নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মানুষের আবেগ আর ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণা করত এহসান গ্রুপ। এ গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগিব আহসানকে গ্রেফতারের পর ১১০ কোটি টাকা আত্নসাতের কথা তিনি স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর তোপখানা রোড থেকে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগিব আহসান ও তার সহযোগী আবুল বাশারকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।তিনি বলেন, রাগিব হাসানের অর্থ জালিয়াতি তদন্তের জন্য দুদক ও সিআইডিকে চিঠি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। গ্রাহকদের টাকা কী অবস্থায় আছে জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ভুক্তভোগীদের যে অভিযোগ ও গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ওই অর্থ জঙ্গি অর্থায়নে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১৮ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না। এরইমধ্যে ১৫টির বেশি মামলা হয়েছে। জামিনও পেয়েছেন তারা। প্রতারণার কারণে রাগিব আরেকবার গ্রেফতার হয়েছিলেন ২০১৯ সালে। কারাভোগও করেছেন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুক্তভোগী জনগণ মানববন্ধন করেছেন।কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ১৯৮৬ সালে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন রাগিব আহসান। হাটহাজারি মাদ্রাসাতেও পড়েছেন।

পরে ২০০০ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসা থেকে মুফতি করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মাদ্রাসায় ইমামতি করেন। পাশাপাশি ২০০৭ পর্যন্ত একটি এমএলএম কোম্পানিতে চাকরিও করেন। ২০০৮ সালে এহসান মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেন নিজেই।কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এহসান গ্রুপে লগ্নি হিসেবে ১০ হাজার সদস্যের কাছ থেকে ১১০ কোটি টাকা নেন তিনি।

অর্থ সংগ্রহে শরিয়াহভিত্তিতে লভ্যাংশের কথা বলতেন। এ জন্য টার্গেট করতেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের। এমনকি এলাকায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করেও বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। এভাবে একে একে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে যান রাগিব।মঈন বলেন, তার অধীনে কাজ করতো ৩০০ মাঠকর্মী। তাদের নির্ধারিত বেতন ছিল না। তাদের কাজ ছিল বিনিয়োগ সংগ্রহ। বিনিয়োগ থেকে তাদের ২০ শতাংশ ‘কমিশন’ দেওয়া হতো।

প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে দুটি বড় মার্কেটও কিনেছেন গ্রেফতার হওয়া রাগিব আহসান। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।