আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক উপ-কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের ছিল নিজস্ব সাইবার টিম। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার জন্য এই সাইবার টিম কাজ করত। ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য আসলে সাইবার টিম মন্তব্যকারীদের প্রতিহত করত।
আবার ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথন বা ছবি প্রচার করা হতো। নানা ছুতোই হেলেনা ও তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ঐসব ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক করেন। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গভীর করে তিনি তাদের ট্রাপে ফেলেছেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, চিকিৎসক, অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, আমলাসহ একাধিক পেশাজীবীর লোকজন।
নিজের মানসম্মানের ভয়ে তারা কাউকে এতো দিন কিছু বলতে পারেননি। বিষয়টি তারা চেপে গেছেন। হেলেনা গ্রেফতারের পর বেশ কয়েক জন ভুক্তভোগী এ ব্যাপারে র্যাব সদর দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার র্যাব সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ত্রাণ বিতরণের জন্য ‘পল্লী মাতা’ এবং চাকরির সুযোগ করে দেওয়ায় ‘মাদার তেরেসা’ নামের দুটি উপাধি নিয়ে প্রচারের জন্য সাইবার টিমকে কাজে লাগান হেলেনা জাহাঙ্গীর।
তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনে হেলেনার কাছ থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) শেখ শাহনুর রহমান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেছেন। হেলেনা অনেক প্রশ্নের উত্তর তিনি হাসিমুখে দিয়েছেন। আবার অনেক প্রশ্নের উত্তর তিনি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। ব্যাংক একাউন্টে কত টাকা আছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে হেলেনা নীরব ছিলেন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা ১৯টি চেকবইয়ের সূত্র ধরে পুলিশ ব্যাংক একাউন্টে কত টাকা জামা আছে—তা জানতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুরোধ জানাবে।
এদিকে, র্যাবের মাঠ পর্যায়ের তদন্তকারী কর্মকর্তারা হেলেনা ও তার স্বামীর মালিকানাধীন পাঁচটি গার্মেন্টস কারখানার সন্ধান পেয়েছেন। গার্মেন্টসগুলো হচ্ছে, মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনে নিট কনসার্ন ইউনিট এবং জেসি এমব্রডারি, হুমায়ারা স্টিকার, জয় অটো গার্মেন্টস ও প্যাক কনসার্ন প্রতিষ্ঠান চারটি নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। প্যাক কনসার্ন যৌথ মালিকানাধীন। এছাড়াও আরও আটটি তৈরি পোশাক কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যে তিনটির জন্য তিনি জমি অধিগ্রহণ করেছেন। চট্টগ্রামের মিরেরসরাইয়ে তার প্যাকেজিং কারখানা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ছিল। তবে এসব তৈরি পোশাক কারখানা তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম দেখাশোনা করেন। জাহাঙ্গীর আলম ২৫ বছর আগে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। কিন্তু কীভাবে এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন—সে ব্যাপারে হেলেনা জাহাঙ্গীর র্যাবের কাছে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
র্যাবের মাঠ পর্যায়ের তদন্তকারী কর্মকর্তারা তার ১৫টি একক মালিকাধীন ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে, উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৫তলা ভবনে পাঁচটি, গুলশানের-২ নম্বরের ৩৬ নম্বর রোডে ৫ নম্বর বাড়িতে পাঁচটি, গুলশান-২ নম্বরের ৮৬ নম্বর রোডে ৭/বি নম্বর বাড়িতে একটি, গুলশান এভিনিউয়ে একটি, গুলশান নিকেতনে একটি, মিরপুরের ১১ নম্বরের ৬ নম্বর রোডে একটি ও মিরপুরের কাজীপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় ১০০ একর জমির সন্ধান পেয়েছে র্যাব। সেই জমি তিনি আরেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যৌথ মালিকানাধীন হয়ে কিনেছেন। ঐ ব্যবসায়ী গুলশান ক্লাবের সাবেক নির্বাচিত এক বড় নেতার ছেলে। ঐ নেতা আবার একটি ছোট দলের বড় নেতা। এছাড়াও হেলেনা বিভিন্নস্থানে সুবিধা পাওয়ার জন্য নানারকম পরিচয় দিতেন। বিশেষ করে ফিল্ম ক্লাবে তার কর্মকাণ্ডে ঐ ক্লাবের সদস্যরা অনেকটা