আইন-আদালত – উচ্চকণ্ঠ https://ucchakontha.com সময়ের সাথে প্রকাশ Sun, 09 Apr 2023 07:20:41 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.2 রানা প্লাজা ধস: মালিক সোহেল রানার জামিন স্থগিত https://ucchakontha.com/archives/32416 Sun, 09 Apr 2023 07:20:41 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32416 সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানার জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেছে চেম্বার জজ আদালত। ওইদিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে হবে শুনানি।

রোববার সকালে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী এই আদেশ দেন। এর ফলে তিনি কারামুক্তি পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

রানার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন এ আবেদন করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে জামিন দেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন। এর ৫ দিন পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেনাপোল থেকে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে অপর মামলাটি করে রাজউক। আর দুদক ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।

]]>
রানা প্লাজার ভবন মালিক সোহেল রানার জামিন, বাধা নেই মুক্তিতে https://ucchakontha.com/archives/32382 Thu, 06 Apr 2023 12:17:28 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32382 প্রায় এক দশক আগে সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার জামিন প্রশ্নে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার এ রায় দেন বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরুউদ্দিনের  হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম। কালের কণ্ঠকে এ আইনজীবী বলেন, “হত্যা মামলায় সোহেল রানাকে নিয়মিত জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন। এখন রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গিয়ে এ জামিন আদেশে স্থগিতাদেশ না নিলে তার মুক্তিতে বাধা নেই।”

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহিউদ্দিন দেওয়ান। তিনি কণ্ঠকে বলেন, “জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে যাবে।”

মামলাটি কী পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে এ আইন কর্মকর্তা বলেন, “মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে। পাঁচ শতাধিক সাক্ষী এ মামলায়। তাদের মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ কবে শেষ হবে জানি না।”

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাসস্ট্যন্ড সংলগ্ন আটতলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরো হাজারখানেক শ্রমিক।

বাংলাদেশের ওই ঘটনা সে সময় আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়। দেশে কারখানার অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এলে সরকার ও মালিকরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।

ভবনধসে প্রাণহানির ঘটনায় প্রথমে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগে একটি মামলা করেন সাভার থানার এসআই ওয়ালী আশরাফ। রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ২১ জনকে এজাহারে আসামি করা হয়। তবে তদন্ত শেষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মৃত্যু ঘটানোসহ দণ্ডবিধির ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩৩৭, ৩৩৮, ৪২৭, ৪৬৫, ৪৭১, ২১২, ১১৪, ১০৯, ৩৪ ধারায় বিভিন্ন অভিযোগ আনেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ( সিআইডি) সহকারী সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ২০১৫ সালের ১ জুন অভিযোগপত্র জমা দেন।

মামলাটি এখন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। তবে কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্য এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর এ মামলায় নিম্ন আদালতে সোহেল রানার জামিন আবেদন খারিজ হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। ২০২১ সালের ১ মার্চ হাইকোর্ট তার জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। সে রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিলেন উচ্চ আদালত।

]]>
চিকিৎসক ও নার্স সেজে অভিজাত পাড়ায় চুরি https://ucchakontha.com/archives/32379 Thu, 06 Apr 2023 12:12:21 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32379 ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলামের মা অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে মাঝেমধ্যে ফিজিওথেরাপি দিতে হয়। তাই বাসায় ফিজিওথেরাপিস্টদের আসা–যাওয়া ছিল। একদিন ফিজিওথেরাপিস্ট পরিচয় দিয়ে ঢোকেন এক নারী। তিনি আসলে ফিজিওথেরাপিস্ট নন, সংঘবদ্ধ চোর চক্রের প্রধান। তাঁর নাম আফসানা আক্তার এশা ওরফে মিম।

জাহেদুল ইসলাম বলছিলেন, ‘তাজ্জব হয়ে গেছি, এভাবেও চুরি হতে পারে। আমার বাসা অনেক নিরাপত্তাবেষ্টিত। বাসার দারোয়ান, সিসিটিভি—সবই ছিল। আমার মা অসুস্থ। তাকে সেই তথ্য বলে ফিজিওথেরাপিস্ট পরিচয়ে বাসায় ঢোকেন আফসানা। মাত্র তিন মিনিট বাসায় ছিলাম না। এর মধ্যে মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় চোর।’

সংঘবদ্ধ এই চক্র ধরা পড়েছে। তাদের নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন জাহিদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে চোর চক্রের কথা তুলে ধরেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. আ. আহাদ। তিনি জানান, চিকিৎসক ও নার্সদের অ্যাপ্রোন, মুখে মাস্ক ও গলায় ভুয়া আইডি কার্ড পরে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা বলে অভিজাত পাড়ায় বাসায় ঢুকে অভিনব কায়দায় চুরি করে আসছিলেন চোর চক্রের অন্যতম হোতা কথিত চিকিৎসক আফসানা আক্তার এশা ওরফে মিম ও তাঁর সহযোগীরা। এমন তথ্য পাওয়ার পর গতকাল বুধবার গুলশান থানার পুলিশ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আফসানা ও তাঁর চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে চোরাই ৬টি ল্যাপটপ, ১০টি মুঠোফোন ও ২টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন তন্ময় বিশ্বাস (৩০), স্বপন শেখ (৪৫), নুরুল ইসলাম (২৭), কলিম উদ্দিন কালু ওরফে কলিউল্লাহ (৪০) ও মোখলেছুর রহমান (৫১)।

মো. আ. আহাদ বলেন, ‘আমরা একটি চুরির তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনার তথ্য পাই। চোর চক্রের প্রধান আফসানা খুবই ধূর্ত। তার এ রকম অপকর্মের প্রধান সহযোগী গ্রেপ্তার হওয়া তন্ময়। কোনো বাসায় চুরির আগে রেকি (পর্যবেক্ষণ) করেন চোর চক্রের সদস্যরা। বিশেষ করে খোঁজ রাখেন, কোন বাসায় অসুস্থ ও বৃদ্ধ আছেন। কোন বাসায় কখন মানুষ কম থাকে, কখন কারা বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যায়। তবে সকালের সময়টা চুরির জন্য নিশানা করেন তাঁরা।’

মো. আ. আহাদ বলেন, রাজধানীর গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি ও উত্তরার মতো অভিজাত এলাকা তাঁদের প্রধান নিশানা। এসব এলাকায় এমনও দিন গেছে, একাধিক চুরি করেছেন তাঁরা। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা পুলিশকে বলেছেন, চক্রের প্রধান আফসানার যোগসাজশে কখনো চিকিৎসক, কখনো নার্স পরিচয় দিয়ে বাসায় প্রবেশ করেন তাঁরা। মাত্র দু-তিন মিনিটের মধ্যে ফাঁকা বাসা বা অসুস্থ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতেও মুঠোফোন ও ল্যাপটপ নিয়ে সটকে পড়েন

পুলিশ কর্মকর্তা আ. আহাদ বলেন, বাসায় ঢোকার আগে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে চক্রটি। সেসব তথ্যের সঙ্গে মিল রেখে পরিচয় দেয়। নারী চিকিৎসক বা নার্স পরিচয় দেওয়া, চিকিৎসক বা নার্সের অ্যাপ্রোন, মুখে মাস্ক ও গলায় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখে বাসার দারোয়ানেরা সাধারণত সন্দেহ কমই করেন। এই সুযোগই ব্যবহার করে চুরি করে আসছেন তাঁরা। তিনি বলেন, আফসানাসহ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গুলশান থানাসহ বিভিন্ন থানায় মোট ১৪টি মামলা ও ২টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। গুলশান, নিউমার্কেট, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও থানায় একবার করে মোট চারবার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন চক্রের হোতা আফসানা। এ ছাড়া চক্রের সদস্য মোখলেছুর রহমান তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

]]>
অস্ত্রসহ দিনাজপুরে ৫ ডাকাত আটক https://ucchakontha.com/archives/32370 Thu, 06 Apr 2023 11:55:23 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32370 দিনাজপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে বিভিন্ন ধরনের ধারাল দেশীয় অস্ত্রসহ পাঁচ ডাকাতকে আটক করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাত ২টায় দিনাজপুর-দশমাইল সড়ক এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুপুরে (৬ এপ্রিল) তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আটকরা হলেন, রুবেল হোসেন, জাহিদুল, আনারুল ইসলাম, সিয়াম ইসলাম, ও সজল ইসলাম। সকলের বাড়ি কোতয়ালী থানা এলাকায় এবং প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজী ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতির গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদরের কর্নাই কাটাপাড়া নামক স্থানে পুলিশ পৌঁছালে ডাকাতদল পালাবার চেষ্টা করে।

এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে পাঁচ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে তাদের কাছ থেকে চাইনিজ কুড়াল, ধারাল ছুরি, হাসুয়া ও রশি উদ্ধার করে পুলিশ।

]]>
কুমিল্লায় প্রবাসী হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড https://ucchakontha.com/archives/32363 Thu, 06 Apr 2023 11:47:20 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32363 নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে প্রবাসী আকবর হোসেন বাবুল হত্যায় পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নাসিরন জাহান এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রহমত উল্লাহ রনি, কামাল হোসেন, তাজুল ইসলাম, সজিব ও নিহতের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী লিপি আক্তার। এদের মধ্যে লিপি ও সজিব ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ১ আগস্ট কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার একটি ডোবা থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, মরদেহটি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার আমেরিকা ফেরত আকবর হোসেন বাবুলের।

এর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছবি দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও জানান, এ ঘটনায় ১৬ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

]]>
রেড ক্রিসেন্ট ও জেলা পরিষদ সম্মিলিতভাবে মানব কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে-স্থানীয় সরকার মন্ত্রী https://ucchakontha.com/archives/32230 Sun, 05 Mar 2023 11:37:31 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32230 স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জন্ম লগ্ন থেকে মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাগবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁর জীবন ও রাজনীতি আর্ত মানবতার সেবায় উৎসর্গ করেছেন।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইউনিট চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারিগনের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি আজ ঢাকায় একথা বলেন। এই মতবিনিময় সভার মাধ্যমে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে একযোগে কাজ করবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্যই বর্তমান সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে দেশের উন্নয়ন রোডম্যাপ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন থেকে শুরু করে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে স্কুল কলেজ, রাস্তাঘাট, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত স্থাপন করেছে। এসবই করা হয়েছে যাতে মানুষ উন্নত জীবনের স্বাদ পায়।

এক সময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করলেও এখন উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বর্ণনা করা হয় বলে জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। অতীতে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু মানুষের প্রাণহানির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশ সারা বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহিষ্ণু জাতি হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের রেড ক্রিসেন্টের কাজের সাথে সম্পৃক্ত করার ফলে স্থানীয় সমস্যা নিরসনে তৎপরতা বাড়বে।

এ সময় তিনি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সমগ্র দেশব্যাপী বিস্তৃত স্বেচ্ছাসেবক নেটওয়ার্ককে সরকারের বিভিন্ন মানবিক সহায়তা প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান। মন্ত্রী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের তাদের নিজ নিজ জেলার সমস্যা সমাধানে রেড ক্রিসেন্ট এর মত প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) এটিএম আব্দুল ওয়াহাব।

]]>
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে শ্রীনগর থানার ওসি প্রত্যাহার https://ucchakontha.com/archives/30901 Wed, 27 Oct 2021 20:37:31 +0000 https://ucchakontha.com/?p=30901 নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুসারে ওসি হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা বুধবার (২৭ অক্টোবর) শ্রীনগর থানা থেকে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে যুক্ত হয়েছেন।

খবর নিয়ে জানা যায়, আগামী ১১ নভেম্বর শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখনো পর্যন্ত শ্রীনগর থানায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোনো প্রার্থী হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানা গেছে। তবে কি কারণে নির্বাচন কমিশন তাকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন তা জানা যায়নি।

শ্রীনগর থানার ওসি (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান জানান, ওসি হেদায়েতুল ইসলাম ভূইয়াকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বিধায় তিনি জেলা সদরে যুক্ত হয়েছেন।

]]>
আরো ৫ কম্পানি ইভ্যালির কায়দায়! https://ucchakontha.com/archives/30534 Thu, 07 Oct 2021 04:19:45 +0000 https://ucchakontha.com/?p=30534 বিতর্কিত ইভ্যালির মতো ‘পঞ্জি’ মডেলে ব্যবসা চালাচ্ছে আরো পাঁচটি ই-কমার্স কম্পানি। এই কম্পানিগুলো হচ্ছে—থলে, শ্রেষ্ঠ, আকাশনিল, আনন্দের বাজার ও কিউকম। এদের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক মূল্য ছাড়, সময়মতো অর্ডার সরবরাহ না করা, ক্রেতার পণ্যমূল্য ফেরত না দেওয়া, ক্রেতাকে মিথ্যা তথ্যে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখানোসহ অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কম্পানিগুলো সম্পর্কে অনুসন্ধান চলছে। এ ছাড়া কর্মকাণ্ড ‘অস্বাভাবিক’ মনে হওয়ায় একটি গোয়েন্দা সংস্থা ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) কাছ থেকে এদের সম্পর্কে তথ্য নিয়েছে।

অভিযুক্ত পাঁচ কম্পানির ওয়েবসাইট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা বিশাল ছাড়ে আগাম টাকা নিয়ে নামিদামি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিকস আইটেম বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। মূলত ইভ্যালির মডেলেই এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার ধরন। ব্যাবসায়িক ভাষায় যাকে ‘ইনসেনটিভ’ মডেল ও ‘গ্রুপ বায়িং’ মডেল বলা হয়। ইনসেনটিভ মডেলে ডিসকাউন্ট অফার দিয়ে পণ্য বিক্রি করা হয়। আর গ্রুপ বায়িং মডেলে ক্রেতার কাছ থেকে প্রি-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা নিয়ে সেটা বাল্ক অর্ডারের মাধ্যমে কম মূল্যে পণ্য কিনে ডেলিভারি দেওয়া হয়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়ায় সেটা বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের সামান্য ঝুঁকিতে উচ্চ প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিনিয়োগ করার প্রলোভন দেখানো হয় ‘পঞ্জি স্কিমে’। স্বল্প সময়ে তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই দ্রুত অর্থ উপার্জনের বিতর্কিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করে মাঠে নেমেছে আরো অনেকে। ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলকে সস্ত্রীক গ্রেপ্তারের পর প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন কয়েকজন উদ্যোক্তা। এই খাত থেকে দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ‘শ্রেষ্ঠ’ ডটকমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অস্বাভাবিক মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে গ্রাহকের টাকা নিচ্ছে। এ ছাড়া ‘থলে’ এক্সওয়াইজেড একই রকম অস্বাভাবিক মূল্যছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করছে। ‘আকাশনিল’ ডটকম সময়মতো গ্রাহকের অর্ডারের বিপরীতে ডেলিভারি দিচ্ছে না।

এদিকে ই-কমার্স প্রতারণায় অভিযুক্ত কিউকমের পেমেন্ট গেটওয়ে বা পরিশোধ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (পিএসও) ফস্টার পেমেন্ট বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান নয়। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। ফস্টারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এরই মধ্যে ফ্রিজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিএফআইইউ। গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত করা হয়। মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা গেছে, প্রতারণার দায়ে গত রবিবার কিউকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অস্বাভাবিক ছাড়ে পণ্য বিক্রির নামে অর্থ সংগ্রহসহ বিভিন্ন অভিযোগে এর আগে গত জুনে যে ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকগুলো কার্ড লেনদেন স্থগিত করে তার মধ্যে কিউকম অন্যতম। ফস্টার পেমেন্ট লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করলেও এখনো তা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। সিআইডির অনুরোধে সম্প্রতি তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়।

গ্রাহকদের সঙ্গে ভয়ংকর প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে আরেক ই-কমার্স ‘আনন্দের বাজার’-এর বিরুদ্ধে। তারা রাতের অন্ধকারে গুলশানের জব্বার টাওয়ারের ১৩ তলার কার্যালয় ছেড়ে পালিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে কম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রাহকরা অনেকে সেখানে ভিড় করেন। জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে ব্যবসা শুরু করে ৩০-৪০ শতাংশ ছাড়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটরসাইকেল, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির অর্ডার নিয়েছে আনন্দের বাজার। ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা অমান্য করে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে কিছু গ্রাহকের কাছে পণ্য সরবরাহ করে আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালায় কম্পানিটি। এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির সিইও এ এইচ খন্দকার মিঠুর মোবাইল ফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। ই-ক্যাব বলছে, আনন্দের বাজার অস্বাভাবিক মূল্যছাড় দিয়ে ক্রেতাকে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করেছে।

