প্রবাস – উচ্চকণ্ঠ https://ucchakontha.com সময়ের সাথে প্রকাশ Fri, 02 Aug 2024 14:59:01 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.2 বাহরাইন প্রবাসী ব্যবসায়ি আল আমিন মোহাম্মদ এর মৃত্যু। https://ucchakontha.com/archives/33111 Fri, 02 Aug 2024 14:59:01 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33111  

বাহরাইন থেকে মোঃ মনির হোসেন

বাহরাইন প্রবাসী ও কমিউনিটি নেতা আল আমিন মোহাম্মদ গত ২৭/০৭/২০২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন,

জনাব আলামিন মোহাম্মদ বাহরাইন বাংলাদেশ কমিউনিটিতে খুবই পরিচিত মুখ ছিলেন,, তিনি বাহরাইনে অবস্থানরত যুবকদের নিয়ে গঠন করেছেন সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব বাহরাইন,যা বাহরাইন প্রবাসী বাংলাদেশীদের কল্যাণে কাজ করে আসছে,,
আল আমিন মোহাম্মদ সব সময় চেয়েছেন বিদেশে বাংলাদেশকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে,করেছেন ও
এ ছাড়াও, তার ব্যক্তিগত জীবনে, তিনি বাহরাইনে বিভিন্ন ব্র্যান্ড যেমন stc, lucky, Bahrain TV, Drago City এবং অন্যান্য অনেক TVC-এর মডেল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
দীর্ঘ ১৬ বছর থেকে বাহরাইনে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।

আল আমিন মোহাম্মদ দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাটি লিভার (এনএএফএলডি) নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, এবং বাংলাদেশ থেকে ক্রমাগত ওষুধ দিয়ে সুস্থ হয়েছিলেন, গত তিন চার মাস ধরে তার অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে এবং তিনি বাহরাইনের একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন,চিকিৎসকরা তাকে বাহরাইন বা বাংলাদেশে একজন বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি বাংলাদেশে যার কাছে তিনি পূর্বে চিকিৎসা নিয়েছেন সেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, এবং গত ২২/০৭/২০২৪ তারিখে বাংলাদেশে তার টিকিট বুক করেন। বাংলাদেশে আসার পরের দিনই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, এবং তার পরিবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চিকিৎসা চলাকালীন তার অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে, তারপর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেন, আইসিইউতে পর্যবেক্ষণ করার পর অবস্থা অপরিবর্তিত থাকে বরং খারাপের দিকে চলে যায়। ২৫শে জুলাই তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন,কারণ তার শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক ছিল না, ডাক্তাররা উল্লেখ করেছেন যে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না বরং তার লিভারের অবস্থা খুবই খারাপ অবস্থার অবনতি হওয়ায়,

লাইফ সাপোর্টে তিন দিন লড়াই করার পর, তিনি ২৭/০৭/২০২৪ বিকাল চারটার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
দেশের বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর কলাবাগানে তার লাশ দাফন করা হয়।

জনাব আলামিন মোহাম্মদ সচেতনতা মূলক ভিডিও ক্লিপ, বানিয়ে ফেইসবুক ইনস্টাগ্রামে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করে বাংলাদেশী প্রবাসীদের বাহরাইনের আইন কানুন বুঝতে এবং অনুসরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কোভিড-এর কারণে যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার জন্য তিনি কোভিডের সময়ে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিলেন,
আল আমিন মোহাম্মদ এর মৃত্যুতে বাহরাইন বাংলাদেশ কমিউনিটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া,কমিউনিটির সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তার বিদেহী আত্মা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

]]>
R.S মানবতা যুব কল্যাণ পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বিদায় সংবর্ধনা ও জার্সি উন্মোচন এর আয়োজন করা হয়। https://ucchakontha.com/archives/32767 Wed, 03 Jan 2024 21:03:43 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32767 মোঃ মনির হোসেনবা: হরাইন প্রতিনিধি

