করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আজ দুপুরে তাঁর বাসভবনে যাচ্ছে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক দল।

আজ সোমবার (১২ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় যাওয়ার কথা রয়েছে চিকিৎসক দলের। 

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই। তবে শরীরের অভ্যন্তরে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে কি-না তা জানতে নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আজ বেলা আড়াইটার দিকে তাঁর বাসভবনে যাব।’

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের আজ তাঁকে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে বলেও জানান ড. মামুন।

এর আগে গতকাল সোমবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখতে যান তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক দল। বিকেল ৫টায় মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা ‘ফিরোজায়’ প্রবেশ করেন। এ সময় অনলাইনের মাধ্যমে আরো কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং লন্ডন থেকে ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও যুক্ত হন।

বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর মেডিক্যাল বোর্ড তথা তাঁর চিকিৎসকদলের প্রধান অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত বলব, উনার অবস্থা খুবই স্থিতিশীল। আজকে পর্যন্ত উনি যথেষ্ট ভালো আছেন। উনি স্পিরিটেড আছেন। আশা করছি, যদি এভাবে আরো এক সপ্তাহ পার হওয়া যায়, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমরা বিপদ থেকে মুক্ত হয়ে যাব।’

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বাসায় যাওয়া চিকিৎসকদের সঙ্গে খালেদা জিয়া বেশ হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার তো কোনো উপসর্গ ছিল না। ওদের (বাসার আট স্টাফ) করোনা ধরা পড়ার কারণে আমার নমুনাও পরীক্ষা করাতে হয়েছে।’  ওই সূত্র মতে, নিশ্চিত হওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার নমুনা পৃথক জায়গা থেকে দুইবার পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে ফলাফল পজিটিভই এসেছে।

খালেদা জিয়ার অনুরোধে বাসায় আক্রান্ত তাঁর নার্স ও বাবুর্চিসহ সবাইকে পরীক্ষা করে মেডিক্যাল টিম। তবে তাঁদের কারোরই কোনো স্বাস্থ্যগত জটিলতা নেই। আক্রান্ত অবস্থায় পিপিই পরে বাবুর্চিরা রান্না করছেন। তবে আত্মীয়-স্বজনসহ বাইরের কেউই এখন ফিরোজায় যাচ্ছে না। বাসা এখন লকডাউনের মতো পরিস্থিতি করে রাখা হয়েছে।

সূত্র মতে, রাজধানীর ইউনাইটেড, এভারকেয়ার ও স্কয়ার- এই তিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা কথা বলে রেখেছেন। প্রয়োজন হলে এর যেকোনো একটিতে খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়া হবে।

এ ছাড়া এফ এম সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চিকিৎসকদল লন্ডন ও নিউ ইয়র্কের দুজন কনসালট্যান্ট ডাক্তারের সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ করছে।

পারিবারিক সূত্র মতে, খালেদা জিয়ার বাসায় দায়িত্বরত নার্স রূপা আক্তার, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও স্টাফ আবুল খায়ের, আলমগীর, চান্দু, লালু, বাবুর্চি রতন, ড্রাইভার জালাল ও রহিম করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এই স্টাফদের কারো অবস্থাই ততটা গুরুতর নয়। ওই বাসায় রান্না করা খাবারই এখন খালেদা জিয়া খাচ্ছেন বলে জানা গেছে।