নতুন পাঁচ কম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ই-ক্যাবের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম শোভন গতকাল বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকে এদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছিলাম। অভিযুক্ত পাঁচ কম্পানির অফারগুলো সন্দেহজনক। তারা ওয়েবসাইটে স্টকের পরিমাণ নেই, ডেলিভারি দিতে গড়িমসি করছিল। এমনকি পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য তারা ব্যাংকে আগাম টাকা ডিপোজিট নিচ্ছিল। এসব দেখে আমাদের কাছ থেকে একটি গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য নিয়েছে।’

অভিযুক্ত পাঁচ কম্পানির গ্রাহক ও লেনদেনের পরিমাণ কত জানতে চাইলে ই-ক্যাবের মহাব্যবস্থাপক বলেন, ‘কম্পানিগুলোর মধ্যে কয়েকটি নতুন, এটা বোঝা মুশকিল। এদের গ্রাহক ও লেনদেন সম্পর্কে জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ৩০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কিছু টাকা পেমেন্ট সিস্টেমে আটকে আছে। নতুন পাঁচটিসহ ২৫টি ই-কমার্স কম্পানির পেমেন্ট গেটওয়েতে প্রায় ২০০০ কোটি টাকা আটকে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকালও আমাদের কাছে শতাধিক গ্রাহক ফোন করে টাকা ফেরত পাওয়ার উপায় জানতে চেয়েছেন।’

প্রতারণার অভিযোগে বহুল আলোচিত ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এবার মামলা দায়ের করা হয়েছে চট্টগ্রামের আদালতে। প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জ মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নুরুল আবছার পারভেজ নামের এক ব্যক্তি। গতকাল বুধবার মামলাটি দায়ের করার পর আদালত এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছে। আসামিরা হলেন ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমান, ভাই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা, ই-অরেঞ্জের কর্মকর্তা আমানুল্লাহ, বীথি আক্তার, জায়েদুল ফিরোজ ও নাজমুল হাসান রাসেল।

বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের ২৭ মে পর থেকে ই-অরেঞ্জ পণ্য সরবরাহের নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করলেও পণ্য সরবরাহ করেনি। এরই মধ্যে ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে গ্রাহকদের জানায়, তারা পণ্য সরবরাহ করবে। কিন্তু এখনো পণ্য সরবরাহ করেনি। এরই মধ্যে বাদী জেনেছেন, ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সেই টাকার মধ্যে বাদী নুরুল আবছার পারভেজ, তাঁর পরিচিত গ্রাহক মোর্শেদ সিকদার ও মাহমুদুল হাসান খান নামের তিনজনের প্রায় ১১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে বিভিন্ন কম্পানির গ্রেপ্তারকৃতরা যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তাতে জানা যায়, অভিযুক্তরা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন। ইভ্যালির আত্মসাতের পরিমাণ ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ই-অরেঞ্জ ২৩২ কোটি টাকা, কিউকম ২৫০ কোটি টাকা, নিরাপদ ডটকম সাত-আট কোটি টাকা, ধামাকা শপিং ১১৭ কোটি টাকা, রিং আইডি (অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, এমএলএম মডেল) ২১২ কোটি টাকা ও এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস (এমএলএম মডেল) ২৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সিরাজগঞ্জ শপিং আত্মসাৎ করেছে ৪৭ কোটি টাকা। এগুলোর বাইরে আরো কয়েকটি ই-কমার্স গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। সেগুলো হলো—আলেশামার্ট, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস ডটকম ডট বিডি।

ই-কমার্স উদ্যোক্তারা বলছেন, গুটিকতক প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স নিয়ে যে প্রতারণা করছে তাতে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু পদক্ষেপ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মের কারণে ই-কমার্স খাতে অগ্রিম টাকা গ্রহণ, ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা নেওয়া ও এসক্রো সিস্টেম (পণ্য ডেলিভারি হওয়ার আগ পর্যন্ত গেটওয়েতে টাকা ব্লক থাকা) চালুর ফলে এই খাতে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর গতকাল বলেন, ‘ইভ্যালিসহ যে ১০টি কম্পানি সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাংক সতর্কতা জারি করে কার্ডে লেনদেন স্থগিত রেখেছিল, এখনো তাদের কেউ কেউ প্রতারণা অব্যাহত রেখেছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। গত কয়েক মাসে আরো কিছু নতুন কম্পানিও গড়ে উঠেছে।’ তিনি বলেন, এসব কম্পানির নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে ই-কমার্স খাতে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। গ্রাহকদেরও অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেছে। তাঁরা বড় ডিসকাউন্ট ছাড়া পণ্যের অর্ডার করতে চান না।

এদিকে নজরদারির বাইরে থাকায় ফেসবুক পেজভিত্তিক এফ-কমার্স খাতের প্রতারণা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। অভিনব কায়দায় কোনো খরচ ছাড়াই শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেসবুক) একটি পেজ আর কিছু পণ্যের ছবি দিয়েই প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকটি চক্র। সম্প্রতি এমন অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ই-ক্যাবের কাছে।

বিতর্কিত এসব ই-কমার্স কম্পানির ব্যাবসায়িক মডেল প্রচলিত ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। তিনি বলেন, ‘আমরা বছরখানেক আগেই সরকারকে তাদের সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে জানিয়েছিলাম। ইভ্যালিসহ আমাদের যেসব সদস্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, আমরা তাদের প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। কিছু প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল যুগে বাস করে অ্যানালগ পদ্ধতিতে প্রতারণা মোকাবেলা করার চেষ্টা করছি। ই-কমার্স খাতে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা মোকাবেলায় আমাদের নজরদারি সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত লোকবল, শক্তিশালী মনিটরিং সিস্টেম নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যে ডিজিটাল কমার্স সেল গঠন করা হয়েছে, সেখানে আলাদা করে লোকবল নিয়োগ করা হয়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান গতকাল বলেন, ‘আমরা ৯টি কম্পানির অপারেশন ও আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য চেয়েছিলাম, তা খুব শিগগিরই পাব বলে আশা করছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত নতুন পাঁচ কম্পানিকেও আমরা নজরদারিতে রেখেছি। আর ই-অরেঞ্জ ও ইভ্যালির মতো যেসব কম্পানির বিরুদ্ধে যেহেতু মামলা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমরা আদালতের আদেশের অপেক্ষায় আছি।’

ই-ক্যাবের তথ্যানুযায়ী ২০১৬ সালে ই-কমার্সের ব্যবসা ছিল ৫৬০ কোটি টাকার। এ বছর ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হয়। মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে দেশের শীর্ষ ২৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে লেনদেন হয়েছে ছয় হাজার ৭০০ কোটি টাকার। আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে ওই ২৫টি ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছে ৪৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে পণ্য ডেলিভারি হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে ২০৪ কোটি টাকা ছাড় করেছে। এখনো ২৮৭ কোটি টাকা গেটওয়েতে আছে।

জানা যায়, এখন ই-ক্যাবের সদস্য এক হাজার ৬২০টি প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে পাঁচ হাজারেরও বেশি ই-কমার্স সাইট রয়েছে বলে ধারণা ই-ক্যাবের। ফেসবুক পেজভিত্তিক ই-কমার্স ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তার সংখ্যা দুই লাখের মতো।

ই-ক্যাব সাম্প্রতিক স্ক্যামের কারণে এখন পর্যন্ত আটটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে। এগুলো হলো ই-অরেঞ্জ, গ্রিনবাংলা ই-কমার্স লিমিটেড, এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড অ্যাগ্রো ফুড অ্যান্ড কনজিউমার লিমিটেড, টোয়েন্টিফোর টিকেটি ডটকম, ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপ ও গ্লিটার্স আরএসটি ওয়ার্ল্ড।

]]>
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি চান এসপিরা https://ucchakontha.com/archives/29924 Mon, 13 Sep 2021 10:11:54 +0000 https://ucchakontha.com/?p=29924 ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পুলিশ সুপাররা (এসপি)। পুলিশ হেডকোয়টার্সে চলমান ‘ক্রাইম কনফারেন্সে’ তাঁরা এ দাবি জানান।

পুলিশের সব রেঞ্জ ডিআইজি, এসপি, কমিশনার ও উপ-কমিশনারদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের দুই দিনব্যাপী (১২-১৩ সেপ্টেম্বর) অপরাধ পর্যালোচনা সভা ‘ক্রাইম কনফারেন্স’ শুরু হয়েছে গতকাল রবিবার। এ ক্রাইম কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এম খুরশীদ হোসেন।

