মোঃআব্দুল হান্নান, ক্রাইম রিপোর্টার, সিলেট
দফায় দফায় বৈঠক হলেও এখনো ব্যবস্থাপকের অপসারণ দাবি অব্যাহত রেখেছেন চুনারুঘাট উপজেলার নালুয়া চা বাগান শ্রমিকরা। ম্যানেজার ইফতেখার এনামের অপসারণ হলেই কাজে ফিরতে চান তারা। এর আগ পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা তাদের। ৩১ মে (সোমবার) স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, থানা পুলিশ ও একাধিক বাগান ব্যবস্থাপক সহ শ্রমিক নেতাদের সমাধান কল্পে বৈঠক হয়। বৈঠকে শ্রমিক নেতারা ম্যানেজার ইফতেখার এনামের অপসারণ দাবী জানান আবারও। তখন ফ্যাক্টরির বাহিরে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছিলেন।
শ্রমিক নেতারা বলেন, গত শুক্রবারের ঘটনা শনিবারেই শেষ হয়ে যেতো। যদি ম্যানেজার নিজের ভুল স্বীকার করতেন। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন হয়ে গেছে। তিনি যদি স্বপদে বহাল থাকেন তাহলে এই আন্দোলনে যারা সামনে ছিলেন তাদের ক্ষয়ক্ষতির আশংকা থাকে। তাছাড়া বিগত সময়ে শ্রমিকদের সাথে উনার আচার-আচরণ খুবই খারাপ ছিল। সমাধান হিসাবে উনার অপসারণের বিকল্প কিছু ভাবতে পারছেন না তারা। চা বাগান ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষে বক্তারা বলেন, সামান্য একটা ভুলের কারণে একজন ব্যবস্থাপককে অপসারণ দাবি যৌক্তিক নয়। বাগানের কাঠগুলো বের করার প্রক্রিয়ায় তার ভুল ছিল। কাজ করার ক্ষেত্রে এমন ছোট-খাটো ভুল হতেই পারে। আচার-আচরণে ভুল হয়ে থাকলে সেটাও সমাধান যোগ্য। নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বক্তব্যে প্রস্তাব রাখেন পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। কিন্তু শ্রমিকদের হৈ হুল্লোড়ে বিষয়টি অমীমাংসিতই থেকে যায়।
তারা বারবার ম্যানেজার ইফতেখার এনামকে চোর আখ্যা দিতে থাকেন। তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না বলে জানান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, চুনারুঘাট থানার ওসি (তদন্ত) চম্পক দাম, ইউপি চেয়ারম্যান সনজু চৌধুরী, আমু চা বাগান ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম চৌধুরী, লস্করপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক তারিফ আহমেদ, নালুয়া চা বাগানের ডেপুটি ম্যানেজার ইমতিয়াজ মান্নান সহ অন্যান্য চা- বাগান কর্মকর্তা। শ্রমিকদের পক্ষে ছিলেন, চা শ্রমিক ইউনিয়ন লস্করপুর ভ্যালির সভাপতি রবীন্দ্র গৌড়, সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ বারাইক, যুগ্ম সম্পাদক নিপেন্দ্র পাল, চা শ্রমিক নেতা ও ইউপি মেম্বার নটবর রোদ্রপাল, চা শ্রমিক নেতা ও ইউপি মেম্বার মাখন গোস্বামী, চা শ্রমিক নেতা ও ইউপি মেম্বার চন্দ্র তাতী, চা শ্রমিক নেতা ও ইউপি মহিলা মেম্বার বিজলা কানু প্রমূখ।
বিষয়ে গত ২৯ মে শনিবার স্থানীয় চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে নালুয়া ব্যবস্থাপনা কমিটির সমঝোতা বৈঠকে কোনো সুরাহা না হওয়ায় দ্বিতীয় বৈঠকটি হয়। আগামীকাল থেকে আবারও কর্মবিরতি ও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান শ্রমিক নেতারা। উল্লেখ্য, গত ২৮ মে শুক্রবার সকালে বাগানের নিজস্ব গাড়ি ও শ্রমিক থাকতে ভাড়া করা গাড়ি সিকিউরিটি ইনচার্জ মনিরুলকে দিয়ে প্রায় ১৫০ ঘনফুট সেগুন কাঠ বাগানের বাহিরে পাঠানোকে পাচার আখ্যা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা।