যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান ভারতে পালিয়ে গেছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে কৌশলে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান।
সূত্রটি কালের কণ্ঠকে জানান, তিন দিন আগেই কাজী আনিস ভারতে পালিয়ে গেছে। তবে তিনি কোন বর্ডার দিয়ে গেছেন সেটা নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে এদিকে গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
ক্লাবে ক্যাসিনোর জুয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবলীগের এই নেতাকে নজরদারিতে রেখেছিলেন র্যাব ও পুলিশের তদন্তকারীরা। গত রবিবার তাকে আটক করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে দায়িত্বশীল কেউ খবরের সত্যতা স্বীকার করেননি। এরইমধ্যে খবর এলো তার পালিয়ে যাওয়ার।
যুবলীগসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কাজী আনিস একসময় যুবলীগ অফিসের কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন। শীর্ষ নেতাদের আশীর্বাদে তিনি সংগঠনের নেতা বনে যান। তাঁকে সবাই ‘ক্যাশিয়ার’ বলেই চেনে। গত এক যুগে তিনি শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। কিছু যুবলীগ নেতার সব ধরনের অপকর্মের সঙ্গী এই আনিস।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের একাধিক নেতা বলেন, ক্ষমতাধর আনিসুর রহমান যুবলীগের চেয়ারম্যান বাদে কাউকেই পরোয়া করেন না। ২০০১ সালে যুবলীগের অফিসে কম্পিউটার অপারেটরের কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এরপর নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে বিভিন্ন কাজ ভাগিয়ে নেন। গত ১২ বছরে আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতোই বদলেছে তাঁর ভাগ্য। পাঁচ বছর আগেও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে টিনের ঘর ছিল তাঁর। এখন সুরম্য অট্টালিকা। আছে একাধিক বাড়ি। ময়মনসিংহের ভালুকা, ঢাকার স্বামীবাগ, ইত্তেফাক মোড়, যাত্রাবাড়ী, শুক্রাবাদ ও উত্তরায় আছে বাড়ি। লালমাটিয়া, ঝিগাতলা ও ধানমণ্ডিতে আছে কয়েকটি ফ্ল্যাট। উত্তরা, মিরপুর ও গুলশানে মার্কেটে আছে দোকান। নারায়ণগঞ্জে চটের মিল আছে আনিসুরের।
নেতাকর্মীরা জানান, জি কে শামীম, খালেদসহ কয়েকজনের সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়েন আনিসুর। তাঁর সিন্ডিকেট চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্লাবে জুয়ার আসর চালানোসহ সব অপকর্মে জড়িত। যুবলীগে আনিসুর ‘ক্যাশিয়ার’ নামেই পরিচিত। চাঁদার টাকা সংগ্রহ এবং বিভিন্ন মহলে পৌঁছানোর কাজ করেন তিনি। এক শীর্ষ নেতা ছাড়া সবাই তাঁকে সমীহ করেন। আনিসুরের কারণে ত্যাগী ও সৎ যুবলীগ নেতারা শীর্ষ নেতাদের কাছেও ভিড়তে পারেন না।