বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর এবং ভাস্কর্যবিরোধী প্রচারে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে এই আদেশ দেন।
মামলার আবেদনটিতে অন্য আসামিরা হলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আমির জুনায়েদ আহমেদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মুহাম্মদ মানুনুল হক ও ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সৈয়দ ফয়জুল করিম।
এর আগে গতকাল বুধবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদ সভাপতি এ বি সিদ্দিকী এ মামলার আবেদন করেন। এরপর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে বিচারক মামলাটি আদেশের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী জাতির পিতার ভাস্কর্য বন্ধ করতে বিভিন্ন কার্যকলাপ ও সংঘাত সৃষ্টি করে তাঁদের গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়ায় জাতির পিতার ভাস্কর্যের একটি হাত ভেঙে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মধুর ভাস্কর্যের একটি কান ভেঙে দেওয়া হয়। বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন-এসব সংগঠন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করে দেশকে পাকিস্তান বানানোর পরিকল্পনা করে এবং স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতার নাম এ দেশের মাটি থেকে মুছে ফেলতে চায়।
আবেদনে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত বিএমএ ভবন মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের এক আলোচনাসভায় সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে কোনো ধরনের ভাস্কর্য থাকবে না এবং জাতির পিতার ভাস্কর্য করতে দেওয়া হবে না। এর আগে গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আমির জুনাইদ আহমেদ বাবুনগরী বলেন, মদিনা সনদের নিয়মে যদি দেশ চলে তাহলে কোনো প্রকার ভাস্কর্য থাকতে পারবে না। ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না করলে আরেকটি শাপলা চত্বর ঘটানোর হুমকি দেন তিনি।
আবেদনে আরো বলা হয়, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই এই উগ্রপন্থী স্বাধীনতাবিরোধীরা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয় প্রতিপন্ন করছে। বায়তুল মোকাররমের সামনে এক সভায় ফয়জুল করীম বলেছেন, সব ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আবারো শাপলা চত্বরে জমায়েত করা হবে। তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০/৫০৬/১০৯ ও ৪২৭ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে তাঁদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করছি।’