অনলাইন ডেস্ক
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণায়লয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন ও পেনসিলভিয়ায় হামলা করা হয়। মোট চারটি উড়োজাহাজ ছিনতাই করে আল কায়েদা জঙ্গিরা এ হামলা চালায়। ‘নাইন ইলেভেন’ নামে পরিচিত ভয়াবহ এ হামলার মারা যায় হাজারও মানুষ, ক্ষতির মুখে পড়ে মার্কিন অর্থনীতিও।
২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে নিইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা টুইন টাওয়ারে প্রথম হামলাটি হয়। আমেরিকান এয়ারলাইনসের বোয়িং-৭৬৭ উড়োজাহাজটি টুইন টাওয়ারের উত্তর ভবনের ৮০তম তলায় আঘাত হানলে তৎক্ষণাৎ শতাধিক নিহত হন।
এর পর দক্ষিণ ভবনের ৬০তম তলায় হামলা করা হলে সেখানেও অনেক নিহত হয়। দুই হামলায় ভবনটিতে আগুন লেগে যায়। আটক পড়ে যায় হাজারও মানুষ। মাত্র ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও হাজারেরও বেশি মানুষকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা। এদের অনেকেই পরবর্তীতে মারা যান।
টুইন টাওয়ার হামলার পর পেন্টাগনে হামলা চালানো হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনায় হামলায় সামরিক ও বেসামরিক মিলিয়ে মোট ১২৫ জন নিহত হয়। হামলাটি চালানোর জন্য জিম্মি করা বিমানটির ভেতরে থাকা ৬৪ জন যাত্রী, বৈমানিক ও কর্মকর্তা নিহত হন।
চতুর্থ হামলা চালানো হয় পেনসিলভিয়ায়। এটি মূলত হামলা চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় ইউনাইটেডের এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট নিউজার্সি থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে পশ্চিম পেনসিলভানিয়ার শ্যাংকসভিলের কাছে একটি ফাঁকা মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এ উড়োজাহাজটিতে থাকা ৪৪ জনের সবাই নিহত হন।
নাইন ইলেভেনে তিন জায়গায় মোট চার হামলায়, হামলার সময় ও পরে মোট ২ হাজার ৯৯৬ জন নিহত হন। এদের মধ্যে ১৯ হামলাকারীও রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩৪৩ জন দমকলকর্মী এবং ৬০ জন পুলিশ সদস্যও ছিলেন। এরা সবাই আটকে পড়াদের উদ্ধারে গিয়েছিলেন। নিহতরা ৭৮টি দেশের নাগরিক ছিল বলে তখন জানানো হয়।
নাইন ইলেভেন হামলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতেও। হামলার পর নিউইয়র্ক স্টক এ্সেচেঞ্জের লেনদেন এক লাফে নিচে নেমে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে এ হামলার প্রভাব এতটাই পড়েছিলে যে এক মাসের মধ্যে ১ লাখ ৪৩ হাজার মানুষ চাকরি হারান।
ধারণা করা হয়, নাইন ইলেভেন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের আনুমানিক ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের ক্ষতি হয়েছিল।