বাহরাইন রাজধানী মানামা কুকমেল রেস্টুরেন্টের হল রুমে সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুবেল মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন এর যৌথ সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন R.S মানবতা যুব কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজু শিকদার।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাস বাহরাইন এর তৃতীয় সচিব শাহ তাছির উদ্দিন,
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমাজ বাহরাইনের সভাপতি মনজুর আহমেদ,
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ বাহরাইন শাখার সভাপতি শাহজালাল, সানফ্লাওয়ার ফুটবল ক্লাবের সভাপতি শাহ আলম, জাতীয় শ্রমিক লীগ বাহরাইন শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অলিউর রহমান, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব বাহরাইনের সভাপতি আল-আমিন, বৃহত্তর বরিশাল জনকল্যাণ সমিতি বাহরাইনের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার,R.S মানবতা যুবক কল্যাণ পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি শওকত মোড়ল, সহ-সভাপতি ফরহাদ হোসেন, মৌলভীবাজার জেলা ঐক্য পরিষদ বাহরাইন এর দপ্তর সম্পাদক সুমন ।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন
সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ভূইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মহাসিন, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মোশারফ, মাইনুদ্দিন, নবী, মিলন সহ-রাজনৈতিক ও সামাজিক, বিভিন্ন ফুটবল ক্লাবের সভাপতি সেক্রেটারি ও নেতৃবৃন্দরা
বাংলাদেশ দূতাবাস বাহরাইন এর তৃতীয় সচিব শাহ তাছির উদ্দিন কে কমিটির সভাপতি ও সম্মানিত নেতৃবৃন্দরা সম্মাননা ক্রেস্ট হাতে তুলে দেন ও জার্সি উন্মোচন করেন, অবশেষে দোয়া ও নৈশভোজের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় ।

]]>
লন্ডনে বাঙ্গালী মেয়ে ধানসিঁড়ি রেজার অসাধারণ সফলতা https://ucchakontha.com/archives/32560 Fri, 28 Jul 2023 15:24:58 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32560 বিশেষ প্রতিনিধি: সুমন নূর

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক কবি ও সাংবাদিক আলী রেজা খানের মেয়ে ধানসিঁড়ি রেজা ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে রাসেলস গ্ৰুপ, ইউকে, ওয়ারিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে বিএসসি (অনার্স) পরীক্ষায় বিশেষ কৃতিত্বের সাথে সফলতা অর্জন করেছেন। এ উপলক্ষ্যে ওয়ারিক ইউনিভার্সিটি থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয় তাকে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ধানসিঁড়ি রেজার পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার মিঠাপুরে। পিতা আলী রেজা খান দীর্ঘদিনযাবৎ একমাত্র কন্যা এবং একমাত্র পুত্রসহ সস্ত্রীক লন্ডনে বসবাস করছেন। ধানসিঁড়ির স্বপ্ন মনোবিজ্ঞানে পিএইচডি করার। শিক্ষাজীবন শেষে কর্মজীবনে লন্ডন এবং পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশ তথা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চান তিনি। ধানসিঁড়ি রেজা এবং তার পরিবার দেশের মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

]]>
সৌদি আরবে হঠাৎ শিলাবৃষ্টি https://ucchakontha.com/archives/32455 Sat, 15 Apr 2023 05:38:26 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32455 সৌদি আরব একটি বিরল ঘটনার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। মরুঝড়ের দেশ সৌদি আরবে হঠাৎ বিরল শিলাবৃষ্টি হানা দিয়েছে। দেশটির কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা শিলাবৃষ্টি শুরু হলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সৌদি আরবের স্থানীয় বাসিন্দারা উচ্ছ্বসিত হলেও শঙ্কা আছে। অনেক আবহাওয়া বিশ্লেষক বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এমন বিরল ঘটনা ঘটছে। যা ভবিষ্যতে আরো বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

স্টর্ম সেন্টার নামের একটি আইডি থেকে টুইটারে এই শিলাবৃষ্টির একাধিক ভিডিও পোস্ট করা হয়। যাতে দেখা যায়, মরুভূমির বালু ছেয়ে গেছে ছোট ছোট শিলায়। মরু অঞ্চল হওয়ায় সৌদি আরবে বৃষ্টিপাতই খুব কম হয়। দেশটিতে এমন অঞ্চল অনেক রয়েছে, যেখানে বছরের পর বছর বৃষ্টিপাত হয় না বা হলেও খুব কম। তবে গত কয়েক দিন ধরে সৌদি আরবের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। ১০ এপ্রিল মক্কায় কয়েক ঘণ্টা ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে গতকাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবহাওয়া বিভাগ হাত্তা (দুবাই) এবং খাট্টে (আরএকে) ভারি বৃষ্টিপাতের খবর দিয়েছে। আবহাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে বলে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে।

সূত্র : খালিজ টাইম

]]>
ভূমধ্যসাগরে বাংলাদেশিসহ ৪৪০ অভিবাসী উদ্ধার https://ucchakontha.com/archives/32376 Thu, 06 Apr 2023 12:08:08 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32376 ভূমধ্যসাগরে মাছ ধরার নৌকা থেকে বাংলাদেশিসহ ৪৪০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার তাদের মাল্টার আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে এদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে তা জানা যায়নি।

গত ১ এপ্রিল পূর্ব লিবিয়ার বেনগাজির কাছ থেকে মাছ ধরার নৌকায় ইতালির উদেশ্যে যাত্রা শুরু করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। বাংলাদেশি ছাড়াও নৌকাতে সিরিয়া, পাকিস্তান, মিসর, সোমালিয়া ও শ্রীলংকার নাগরিক ছিলেন।

দুদিন আগে দাতব্য সংস্থা অ্যালার্ম ফোন খবর পায়, ভূমধ্যসাগরে মাছ ধরার নৌকাটিতে ৪৪০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছে। সংস্থাটিকে ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জানায় অভিবাসনপ্রত্যাশীরা।

সমুদ্রে নৌকাটি চারদিন ধরে ভাসছিল। এর মধ্যে দুদিন ওই অভিবাসনপ্রতাশীদের না খেয়ে থাকতে হয়েছে বলে জানান অ্যালার্ম ফোনের মুখপাত্র।

এরপর প্রায় ১১ ঘণ্টার চেষ্টায় তাদের উদ্ধার করে ডকটর্স উইদাউট বর্ডার্স। এমএসএফ এক টুইটে জানায়, খারাপ আবহাওয়ার কারণে রাতভর উদ্ধার অভিযানে বেশ বেগ পেতে হয়।

শেষ পর্যন্ত ৮ নারী ও ৩০ শিশুসহ প্রায় ৪৪০ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১০০ জনকে ইতালির সিসিলির নৌঘাঁটিতে স্থানান্তর করার কথা বলেছে কর্তৃপক্ষ। বাকি ৩৩৯ জনকে দেশটির ব্রিন্দিসি শহরে পাঠানো হচ্ছে।

প্রতি বছর ইউরোপ যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে প্রায়ই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রাণহানির ঘটোনা ঘটে থাকে। এর মধ্যে এশিয়া ও আফ্রিকার নাগরিকের সংখ্যা বেশি।

গত তিন মাসে ইতালিতে ঢুকেছে প্রায় ২৮ হাজার অভিবাসী। গত বছর পাড়ি জমান ৬৮০০ জন।

]]>
জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে কাতার https://ucchakontha.com/archives/32243 Mon, 06 Mar 2023 03:36:46 +0000 https://ucchakontha.com/?p=32243 বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটাতে কাতার বাংলাদেশের পাশে থাকবে। স্বল্পোন্নত দেশসমূহ বিষয়ক জাতিসংঘের ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনের পাশাপাশি রবিবার (৫ মার্চ) দোহায় অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে এ আশ্বাস দেওয়া হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির উদ্ধৃত করে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাতারের আমির বলেছেন, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। কাতার সবসময় বাংলাদেশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে।

মোমেন বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় কাতারের কাছ থেকে আরো বেশি জ্বালানি, বিশেষ করে বার্ষিক আরও এক মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমটিএ) তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চেয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন যে আমরা কাতারের সাহায্য চাই। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ জ্বালানি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমি চুক্তি নবায়ন করতে চাই। আমি আরো এলএনজি চাই।

জবাবে কাতারের আমির জানতে চান বাংলাদেশ কতটা জ্বালানি চায়। তাকে বলা হয়, বাংলাদেশ আরেকটি এমটিএ অর্থাৎ ১৬-১৭ কনটেইনার জ্বালানি চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে আমির বলেন, আপনার কাতার ছাড়ার আগে তার জ্বালানি মন্ত্রী এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করবেন।

আমির বলেন, আমি আজ আমাদের জ্বালানি মন্ত্রীকে নির্দেশ দিচ্ছি, আপনার কাতার ত্যাগ করার আগে আমার জ্বালানি মন্ত্রী আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আমির আরো বলেন, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। কাতার সবসময় বাংলাদেশকে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ৪০টি কন্টেইনার জ্বালানি আমদানি করছে, যার পরিমাণ ১.৮-২.৫ এমটিএ।

শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানালে শেখ তামিম বলেন, তিনি এ বছর বাংলাদেশ সফর করবেন। বৈঠকে আমির বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি যে আমি এ বছর বাংলাদেশ সফর করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে এবং বিভিন্ন দেশ সেখানে বিনিয়োগ করছে। কাতার সেই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলিতেও বিনিয়োগ করতে পারে।

কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিষয়ে শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে বলেন, কারণ এখানে কিছু শ্রমিক চাকরি হারাচ্ছে। জবাবে শেখ তামিম বলেন, তিনি সবসময় বাংলাদেশ ও বাঙালির কল্যাণ চান।

কিউএনসিসির দ্বিপাক্ষিক সভা কক্ষে ইউএনডিপি প্রশাসক আচিম স্টেইনারের সঙ্গে একটি পৃথক বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী ইউএনডিপিকে নেতৃত্ব দিতে বলেছিলেন যাতে এলডিসি থেকে স্নাতক হওয়া দেশগুলি একবারে এলডিসিগুলির জন্য এনটাইটেলকৃত সমস্ত আন্তর্জাতিক সুবিধা না হারায়।

তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে যারা স্নাতক হচ্ছে তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। ইউএনডিপির কিছু প্রক্রিয়াকরণ করা উচিত যাতে দেশগুলিকে একবারে সমস্ত সুবিধা হারাতে না হয়।

‘আমাদের ভালো পারফরম্যান্সের জন্য পুরস্কৃত করা উচিত, কিন্তু আপনি শাস্তি দিচ্ছেন। ইউএনডিপিকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ইউএনডিপি প্রশাসক বাংলাদেশের উন্নয়ন, বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন এবং গ্রামীণ এলাকায় নগর সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশনের জন্য প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ছেন তা নতুন মডেলে পরিণত হচ্ছে।

কিউএনসিসিতে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব ডোরেন বোগদান-মার্টিনের সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনা সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়েছেন।

এছাড়া বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের মহাসচিব রেবেকা গ্রিনস্প্যান কিউএনসিসিতে পৃথকভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য আনতে এবং দেশের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে আঙ্কটাডের সহায়তা কামনা করেন।

তিনি কিউএসিসি’র প্রদর্শনী হলে বিনিয়োগ এবং অংশীদারিত্বের ওপর এলডিসি৫ উচ্চ পর্যায়ের মধ্যাহ্নভোজেও অংশ নেন।

খবর বাসস’র

]]>
প্রবাসীদের যথাযথ সেবা দেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর https://ucchakontha.com/archives/31137 Mon, 08 Nov 2021 02:06:26 +0000 https://ucchakontha.com/?p=31137 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের যথাযথভাবে সেবা দিতে কূটনৈতিকদের নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ রবিবার স্থানীয় সময় সকালে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনার ভবনের সম্প্রসারিত অংশ এবং বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জের উদ্বোধনকালে এ নির্দেশ দেন তিনি। হোটেল ক্ল্যারিজ থেকে ভার্চ্যুয়ালি এ দুই উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

কূটনৈতিকদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই প্রবাসীদের যথাযথ সেবা দেওয়া, তাদের সমস্যাগুলো দেখা, তাদের দিকে নজর দেওয়া এটাও দরকার। ’

প্রবাসীরা সব সময় আমাদের দেশের জন্য অবদান রেখে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেই দেশে থাকেন সেই দেশের এবং আমাদের বাংলাদেশ উভয় দেশেই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখে যান।

অর্থনৈতিক কূটনীতির দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান যুগে আসলে কূটনীতিটা শুধু রাজনৈতিক কূটনীতি না, এটা অর্থনৈতিক কূটনীতিতে পরিণত হয়েছে। ’

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ সম্প্রসারণে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘একদিকে যেমন বাংলাদেশকে তুলে ধরা, বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের রপ্তানি কীভাবে বাড়াতে পারি, বিনিয়োগ কীভাবে বাড়াতে পারি, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি কীভাবে হতে পারে, দেশের মানুষ কীভাবে ভালো থাকতে পারে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

]]>
১৭ বছর বয়সে বিদেশ গেছি, সব কামাই বাবা-মাকে দিছি, আর বাড়ি ফিরে ৫ দিন ভাত পাইনি https://ucchakontha.com/archives/29620 Mon, 30 Aug 2021 12:06:12 +0000 https://ucchakontha.com/?p=29620 যৌবনে সব কামাই তাদের (বাবা-মা) কে দিয়েছিলাম। ১৭ বছড় বয়সে সৌদি গিয়াছিলাম, মোচ উঠে নাই কালি দিয়ে মোচ বানিয়ে তারপর পাসপোর্টের ছবি তুলি , পাশের ঘরে পাচদিন না খেয়ে শুয়ে বসে কাটিয়েছিলাম।

ছোট ভাই মা একসাথে ভাত খায়, আমি পাচ দিনের অনাহারি ছিলাম, মা একবার জিজ্ঞেস করে নাই কিছু খাইছস নাকি, আত্বীয় স্বজন যখন ব্যাপার টা জানলো এবং মাকে জানালো, মা তখন উত্তর দিলো, না খেয়ে আছে তা আমাকে বলেনি কেন।

আমাকে বলে নাই কেনো না খেয়ে আছি! সেই মা আজ আর নেই তার জন্য এখন ও দোয়া করি সব সময় ই, রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা। এধরনের দৃষ্টান্ত কম নয়। প্রবাসে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে দেশে বাবার একাউন্টে পাঠানো টাকা অন্য সন্তান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে ভালো বাজার-সদাই করে অনেকেরই ভালোই কাটে।

প্রবাসী ছেলে দীর্ঘদিন পর যাকিছু নিয়ে দেশে ফিরে আসে সেটাও ভাগাভাগি নিয়ে অনেকেরই মন কষাকষি হয়। আর যখন দেখে দেশে পাঠানো অর্থ অবশিষ্ট আর কিছুই নেই, তখনই হয় বিপত্তি। ফিরে যাওয়ার টিকেট-ও অন্যের কাছে টাকা ধার করে কিনতে হয়। এটাই বাস্তব। নিজের সাবধানতা নিজের কাছে।

]]>
হেলেনার ১৫টি ফ্ল্যাট, পাঁচ পোশাক কারখানা https://ucchakontha.com/archives/28721 Mon, 02 Aug 2021 05:51:45 +0000 https://ucchakontha.com/?p=28721 আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক উপ-কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের ছিল নিজস্ব সাইবার টিম। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার জন্য এই সাইবার টিম কাজ করত। ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য আসলে সাইবার টিম মন্তব্যকারীদের প্রতিহত করত।

আবার ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথন বা ছবি প্রচার করা হতো। নানা ছুতোই হেলেনা ও তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ঐসব ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক করেন। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গভীর করে তিনি তাদের ট্রাপে ফেলেছেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, চিকিৎসক, অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, আমলাসহ একাধিক পেশাজীবীর লোকজন।

নিজের মানসম্মানের ভয়ে তারা কাউকে এতো দিন কিছু বলতে পারেননি। বিষয়টি তারা চেপে গেছেন। হেলেনা গ্রেফতারের পর বেশ কয়েক জন ভুক্তভোগী এ ব্যাপারে র‌্যাব সদর দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।

গতকাল শনিবার র‌্যাব সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ত্রাণ বিতরণের জন্য ‘পল্লী মাতা’ এবং চাকরির সুযোগ করে দেওয়ায় ‘মাদার তেরেসা’ নামের দুটি উপাধি নিয়ে প্রচারের জন্য সাইবার টিমকে কাজে লাগান হেলেনা জাহাঙ্গীর।

কে এই হেলেনা জাহাঙ্গীর?

তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনে হেলেনার কাছ থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) শেখ শাহনুর রহমান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেছেন। হেলেনা অনেক প্রশ্নের উত্তর তিনি হাসিমুখে দিয়েছেন। আবার অনেক প্রশ্নের উত্তর তিনি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। ব্যাংক একাউন্টে কত টাকা আছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে হেলেনা নীরব ছিলেন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা ১৯টি চেকবইয়ের সূত্র ধরে পুলিশ ব্যাংক একাউন্টে কত টাকা জামা আছে—তা জানতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুরোধ জানাবে।

এদিকে, র‌্যাবের মাঠ পর্যায়ের তদন্তকারী কর্মকর্তারা হেলেনা ও তার স্বামীর মালিকানাধীন পাঁচটি গার্মেন্টস কারখানার সন্ধান পেয়েছেন। গার্মেন্টসগুলো হচ্ছে, মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনে নিট কনসার্ন ইউনিট এবং জেসি এমব্রডারি, হুমায়ারা স্টিকার, জয় অটো গার্মেন্টস ও প্যাক কনসার্ন প্রতিষ্ঠান চারটি নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। প্যাক কনসার্ন যৌথ মালিকানাধীন। এছাড়াও আরও আটটি তৈরি পোশাক কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যে তিনটির জন্য তিনি জমি অধিগ্রহণ করেছেন। চট্টগ্রামের মিরেরসরাইয়ে তার প্যাকেজিং কারখানা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ছিল। তবে এসব তৈরি পোশাক কারখানা তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম দেখাশোনা করেন। জাহাঙ্গীর আলম ২৫ বছর আগে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। কিন্তু কীভাবে এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন—সে ব্যাপারে হেলেনা জাহাঙ্গীর র‌্যাবের কাছে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার দেখালো র‌্যাব

র‌্যাবের মাঠ পর্যায়ের তদন্তকারী কর্মকর্তারা তার ১৫টি একক মালিকাধীন ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে, উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৫তলা ভবনে পাঁচটি, গুলশানের-২ নম্বরের ৩৬ নম্বর রোডে ৫ নম্বর বাড়িতে পাঁচটি, গুলশান-২ নম্বরের ৮৬ নম্বর রোডে ৭/বি নম্বর বাড়িতে একটি, গুলশান এভিনিউয়ে একটি, গুলশান নিকেতনে একটি, মিরপুরের ১১ নম্বরের ৬ নম্বর রোডে একটি ও মিরপুরের কাজীপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় ১০০ একর জমির সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। সেই জমি তিনি আরেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যৌথ মালিকানাধীন হয়ে কিনেছেন। ঐ ব্যবসায়ী গুলশান ক্লাবের সাবেক নির্বাচিত এক বড় নেতার ছেলে। ঐ নেতা আবার একটি ছোট দলের বড় নেতা। এছাড়াও হেলেনা বিভিন্নস্থানে সুবিধা পাওয়ার জন্য নানারকম পরিচয় দিতেন। বিশেষ করে ফিল্ম ক্লাবে তার কর্মকাণ্ডে ঐ ক্লাবের সদস্যরা অনেকটা

]]>
দেশে আলো জ্বালিয়ে অন্ধকারে প্রবাসীরা https://ucchakontha.com/archives/27554 Tue, 01 Jun 2021 04:59:41 +0000 https://ucchakontha.com/?p=27554 ► করোনায় কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন
► দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত অনেকে

প্রবাসী আয়ে পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারও রেকর্ড হয়েছে। ১১ মাসেই ভেঙেছে বিগত বছরগুলোর রেকর্ড। প্রবাসী শ্রমিকদের হাড়ভাঙা খাটুনিতে আলোকিত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু সেই প্রবাসীদের অনেকেই ধুঁকছেন অন্ধকারে। স্বপ্ন নিয়ে প্রবাসে পাড়ি জমানো মানুষগুলো এখন দুঃস্বপ্নের চোরাবালি থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজছেন। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে রয়েছেন বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের কারণে সরকার এখন অন্য দেশকে ঋণ দেওয়ার মতো সাহস দেখায়। অথচ সেই রেমিট্যান্সযোদ্ধারা থেকে যাচ্ছেন আলো থেকে দূরে। রিজার্ভের বড় দুটি উত্স হলো পোশাক খাত ও প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। পোশাক শিল্পে অনেক রকমের প্রণোদনা দেখা গেলেও তেমন কিছুই নেই প্রবাসীদের জন্য। আসন্ন বাজেটে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দসহ এককালীন বিভিন্ন সহযোগিতামূলক পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিচ্ছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (২৭ মে পর্যন্ত) রেমিট্যান্স দুই হাজার ২৬১ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে। আগের পুরো অর্থবছরে এসেছিল এক হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ১১ মাসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ৩৮ শতাংশের বেশি। আর পাঁচ বছর আগের তুলনায় এবার এক মাস বাকি থাকতেই রেমিট্যান্স বেড়েছে ৭৭ শতাংশ। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।

