জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসে ১৮৮ একর জমিতে ১৩টি হল এবং ৯টি ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং সহ উপাচার্য ভবন, রেসিডেন্সিয়াল ও কোষাধ্যাক্ষ ভবন সহ সবকিছু নতুন ক্যাম্পাসে করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) কেরাণীগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমদি মৌজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের নিমিত্তে জমি প্রদানের জন্য এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমানে দুই হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট চলছে। এর অর্ধেক টাকা দিয়ে জমি আর অর্ধেক টাকা দিয়ে লেক খনন, ব্রিজ, কার্লভার্ট, রাস্তা, পানি , ইলেকট্রিসিটি এবং ওয়াল নির্মাণ করা হবে। এর পরে মেগা প্রকল্পে নতুন ক্যাম্পাসে একাধিক একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হল, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসন ব্যবস্থা, চিকিৎসা কেন্দ্র, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, সুইমিং পুল, মসজিদ এবং পরিবহণ ও আধুনিক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসকল অবকাঠামো এলাকাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অক্ষুন্ন রেখেই নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “কেরাণীগঞ্জ এলাকাটি দীর্ঘদিন যাবৎ অবহেলিত ছিল, উন্নয়ন ছিল ধীর গতির।
কেরাণীগঞ্জের অন্যতম সমস্যা ছিল বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত। এসময় প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কিশোরী লাল চৌধুরীর প্রতিষ্ঠিত ১৫৭ বছরের পুরানো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ লাভ করেছে এবং প্রতিষ্ঠানটি উচ্চশিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস কোরণীগঞ্জে হওয়ায় অত্র এলাকাবাসীর গর্বিত হওয়া উচিত।
এসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান, প্রক্টর, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, কর্মকর্তা, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও কর্মচারীবৃন্দসহ ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা জেলার প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি কেরাণীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বক্তব্য প্রদান করেন। ঢাকা জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. ইমরুল হাসানের সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.এ) তানভীর আহমেদ, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এলএও) আজিম উদ্দিন এবং কেরাণীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ। এসময় ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের জমির নির্ধারিত (সরকারি) মূল্যের তিনগুণ অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওসমান গনিকে ক্ষতিপূরণের চেক প্রদানের মাধ্যমে প্রায় ১৮৮.৬০ একর জমির জন্য মালিকানা প্রমাণ সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৯৯ কোটি ৮০ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩২ টাকা (প্রায়) এর চেক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হয় এবং আজ ৪০ জন ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চেক হস্তান্তর করা হয়।