নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশবের কিছু সময় কেটে ছিল ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চরবাংরাইল গ্রামের জমিদার মুনতাজ মুন্সী বাড়িতে। শৈশবে তিনি টুঙ্গিপাড়ার ওয়াহেদ মিয়ার সাথে এ গ্রামে এসে মাঝে মধ্যে বেড়াতেন বলে দাবী করা হয়েছে।
এখানে এসে বঙ্গবন্ধু সব সময় খেলাধুলায় মেতে উঠতেন। দিনভর খেলাধুলা করে রাতে ওই মুন্সী বাড়িতেই থাকতেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর শৈশবে কিছু সময় কাটানো সেই চরবাংরাইল গ্রামে এখনও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গ্রামটিতে উন্নয়নের দাবী জানিয়ে ইউএনওর বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন গ্রামবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধুর শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত চরবাংরাইল গ্রামের জমিদার নকুল চন্দ্র ভুঁইয়ার ছেলের স্ত্রী শতবর্ষী অন্যপন্যা ভুঁইয়ার কাছে এসব বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ওয়াহেদ মিয়ার মামা বাড়ি চরবাংরাইল গ্রামের জমিদার বাড়িতে।
জমিদার মুনতাজ মুন্সী ছিল ওয়াহেদ মিয়ার মামা। ওয়াহেদ মিয়া ও তার ছেলে আমিন মিয়া ও নওফেল মিয়ার সাথে ছোট বেলায় বঙ্গবন্ধু এই গ্রামে মাঝে মাঝেই বেড়াতে আসতেন সেই সময়। ছোট বেলায় বঙ্গবন্ধু এই গ্রামে এসে সারাদিন খেলাধুলা করতেন। আমার শশুর নকুল ভুঁইয়া, ওয়াজেদ মোল্যা ও মুনতাজ মুন্সীসহ গ্রামের অনেকের সাথে তিনি ফুটবল খেলতেন।
বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতি বিজড়িত চরবাংরাইল গ্রামের উন্নয়নের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করেছেন গ্রামবাসী। আবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চরবাংরাইল গ্রামে মুন্সী বাড়ি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থান।
বঙ্গবন্ধু ছোট বেলায় এখানে বাবা মাকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। তার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এ গ্রামে উন্নয়ন প্রয়োজন। ফুলবাড়িয়া বাজার থেকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থান চরবাংরাইল মুন্সী বাড়ির সামনে দিয়ে সোনাপুর বাজার পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ, সংশ্লিষ্ট ব্রিজ-কালভাট নির্মাণসহ বঙ্গবন্ধু শৈশব স্মৃতি পাঠাগার ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবী জানানো হয়।
সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন বলেন, আমি ছোট বেলায় আমার বাবা ও দাদার কাছে শুনেছি বঙ্গবন্ধু ছোটকালে চরবাংরাইল গ্রামের মুন্সী বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রাখতে ওই গ্রামে তার একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও উন্নয়ন করার দাবী করছি।
উপজেলা যুবলীগে সভাপতি ও সোনাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাবু বলেন, আমরা মুরব্বীদের মুখে শুনেছি জাতির জনক শৈশবে চরবাংরাইল গ্রামের মুন্সী বাড়িতে আসতেন। ওই গ্রামের উন্নয়ন ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য স্থানীয় সাংসদ ও তার রাজনৈতিক প্রতিনিধিকে অবগত করেছি।
আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ হাসিব সরকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত সোনাপুরের চরবাংরাইল গ্রামের উন্নয়ন সম্পর্কে এলাকাবাসী আমাদের কাছে একটি আবেদন দিয়েছে। আমরা ওই গ্রামটি পরিদর্শন করে ও স্থানীয় প্রবীন ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে মুজিববর্ষের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।