দেশকে আলোকিত করে তোলা সেই রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের দিনকাল কেমন কাটছে?—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যোগাযোগ করা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায়। প্রবাসীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপে জানা গেছে, দুই দিকেই চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রবাসী কর্মীরা। একদিকে কয়েক লাখ কর্মী দেশে ফিরে আটকে আছেন। অন্যদিকে প্রবাসে চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। আবার বৈধ উপায়ে গিয়ে অবৈধ হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেউ কেউ। তাঁদের সবারই এখন আয়ের পথ বন্ধ।

গত জানুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) পাড়ি জমান নরসিংদীর বাসিন্দা আল-আমিন এরফান। পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই মিলবে কাজ, হয়ে যাবে ভিসাও—এমন আশ্বাসে দালালের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিন লাখ টাকা। অভাবের ঘরে আলো জ্বালাতে গিয়ে ঝুঁকি নিয়েছিলেন। কিন্তু স্বপ্নভঙ্গ হয়ে এখন তিনি ঘুরছেন আমিরাতের পথে পথে। কাজ নেই, ভিসাও নেই। উল্টো কয়েক মাসে উপার্জিত অর্থও কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে সেই দালালচক্র।

ইউএইর শারজাহ শহর থেকে গতকাল সোমবার আল-আমিন কালের কণ্ঠকে জানান, প্রথম মাসেই তাঁকে কাজের ভিসা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই দালাল। সেই ভরসায় ঝুঁকি জানা সত্ত্বেও চলে যান আমিরাতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন দালালের ভিন্ন রূপ। আজকাল করতে করতে কেটে যায় চার মাস। ভিসার জন্য আরো তিন হাজার দেরহাম (প্রায় ৭০ হাজার টাকা) তুলে দেন দালালের হাতে। এরপর আর ধরাই দেননি দালাল। দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন তিনিসহ মোট সাতজন। প্রত্যেকেই এখন ঘুরছেন অনিশ্চিত পথে।

মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যের কেদাহ নামক এলাকায় থাকেন কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন। আট বছর ধরে দেশটিতে থাকলেও পরিস্থিতির কারণে এই মুহূর্তে কোনো বৈধ ভিসা নেই তাঁর। করোনা পরিস্থিতির কারণে কয়েক মাস ধরে কাজও নেই। এ অবস্থায় চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। মোশাররফ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঠিক কত দিন আগে যে দুই বেলা ভাত খেয়েছি মনে করতে পারি না। প্রবাসজীবনে এমন কষ্টের দিন আর কখনো আসেনি। দেশে ফিরে যাব সেই রাস্তাও নেই। আর দেশে ফিরেই বা কী করব। তাই সব কষ্ট সয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি পাহাড়ে-জঙ্গলে।’

জানা গেছে, ‘আটক কেন্দ্র’ সংখ্যা বাড়িয়ে আবারও অবৈধ প্রবাসীদের ধরপাকড়ে নেমেছে মালয়েশিয়া পুলিশ। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জয়নুদিনের বরাত দিয়ে মালয়েশীয় গণমাধ্যম বলছে, চলমান লকডাউনের মধ্যেও অবৈধ বিদেশি অভিবাসীদের ধরপাকড় অব্যাহত থাকবে। জাতীয় নিবন্ধকরণ বিভাগ (এনআরডি) ও পুলিশদের সঙ্গে যৌথভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে অভিবাসন বিভাগ।

একে তো কাজ নেই, তার ওপর ধরপাকড় অব্যাহত রাখার ঘোষণায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মধ্যে। সেলেঙ্গর রাজ্য থেকে নূরউদ্দিন নামে এক প্রবাসী কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁরা একসঙ্গে আটজন একটি মেসে থাকেন। ছয়জনেরই বৈধ ভিসা নেই। দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে তাঁদের সর্বনাশ হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই তাঁরা কাজ হারিয়েছেন। ধরপাকড় অব্যাহত থাকলে আরো বেকায়দায় পড়তে হবে।

