পুরো একমাস হাসপাতালে থাকার পর দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে বৃহস্পতিবার রিলিজ দেওয়া হচ্ছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, তার অবস্থা এখন অনেক ভালো। তিনি এখন একা একাই চলাফেরা করতে পারছেন। তেমন রিস্ক ফ্যাক্টর নেই।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, ওয়াহিদা খানমের ব্রেনের একটি অংশ পুরো প্যারালাইজড ছিল, সেটার এখন যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। ফলে তিনি এখন অন্য কারোর সাপোর্ট ছাড়া একা একাই হাঁটতে পারছেন। হালকা একটু সমস্যা যা রয়েছে আশা করা যায় পরবর্তীতে ফিজিওথেরাপিসহ অন্যান্য চিকিৎসা নিলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন।
অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন বলেন, কোনো রকমের জড়তা ছাড়া আগে থেকেই তিনি কথাবার্তা বলতে পারতেন। এখন তেমন কোনো রিস্ক ফ্যাক্টর নেই। ফলোআপ চিকিৎসা এবং ফিজিওথেরাপি নেওয়াই এখন প্রধান কাজ। সেটা উনারা চাইলে সিআরপিতে নিতে পারেন, চাইলে বাসাতেই থাকতে পারেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে হামলার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে রংপুরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে ঢাকায় এনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। তাঁকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে মস্তিষ্কে জটিল অপারেশন পরিচালনা করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন ও তাঁর টিম। চিকিৎসকরা জানান, তার মাথায় ৯টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। আঘাতগুলো হ্যামার (হাতুড়ি) জাতীয় কিছু দিয়ে হয়েছে বলে মনে করছিলেন তারা। মাথার খুলি ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল।
সম্প্রতি ওয়াহিদা খানমকে বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। একই সঙ্গে রংপুরের পীরগঞ্জে ইউএনও হিসেবে কর্মরত তার স্বামী মো. মেসবাউল হোসেনকেও ঢাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে।