এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের চার সদস্যের প্রাণহানি ঘটেছে। মাত্র পনেরো দিনের ব্যবধান এ ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের হায়দরাবাদের মনচেরিয়লের শ্রীশ্রী নগর কলোনিতে। চার জনই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার গুডিমালা সোনা নামে বছর ২৯-এর অন্তঃসত্ত্বা যুবতী হায়দরাবাদের যশোদা হাসপাতালে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সে সময় ডাক্তাররা পরীক্ষা করে জানতে পারেন সদ্যোজাত শিশুর মা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। সন্তান প্রসবের পরেই তাঁর অবস্থা ক্রমে খারাপ হতে থাকে। রাতে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। ডেঙ্গুই এই মৃত্যুর কারণ বলে জানিয়ে দেন চিকিত্সকেরা।
ডাক্তাররা বলছেন, ওই প্রসূতিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। গর্ভধারণের কারণে তাঁর ইমিউনিটি শক্তিও কমে গিয়েছিল। এই অবস্থায় ওই যুবতী সন্তান প্রসবের পর, তাঁকে বাঁচানো ডাক্তাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। প্রসূতি মারা গেলেও, শিশুটি সুস্থ রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তার ডেঙ্গু ধরা পড়েনি।
মৃতের স্বজনরা জানান, ওই যুবতীর মৃত্যুর আগে তাঁর স্বামী, মেয়ে ও দাদুও ডেঙ্গুর শিকার হয়ে মারা গেছেন। মাত্র ১৫ দিনের তফাতে চার সদস্যকে হারিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি।
জানা গেছে, সোনার স্বামী, স্কুলশিক্ষক গুডিমালা রাজু গাট্টু পরিবারে সর্বপ্রথম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। প্রথমে বাড়িতে থেকে তিনি চিকিত্সা করালেও, পরে বাড়াবাড়ি হওয়ায় তাঁকে করিমনগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ১৬ অক্টোবর চিকিত্সাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনার চার দিনের মাথায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এডা লিঙ্গায়া (৭০)। তিনি সম্পর্কে রাজুর দাদা। এই জোড়া শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই পরিবারে সদস্য রাজু ও সোনার ৫ বছরের মেয়ে সেই ডেঙ্গু জ্বরেই মারা যায়।
ডাক্তাররা বলছেন, পরিবারের সবাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার অর্থ তাঁদের ‘ইমিউনিটি’ শক্তি একদম কম। সেইসঙ্গে ডেঙ্গু ভাইরাসও ওই অঞ্চলে ব্যাপক মাত্রায় রয়েছে। বাড়ির আশপাশে কোথাও ডেঙ্গু মশার আঁতুড়ঘর রয়েছে। কেন এমন হলো, সরকারের তা খতিয়ে দেখা উচিত। একটা গোটা পরিবার এভাবে ডেঙ্গুতে শেষ হয়ে যাবে, চিকিত্সকদের কথায়, এটা ভয়ানক প্রবণতা।