রাজধানীর পল্লবী থানার পলাশ নগরের আলোচিত ৪ সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের কাছে বিচার চেয়ে অভিযোগ করলে ৫ দিনেও মামলা নেওয়া হয়নি। উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পল্লবী থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিক নেতা ও মিরপুর সম্মিলিত সাংবাদিক জোট হামলার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করার পর ওই সাংবাদিকদের নামে মামলা করা হয়।
মঙ্গলবার পল্লবী থানায় ৪ সাংবাদিকের নামে মামলা করেন বাদী আনোয়ার হোসেন।
ওই সাংবাদিকরা হলেন, সাপ্তাহিক নতুন বার্তার সম্পাদক ইউসুফ আহমেদ তুহিন (৪০), বাংলানিউটোয়েন্টিফোর.কমের রিপোর্টার ইফতি (৩৪), জাগোকণ্ঠের ক্যামেরা পারসন মোহাম্মদ আলী (৩৬) ও বাংলাদেশের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার এসএম জহিরুল ইসলাম (৪০)।
এছাড়া এজাহারে আসামি করা হয়, গোলাম কিবরিয়া স্বাধীন (৫২), সালাম (৫৫), নুর দেওয়ান (৫৫), আলিক (৪৫), আসাদুজ্জামান রিপন ওরফে সম্রাট (৩২), মিলন ঢালীসহ (৩৫) আরো ৭-৮ জনকে।
বাদী আনোয়ার হোসেন এজাহারে উল্লেখ করেন, নতুন করে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করলে আসামিরা আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাদের দাবিকৃত টাকা না দিলে আমার বসতঘরটি জোরপূর্বক দখল করে নেবে বলে আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে থাকেন। গত রবিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে আমি পল্লবী থানাধীন সেকশন-১১, পলাশনগর, প্লট নং-৯০/১-জি/৩, নির্মাণাধীন বাড়িতে নির্মাণ কাজের তদারকি করিতেছিলাম। ওই সময় ১, ২ ও ৩নং বিবাদীসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন বিবাদী হাতে লাঠিসোটা নিয়ে আমার নির্মাণাধীন বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে আমার কাছে চাঁদার টাকা চায়। আমি চাঁদার টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে বিবাদীরা আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাইয়া অজ্ঞাত নম্বরের একটি পিকআপ যোগে বিভিন্ন সাইজের অনুমান ১ (এক) টন রড, মূল্য অনুমান ৭০,০০০/- (সত্তর হাজার টাকা) নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বিবাদীরা তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা আমাকে সংগ্রহ করে রাখতে বলে। অন্যথায় পরবর্তীতে আমার বসতঘরটি জোরপূর্বক দখল করিয়া নেবে বলে হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার (ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পারভেজ ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত করে দেখছি, ঘটনার সঙ্গে আসামিদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেব।
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, পলাশনগর বেলতলায় ২৯ অক্টোবর ৪ সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা তদন্ত করে দেখছি। মামলা হওয়ার মতো ঘটনা হলে আমরা মামলা নেব।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় সংবাদ পেয়ে রাজধানীর পল্লবী থানা পলাশ নগরের বেলতলা ১০০ দাগ এলাকায় একটি মাদরাসা দখলের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চার সাংবাদিক হামলার শিকার হন। এতে সাপ্তাহিক নতুন বার্তার সম্পাদক ইউসুফ আহমেদ রক্তাক্ত হন। আহত হন আরো তিন সাংবাদিক। তারা হলেন, বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মিরাজ মাহবুব ইফতি, দৈনিক বাংলাদেশের আলো সিনিয়র রিপোর্টার জহিরুল ইসলাম ও অনলাইন পোর্টাল জাগো কণ্ঠের ক্যামেরা পারসন মো. আলী। এই ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ হলেও এখন পর্যন্ত মামলা নেয়নি পুলিশ।
ভুক্তভোগী ইউসুফ আহমেদ বলেন, ৫ দিন আগে আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি, ওই অভিযোগে আনোয়ার হোসেন দুই নম্বর আসামি।
তিনি বলেন, এখন উল্টো ৪ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।