সিলেট প্রতিনিধি:

ছাত্রলীগ নেতার মোঃ আল-ইমাম ও মোঃ আল-ইমরানের বাড়িতে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। গতবুধবার (৬ আগস্ট ২০২৪) দুপুর ২টার সময় জেলা শহর সিলেটে তাদের ভাড়া বাসায় ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের এই ঘটনা ঘটে। মোঃ আল-ইমাম ও মোঃ আল-ইমরান আপন বড়-ছোট দুই ভাই। মোঃ আল-ইমাম সহ-সভাপতি ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ , উপ-কর্মসংস্হান বিষয়ক সম্পাদক, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এবং ছোট ভাই মোঃ আল-ইমরান সিলেট ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

মোঃ আল-ইমাম ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে ঢাকায় বসবাস করতেন। তখন তিনি ঢাকায় ভোটার হন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হৃদয় এর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনিতীতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি বর্তমানে উচ্চতর পড়াশুনার জন্য ইংলেন্ডে অবস্থান করছেন।

অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন রোববার সকাল ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সিলেটে অবস্থান নিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে বিপুলসংখ্যক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এলাকায় সংঘবদ্ধ হন। পরে সিলেটে অবস্থানকারী যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া করলে তারাও পালটা ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ বাধে। পরে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া খেয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পিছু হাটতে বাধ্য হন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সিলেটের এলাকা নিজেদের দখলে নিয়ে বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা সিলেটে তাদের বাড়ি চিহ্নিত করে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং বাসার দরজা ভেংগে প্রবেশ করে। বাসার সব জিনিসপত্র ভেংগে স্বর্ণ অলংকার, গচ্ছিত ৫০ হাজার টাকা ও বাসার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আগুন দিয়ে পুড়ে ফেলে। প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগন্জে ও হামলা করার চেষ্টা চালানো হয়।

সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ নেতা মোঃ আল-ইমামকে তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক একাউন্টে কমেন্ট সেকশানে, মেসেঞ্জারে এবং মুঠোফোনের মাধ্যমে দেশে না আসার হুমকি প্রদান করে। দেশে আসলে জীবন নাশের হুমকীও প্রদান করে। এই হুমকি প্রধানের পর ছোট ভাই মোঃ আল-ইমরান সহ পরিবারের বাকি সদস্যরা সবাই অন্যত্র সরে যাওয়ায় তারা প্রাণে বেঁচে যায়। তার ছোট ভাইকে নিয়ে পরিবারের সবাই চিন্তিত এবং সপরিবার দেশ ত্যাগের চিন্তাও করছেন।

মোঃ আল-ইমাম সাংবাদিকদের মুঠোফোনে জানান তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক। তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে মনে প্রাণে ভালবাসেন। তাই তারা কখনও কোনও অন্যায় কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন না। তিনি আরো বলেন, কি অপরাধ আমাদের? রাজনীতি করা কি অপরাধ? এমন উদ্দেশ্য মূলক আক্রমণকে আমি তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সাথে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাই।

ঘটনাকালীন সময় থানা পুলিশ কর্ম বিরতিতে থাকায় লিখিত ভাবে অভিযোগ করা সম্ভব হয়নি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ থানায় ফিরে আসলে তিনি ঘটনাস্থলের আওতাধীন থানায় সম্পূর্ণ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি ও মূল্যবান কাগজপত্র উল্লেখ করে জিডি করবেন বলে জানান।