নিজস্ব প্রতিবেদন:

মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আ: রাজ্জাক হাওলাদার (সৃষ্টি) সন্ত্রাসীদের হামলার স্বীকার হয়েছেন আজ সকাল পোনে আট টার সময় কাঁচিকাটা বাজার সংলগ্ন এলাকায়।
দীর্ঘদিন যাবৎ অত্র এলাকার মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী, হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামী এমদাদ খা ওরফে এক চোখ কানা এমদাদসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা আ: রাজ্জাক হাওলাদার (সৃষ্টির) কাছে মোটা অংকের চাদা দাবি করে আসছিলো।
কিন্তু ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী চাদা দিতে অস্বীকার করে এবং মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এই কারণে সন্ত্রাসীদের ইয়াবা ব্যবসাসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপে কিছুটা ভাটা পরে। সন্ত্রাসীরা এলাকায় কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পরে ।
সন্ত্রাসীদের যতো ক্ষোভ সবই ছিল ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর ওপর। আর সেই কারণে সন্ত্রাসীদের নগ্ন হামলার স্বীকার হলেন ব্যবসায়ী আ: রাজ্জাক হাওলাদার (সৃষ্টি) ।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে
এরকম নগ্ন হামলার স্বীকার হয়েছেন অসংখ্য ব্যবসায়ী ও সমাজের শান্তি প্রিয় মানুষ।
অত্র এলাকার আরেক হতভাগ্য কৃষক আলাউদ্দিন আকন জানান , আমার ভাগনি শাহনাজ পারভীন কেয়ার পৈত্রিক সম্পত্তি দেখাশোনা করতাম। কারণ ওরা সবাই ঢাকায় বসবাস করে। বাড়িতে কোনো ঘরবাড়ি নেই, শুধু খালি জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও কাঠ গাছ আছে। এগুলো দেখাশোনা করতাম।
কিন্তু আমি দেখাশোনা করার কারণে সন্ত্রাসী এমদাদসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা ভাগনির পৈত্রিক বসতভিটা দখল করতে না পেরে ও ঐ পরিত্যক্ত জায়গায় বসে মাদক সেবন ও কেনাবেচায় সমস্যা হওয়ার কারণে আমাকে দিনেদুপুরে দেশীয় অস্ত্র (সাবল) দিয়ে পিটিয়ে আমার দু’টি পা ভেঙ্গে দেয়, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এখন বাড়িতে আছি। আমি চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছি। সন্ত্রাসী এমদাদসহ তার সাঙ্গপাঙ্গের বিরুদ্ধে
আমার ভাগনে মামলা করে এবং সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হলেও এখন জামিনে আছে। জামিনে এসে এখনও আমাকে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। দেশে মনে হয় বিচার নাই, যদি বিচার থাকতো তাহলে আমার সাথে এমন করতে পাড়তো না ওরা। এভাবেই আক্ষেপ আক্ষেপ করতে চোখের জলে বলছিলেন ভুক্তভোগী কৃষক
আলাউদ্দিন আকন।
এর আগে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট বেদে সম্প্রদয়ের মফেজ সরদারের কিশোরী মেয়ে কাজুরি(১৪)কে নৌকায় ভিতরে ধর্ষণ করে নির্মমভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসী এমদাদসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা। আলোচিত এই ধর্ষণ ও হত্যা কান্ডের সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় ও স্হানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং বিভিন্ন টেলিভিশনে ফলাও করে প্রচারিত হয়। প্রশাসনও নড়েচড়ে বসে কিন্তু সেই তৎপরতা বেশিদিন দেখা যায়নি।
সুতরাং সন্ত্রাসীদের কুকর্মের প্রভাবে সমাজের সাধারণ মানুষের শান্তি বিনিষ্ট হচ্ছে। চেয়ারম্যান, মেম্বার দায় সাড়া বক্তব্য দিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছেন। অথচ ডজন খানিক অধিক মামলায় জামিন নিয়ে ও অর্ধ ডজন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে এলাকার মধ্যে দেদারছে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়াচ্ছে, মনে হচ্ছে কেউ দেখার নেই।
সংশ্লিষ্ট থানা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় সন্ত্রাসী এক চোখ কানা এমদাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
অত্র এলাকার কিছু মানুষ এই সন্ত্রাসীদের ইন্ধন জুগিয়ে এলাকার শান্তি বিনিষ্ট করতে সহযোগিতা করছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি। এলাকাবাসী বলেন এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহণ করেন তবেই সন্ত্রাসীদের সমূলে উপড়ে ফেলা সম্ভব হবে। পাশাপাশি আমাদেরও সবার সচেতন ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করা উচিত।
মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গি, চোরাকারবার, ডাকাত, ভূমিদস্যুদের কোন দেশ নাই। কোন দল নাই, কোন সমাজ নেই। ওদের বিরুদ্ধে সবার রুখে দাঁড়াতে হবে। নিজেরদের ভালোর জন্য নিজেরদেরকেই সজাগ থাকতে হবে।
এখন একটা-ই চাওয়া সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা।
এই রিপোর্ট লেখার পূর্ব পর্যন্ত মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। মাদারীপুর সদর
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আ: রাজ্জাক হাওলাদার (সৃষ্টির) অবস্হা শঙ্কামুক্ত বলে জানান সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।
তবে সদর হাসপাতালের বরাদ দিয়ে ভুক্তভোগীর ছোট ভাই আ: মান্নান হাওলাদার জানান রোগীর অবস্হা খুবই সংকটাপন্ন, যেকোন সময় যেকোন অবস্হা হতে পারে। তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। যেহেতু সদর হাসপাতাল থেকে ঘটনাস্থল ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সুতরাং এখনও তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না। এখনও কিছু বুঝতে পাড়ছিনা যে, আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে হবে কিনা!
এ বিষয়ে আপনাদেরকে পরে অবহিত করবো। আমরাও এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি এবং প্রশাসন কি ধরণের ব্যবস্হা নেন। না কি বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে এটা এখন দেখার বিষয়।