কনফারেন্সের শুরুর দিন জানুয়ারি-মার্চ ও এপ্রিল-জুন দুই কোয়ার্টারের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি, যেমন- ডকাতি, দস্যুতা, খুন, দ্রুত বিচার আইনে মামলা, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা, অপহরণ, সিঁধেল চুরি, দাঙ্গা, মাদক, অস্ত্র ও গাড়ি উদ্ধার ইত্যাদির তথ্য তুলে ধরা হয়। এসব তথ্য তুলে ধরেন ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) এ ওয়াই এম বেলালুর রহমান।

পুলিশ সুপাররা তাদের বক্তব্যে এসব অপরাধ দমনে ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেনে।

সভায় উপস্থিত থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সুপার জানান, সম্প্রতি দেশে ও দেশের বাইরে থেকে একটি মহল বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে নানামুখী অপতৎপরতা শুরু করেছে। এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করলেও এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। কারণ এই দুর্বৃত্তরা দেশের বাইরে অবস্থান করে দেশ ও সরকার, বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। তাদের এসব অপতৎপরতা রোধে ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনার পরামর্শ দেন তারা।

অপর একজন এসপি জানান, প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে দেশে কিশোর অপরাধ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পূর্বে ধারণা না থাকায় এসব কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চান পুলিশ সুপাররা। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ বিষয়ে পুলিশের সব ক্রাইম ইউনিটে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়।

]]>
স্কুল শিক্ষক থেকে ভয়ংকর জঙ্গি নেতা https://ucchakontha.com/archives/29827 Thu, 09 Sep 2021 17:28:33 +0000 https://ucchakontha.com/?p=29827
স্টাফ রিপোর্টারঃ
 এমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টার,শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাশ,পেশাগত জীবনের শুরুতে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করেছিলেন। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কারনে চাকুরিচ্যুত হন। ২০০২ সালে এক জঙ্গি নেতার বয়ান শুনে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে শায়খ আবদুর রহমানের কাছে বায়াত গ্রহণ করেন। এরপর জামালপুরে একটি আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেন তিনি। জঙ্গিবাদে ব্যাপক তৎপর থাকায় দ্রুত তিনি ময়মনসিংহ অঞ্চলের নেতা হয়ে ওঠেন।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলার সিটি ডেভেলপমেন্ট হাউজিংয়ের একটি আবাসিক ভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তার বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, রাসায়নিক দ্রব্য, দেশীয় তৈরি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, উগ্রবাদী বই ও নগদ তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

একইদিন বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় লুট, ছিনতাই ও ডাকাতির মাধ্যমে সংগঠনের অর্থ জোগাড় করছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও রাজশাহীতে অভিযান চালানো হয়। বর্তমানে গ্রুপে গ্রুপে বিচ্ছিন্ন পুরোনো জেএমবি সদস্যরা সংগঠন চাঙা করার চেষ্টা করছে। মধ্যরাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-২ এর অভিযানে বসিলা থেকে জেএমবির একটি গ্রুপের কর্ণধার মো. এমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টারকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৩ সালে মুক্তাগাছায় ব্র্যাক অফিসে ডাকাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল জঙ্গি এমদাদুল হকের। এছাড়া নাশকতা ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঢাকা-ময়মনসিংহের বিভিন্ন থানায় ২০০৭, ২০১২, ২০১৫ ও ২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ২০০৭ সালে মুক্তাগাছায় স্থানীয় জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে নাশকতার গোপন বৈঠক চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে এমদাদুল হক পালিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার এমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টার শীর্ষ জঙ্গি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলাভাই ও সালাহউদ্দিন সালেহীনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। তিনি জেএমবির শীর্ষ নেতাদের ময়মনসিংহে সফরকালে বিশেষ দায়িত্বে থাকতেন। বিশেষ করে নেতাদের গোপন আস্তানায় অবস্থান, মিটিং ও বয়ান আয়োজনে তিনি ভূমিকা রাখতেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে গ্রেফতার চার জঙ্গিসহ জেএমবির ১০ সদস্য তার কাছ থেকে বায়াত গ্রহণ করেন। এই ১০ জনই বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন।তিনি জানান, জঙ্গি সদস্যদের কেউ কেউ এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে র‌্যাব অভিযান অব্যাহত রেখেছে। 

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের এ পরিচালক বলেন, বিভক্ত জেএমবির একটি গ্রুপের কর্ণধার জঙ্গি নেতা এমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টার। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পর সংগঠনটি নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে জেএমবি নিজেদের মধ্যে আন্তঃকোন্দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সংগঠনের ভেতর ও বাইরে দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। জঙ্গি নেতা সারোয়ার জাহানের নেতৃত্বে জেএমবি সুসংহত হয় এবং গড়ে তোলে জেএমবি ‘সারোয়ার-তামীম গ্রুপ’।
র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালে হলি আর্টিসান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জেএমবির আমির সারোয়ার জাহান এবং তামীম চৌধুরী। তারাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নাশকতার ছক তৈরি করেছিলেন। একই বছরের ৮ অক্টোবর র‌্যাবের অভিযানে পালাতে গিয়ে বিল্ডিং থেকে পড়ে জেএমবির তৎকালীন আমির সারোয়ার জাহান মারা যান। হলি আর্টিসান ঘটনার পর এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার জঙ্গিকে (বিভিন্ন সংগঠন এবং জেএমবির আট শতাধিক সদস্য) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এতে জেএমবির সাংগঠনিক সক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেছে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ২০০৭ সালে এমদাদুল হক তার নিকটাত্মীয় রফিক মাস্টারকে হত্যা করেন। রফিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাদের (জেএমবির) বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্যকে ধরিয়ে দেন। পরে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে রফিক মাস্টারকে হত্যা করা হয়। এরপর ২০০৭ সালে এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনি গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে যান। ২০০৮ থেকে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নাম পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী, খেলনা বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা, রিকশাচালক ও রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ২০১২ সালে রাজধানীর উত্তরা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হন এমদাদুল হক। ‘গোপন বৈঠকে নাশকতার পরিকল্পনা’র মামলায় দুই বছর কারাগারেও ছিলেন। ২০১৫ সালে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও বিস্ফোরকসহ গ্রেফতার হন। ২০১৬ সালে জামিন নিয়ে পুনরায় আত্মগোপনে চলে যান। এ সময়ও আগের মতো ছদ্মবেশে রাজবাড়ী, রংপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় অবস্থান করেন এবং জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে যান। সম্প্রতি জেএমবি নেতৃত্বহীন হয়ে পড়লে সাংগঠনিক দুর্বলতা তৈরি হয়। ফলে তারা বিচ্ছিন্নভাবে স্বতন্ত্র কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়।
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, জঙ্গি এমদাদুল তার বিশ্বস্ত ও পুরোনো জেএমবি সহযোগীদের সংগঠিত করে একটি গ্রুপ তৈরির চেষ্টা চালান। এসব গ্রুপের মূল কর্ণধার ও সমন্বয়ক ছিলেন তিনি। তার গ্রুপে অর্ধশতাধিক অনুসারী রয়েছে। গ্রুপটির নেটওয়ার্ক ময়মনসিংহ, জামালপুর, উত্তরবঙ্গসহ কয়েকটি জেলায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে। সংগঠনের বিভিন্ন বিষয় দেখভালের জন্য সাংগঠনিকভাবে তিনি দায়িত্বশীল হিসেবে নিযুক্ত হন। যাদের অধিকাংশই মূলধারার জেএমবির পুরোনো সদস্য রয়েছে।
গ্রেফতার জঙ্গি এমদাদুল নিজে প্রত্যক্ষভাবে অপারেশন কার্যক্রম তদারকি করতেন। তাদের আইটি সেক্টরকে সমৃদ্ধ করতে বিশেষ উদ্যোগও নেন। অপারেশন দলের পাশাপাশি ‘সাইবার ফোর্স’ গঠনে প্রাধান্য দেন। করোনাকালে সংগঠনের দাওয়াতের পাশাপাশি সদস্য সংখ্যা বাড়াতে অনলাইনে সক্রিয় হতে থাকেন। অর্থের জোগান দেওয়ার জন্য জঙ্গি এমদাদুল হক নাশকতা, ডাকাতি, ছিনতাইয়ে অংশগ্রহণ করতে তার সদস্যদের নির্দেশ দেন।

]]>