এদিকে অনেক অভিবাসী শ্রমিকের পরিবারেও নেমে এসেছে দুর্দশা। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের বৃদ্ধ জাফর আহাম্মদের ছেলে ফারুক আহাম্মদ থাকেন কাতারে। রাজধানী দোহার একটি রেস্তোরাঁয় চাকরি করতেন ফারুক। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে কঠোর লকডাউনে চলে যায় দেশটি। বন্ধ হয়ে যায় রেস্তোরাঁ। চাকরি হারান ফারুক।

জাফর আহাম্মদ টেলিফোনে বলেন, ‘সংসারে ভরণ-পোষণের একমাত্র অবলম্বন আমার ছেলে। খুব বেশি দিন হয়নি সে বিদেশে গেছে। যাওয়ার জন্য যে ঋণ নিয়েছিল তা-ও শোধ হয়নি। এর মধ্যে চাকরি হারিয়ে সে নিজেই বেকায়দায় পড়ে গেছে। আমাদের অবস্থাও খুবই খারাপ। জানি না আমাদের কী হবে।’

যোগাযোগ করা হলে কাতার থেকে ফারুক বলেন, ‘চাকরিটা ফিরে পাইনি। এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি যে ঠিকমতো খাবারও জোটে না। নতুন কোনো চাকরিও পাচ্ছি না। দেশে ফিরে যাব সেই সুযোগও নেই। কারণ বিদেশে আসতে আমাকে অনেক দেনা করতে হয়েছে। দেশে ফিরে দেনা শোধ করব কিভাবে, সংসারই বা চালাব কোন উপায়ে।’

এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে চাকরি হারিয়ে শূন্য হাতে দেশে ফেরা শ্রমিকের সংখ্যাও কম নয়। রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য মতে, গত বছরের এপ্রিল থেকে বিগত এক বছরে চাকরি হারানোসহ নানা কারণে দেশে ফিরেছেন প্রায় পাঁচ লাখ প্রবাসী কর্মী। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিদেশফেরত এসব শ্রমিকের ৫৩ শতাংশই দিনমজুরিসহ ছোট কোনো কাজে যুক্ত হয়ে জীবিকা উপার্জনের চেষ্টা করছেন। বাকি ৪৭ শতাংশের আয়ের কোনো পথ নেই।

তবে দেশে ফেরা কর্মীর সংখ্যা নিয়ে সঠিক তথ্য নেই বলে দাবি করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি বলেন, ‘দেশে ফিরে মানবেতর জীবন যাপন করা কর্মীর সংখ্যা হয়তো বেশি নয়, তার পরও আমরা বিষয়টি স্বীকার করছি। আর আমরা তাদের পাশে আছি। যারা দুস্থ তাদের এ সময় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের আছে। এটা ঋণ সুবিধা হতে পারে।’

ড. সালেহীন জানান, সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জ সেটি হলো—সঠিক ডাটাবেইস না থাকা। বিপাকে পড়া প্রবাসী শ্রমিকদের পুনর্বাসনে পরিকল্পনা নেওয়া হলেও সঠিক তথ্য না থাকায় তাঁদের সহায়তায় এখনো সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। শিগগিরই দেশে ফিরে আসা কর্মীদের ডাটাবেইস তৈরি করে অসচ্ছলদের সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই পরিস্থিতিতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ফর রাইটস অব বাংলাদেশি ইমিগ্রান্টসের (ওয়ারবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, কোনো শ্রমিকই অবৈধ হয়ে বিদেশে যান না। পরিস্থিতির শিকার হয়ে তাঁরা অবৈধ হয়ে যান। যাঁরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না কিংবা দেশে ফিরে বেকার হয়ে পড়েছেন, তাঁদের সবাইকে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এককালীন বিশেষ সহযোগিতা দেওয়া হলে হয়তো তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

সাইফুল হক আরো বলেন, হলমার্কসহ নানা কেলেঙ্কারিতে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। অথচ প্রবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ নেই। প্রবাসীদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা হয়েছিল। সেটি খুব একটা কাজে আসেনি।

মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় অব্যাহত থাকার বিষয়ে সৈয়দ সাইফুল বলেন, এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জরুরি। বাংলাদেশি অভিবাসীরা যেন নিরাপদ থাকেন, সে জন্য সরকার দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসতে পারে।

]]>