটাকে খুব ভালো রেখ।আমিন।’
যশোর শহরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। সেখানে টুকটাক গান করতেন। তবে গান নিয়ে ছোটবেলা থেকে হাতেখড়ি ছিল না। আকবরের ভরাট কণ্ঠের গানের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের একজন আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদিতে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’-কিশোর কুমারের এই গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।
পরিবার নিয়ে আকবর মিরপুর ১৩ নম্বরে থাকেন। তাঁর বড় মেয়ে আছিয়া আকবর অথই হারমান মেইনার স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে কামরুল ইসলাম ও মহরম থাকে গ্রামের বাড়ি যশোরে।