করোনাভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ হিসেবে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও খিঁচুনির কথা বলা হচ্ছিল। এই ভাইরাস প্রতিরোধের কোনো ভ্যাকসিন না থাকার কারণে অন্য উপসর্গ দেখে চিকিৎসা করছিলেন ডাক্তাররা। তবে চীনের ডাক্তাররা নতুন এক পদ্ধতিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু করেছেন।
জানা গেছে, সুস্থ মানুষদের শরীর থেকে ব্লাড প্লাজমা নিয়ে তা করোনাভাইরাসে আক্রান্তের শরীরে দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য শুরুতে যে ২০ জন ব্লাড প্লাজমা দিয়েছেন, তাদের সবাই ডাক্তার এবং নার্স। এই ২০ জনই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর সুস্থ হয়ে প্লাজমা দিয়েছেন। তাদের পথ ধরে আরো ১৪ জন প্লাজমা দেন; তারাও করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়ার পর প্লাজমা দিয়েছেন।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ব্লাড প্লাজমা দেওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে ব্লাড প্লাজমা দিয়ে চিকিৎসার জেরে রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার মতো সুসংবাদ এসেছে।
আরো বলা হয়েছে, ব্লাড প্লাজমা দেওয়ার পর গুরুতর রোগীও উঠে দাঁড়াতে পেরেছে। জানা গেছে, ব্লাড প্লাজমা প্রথম একজনের শরীর থেকে নেওয়া হয় ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে। এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি এক রোগীর শরীরে তা দেওয়া হয়। উহানের জিয়াংসি জেলার একটি হাসপাতালে তাকে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এরপর কিছুটা ইতিবাচক ফল পেয়ে ১০ জন রোগীর শরীরে প্লাজমা দেওয়া হয়। গুরুতর অবস্থায় থাকা সেই ১০ জন রোগী বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ। চীনের ন্যাশন্যাল হেলথ কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এই পদ্ধতিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তরা সুস্থ হয়ে উঠছেন।
তবে প্লাজমা দেওয়ার ফলে কিছুটা দুর্বল হয়ে যান দাতা ব্যক্তি। যদিও এতে ভয়ের কিছু নেই। উহানের পেকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হসপিটালের
সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান বলেন, কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাজমা দাতা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
তবে যে কেউ প্লাজমা দিতে পারবে না। তাদের অবশ্যই করোনাভাইরাসমুক্ত হতে হবে। যখন লোহিত, শ্বেত ও অনুচক্রিকা বর্তমান থাকবে, কেবল তখনই প্লাজমা নিয়ে ব্লাড প্লাটিলেট আবারো দাতার শরীরে ফিরিয়ে দিতে হবে। প্লাজমা দেওয়ার পর সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ লাগে স্বাভাবিক হতে।
যদিও এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। গবেষকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কবে নাগাদ ভ্যাকসিন আবিষ্কার হতে পারে, সে ব্যাপারেও সঠিক সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি।
সূত্র : দ্য স্টার অনলাইন