সুমাইয়া আহমেদ খান আনিকা

ব্যস্ত জীবনে সময় বাঁচাতে হাঁসফাঁস করি সবাই। রান্নার পেছনেও ব্যয় হয় অনেকটা সময়। রেডি রুটি দিতে পারে এর সমাধান। রুটি খাওয়ার আছে আরো সুবিধা। এভারকেয়ার হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছেন মোনালিসা মেহরিন।

ঘুরতে ভালোবাসেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো স্থানে ঘুরতে যান। ঢাকা কিংবা এর আশপাশের কোনো শহর বা গ্রাম হলে খাবার নিয়ে তাকে কোনো টেনশন করতে হয় না। কিন্তু বিপাকে পড়েন পাহাড়, নদী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনো স্থানে ঘুরতে গিয়ে। এসব জায়গায় সহজে পছন্দের খাবার পাওয়া যায় না। পেলেও খাবারের স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন। একবার তো বাধ্য হয়ে একটি নদীর পারের হোটেলে খেয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল বলে জানান তিনি। এখন তাই ব্যাগে করে রুটি নিয়ে যান। সঙ্গে থাকে বাসায় তৈরি ভর্তা কিংবা সবজি অথবা কলা। ভ্রমণপথের মাঝবিরতি আর ক্লান্তি কাটাতে রুটির ওপর ভরসা করেন তিনি। নাজমুলের মতো আপনি চাইলে ঝামেলা এড়াতে ও সময় বাঁচাতে রুটি খেতে পারেন। রুটির আছে আরো নানা উপকার।

সময় বাঁচায়

রুটি তৈরি করতে বেশ সময় লাগে এ কথা ঠিক। কিন্তু যদি রেডিমেড রুটিই হাজির করা হয় আপনার সামনে তখন? এখন বাজারেই নানা রকম রেডিমেড রুটি পাওয়া যায়। এতে আর বাসায় রুটি তৈরির ঝামেলা পোহাতে হয় না। সময়ও বাঁচে।

ঝামেলা কমায়

ভাত যত সহজে রান্না করা যায় রুটি তত সহজে বানানো যায় না। এর জন্য আটা পানিতে মেশাতে হয়। পরিমাণমতো লবণ দিতে হয়। রুটি বানানোও কি সহজ কথা। অনেকের রুটি গোল হয় না বলে ওদিকে যেতেই চান না। আবার বানানো যদিও বা গেল এবার চুলায় ঠিকঠাকমতো ছেঁকাও চাই। তাপের একটু গরমিল হলেই হয় পুড়ে যায়, নয়তো নরম অথবা শক্ত হয়ে যায়। এসব ঝামেলা থেকে সহজেই আপনাকে রেহাই দেবে রেডি রুটি।

রুটির স্বাস্থ্যগুণ

আটা তৈরি হয় গম থেকে। গম ভাঙা আটায় থাকে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নানা রকম পুষ্টিগুণ; যা আমাদের শরীরে প্রায় ৩০০ রকম এনজাইমের কাজ পরিচালনা করে। আটায় প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম নামের খাদ্য উপাদান থাকে। আটায় আছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, আঁশ, ফ্যাট, ম্যাঙ্গানিজ ও ক্যালরির মজুদ। এ ছাড়া আটায় পাওয়া যায় ফলিক এসিড, জিংক, ফসফরাস, কপার, ভিটামিন বি১, বি২ ও বি৩; যেগুলো আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় নানা কাজে সহায়তা করে। ম্যাঙ্গানিজ ফ্যাটি এসিডগুলো হজম করতে সাহায্য করে। আটায় থাকা প্রোটিন রোগ প্রতিরোধ করতে শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি করে। আটায় বিদ্যমান শর্করা শরীরের শক্তি জোগায়। আটার খাদ্য আঁশ বা ফাইবার রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

পেটের মেদ কমাতে রুটি খান

আটায় রয়েছে প্রয়োজনীয় ফাইবার। এই ফাইবার আমাদের শরীরের নানা কাজে লাগে। বিশেষ করে ফাইবার কিংবা আঁশ জাতীয় খাবার পেটের চর্বি কমাতে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিকার এনে দেয়। ফলে যাঁরা মোটা হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন কিংবা স্বাস্থ্য কমাতে চান, পেটের চর্বি কমাতে চান তাঁরা আটার রুটি খেতে পারেন। আটায় ক্যালরি কম থাকে বিধায় মোটা হওয়ার ঝুঁকি কম। ফাইবার সব ধরনের খাবার সহজে পরিপাকে সাহায্য করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। আটার ফ্যাটও পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। 

সুন্দর ত্বকের জন্য আটায় থাকা আঁশ আমাদের শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন জাতীয় উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। এতে আমাদের ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকে। যাঁরা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরাও নিয়মিত আটার রুটি খেতে পারেন। এতে ব্রণ থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আটায় থাকা জিংক যা ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। যাদের গলায় বা মুখে বলিরেখা ফুটে উঠেছে তারাও নিয়মিত আটার রুটি খেতে পারেন। বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে আটা।