ঢাকা বিভাগ – উচ্চকণ্ঠ https://ucchakontha.com সময়ের সাথে প্রকাশ Sat, 31 May 2025 16:42:14 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.2 সন্ত্রাসীদের কোন জাত, ধর্ম ও রাজনৈতিক পরিচয় নেই- ‘অপর্ণা রায়’ https://ucchakontha.com/archives/33582 Sat, 31 May 2025 16:42:14 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33582 বিশেষ প্রতিনিধি:

বিএনপির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সহ সম্পাদক ও বাংলাদেশ পূজা ফ্রন্ট এর সম্মানিত সভাপতি অপর্না রায় বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন জাত ধর্ম রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তারা শুধুই সন্ত্রাসী। সমাজ থেকে তাদেরকে বিতাড়িত না করলে এই সমাজ কলুষিত হতেই থাকবে।
যশোরের অভয়নগরে মসিয়াাহাটিতে উপজেলা কৃষকদল সভাপতি তরিকুল ইসলামের হত্যাকান্ড ও এর যের ধরে নিরীহ গ্রামবাসীর ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া ও লুটপাটের স্থান পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কালে তিনি একথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বোস, সহ-সভাপতি সুরঞ্জন ঘোষ, সহ-সভাপতি গৌতম মিত্র, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দেব রায়,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিক সাহা তন্ময়, অজয় কর, অশোক কুন্বূ, নিত্যানন্দ মণ্ডল, কার্তিক দাস , শান্তনু ঘোষ, সুবাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

]]>
সাংবাদিক আরাফাত হিমেল পেলেন ‘লাবণ্য এ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ https://ucchakontha.com/archives/33571 Sun, 25 May 2025 07:14:58 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33571 ইসমাইল হোসেন

গণমাধ্যম কর্মী ও সমাজসেবায় উন্নয়নে অনবদ্য ভূমিকার জন্য চ্যানেল a1 টেলিভিশনের সাংবাদিক ও সমাজসেবক মোঃ আরাফাত হিমেল “সংগঠক ক্যাটাগরি”-তে লাবণ্য মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড -২০২৫ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

২৩ মে ২০২৫ (শুক্রবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে “লাবণ্য এ্যাওয়ার্ড -২০২৫” আয়োজিত “কচিকাঁচার মেলা” অনুষ্ঠানে বিকেল ৩টা থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশের টেলিভিশনের অভিনেতা অভিনেত্রী, বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশ বিষয়ক সংস্থার প্রতিনিধিগণ এবং যুব সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।

আরাফাত হিমেল একজন নিবেদিতপ্রাণ সমাজকর্মী যিনি দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ রক্ষা, যুব সমাজকে সচেতন ও সংগঠিত করা, এবং সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রমে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। তিনি তরুণদের নেতৃত্ব, দক্ষতা উন্নয়ন, এবং সমাজকল্যাণে যুক্ত করার মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছেন।

পুরস্কার প্রদানকারী সংগঠন লাবণ্য মিডিয়া হাউসের কর্ণধার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্ট্রোর হেদায়েতুল্লাহ তুর্কী বলেন, “আরাফাত হিমেল নেতৃত্ব, স্বচ্ছতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা ভবিষ্যতের সংগঠকদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।”

এই সম্মাননা শুধুমাত্র আরাফাত হিমেল ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বরং বাংলাদেশের পরিবেশ ও সমাজ উন্নয়নের অঙ্গনে এক গর্বিত সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আরাফাত হিমেল বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের জড়িত রয়েছেন।

]]>
লাবণ্য মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেলেন সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন। https://ucchakontha.com/archives/33566 Sun, 25 May 2025 05:59:36 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33566 বিশেষ প্রতিনিধি:

পরিবেশ ও সামাজিক সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য “সংগঠক” ক্যাটাগরিতে লাবণ্য মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেলেন সাংবাদিক ও সংগঠক মোঃ ইসমাইল হোসেন।

২৩ মে, শুক্রবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে আয়োজিত “কচিকাঁচার মেলায়”- এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি ছিল বর্ণাঢ্য—উপস্থিত ছিলেন দেশের গুণীজন, পরিবেশকর্মী ও আন্তর্জাতিক অতিথিরা।

ইসমাইল হোসেন এসএ টেলিভিশনের সাংবাদিক এবং “দুর্বার যুব উন্নয়ন সংস্থা”-র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ সুরক্ষা, যুব নেতৃত্ব ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন।

তার সংগঠন “দুর্বার” ছাড়াও তিনি জড়িত রয়েছেন— “রাইট টক বাংলাদেশ”, “আমরা দুর্বার”, “স্বপ্ন সারথী যুব উন্নয়ন সংস্থা” এবং “স্বপ্ন সারথী পাবলিক লাইব্রেরি”-র মতো বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগে।

লাবণ্য মিডিয়া হাউসের কর্ণধার হেদায়েতুল্লাহ তুর্কী বলেন— “ইসমাইল হোসেনের মতো তরুণ নেতৃত্ব ভবিষ্যতের জন্য আশাজাগানিয়া।”

এই সম্মাননা শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়—বরং বাংলাদেশের যুবশক্তির সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়নে অগ্রগতির প্রতীক।

]]>
ভাঙ্গায় দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করলো বখাটে! https://ucchakontha.com/archives/33543 Thu, 24 Apr 2025 17:47:50 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33543 রোমান মাতুব্বর- ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এসএসসি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় আশিক মাতুব্বর (১৭) ও সাইম শেখ(১৭) নামে দুই পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করেছে এক বখাটে যুবক। আজ সকাল ৯ টার দিকে পুর্ব শক্রতার জের ধরে ভাঙ্গা থানার সামনে কালীবাড়ি সংলগ্ন সড়কে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত দুই শিক্ষার্থী যথাক্রমে উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মহেশ্বরদী উচ্চ বিদ্যালয় এবং ভাঙ্গা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের বাড়ি উপজেলার আলগী ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামে। পেটে, হাতে সেলাই নিয়েই ঐ দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্ৰহন করে। পরে প্রশাসন ও চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে পুনরায় তাদেরকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

হামলায় আহত পরীক্ষার্থী আশিক মাতুব্বর বলেন, সকালে ভ্যানযোগে বাড়ি থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ভ্যানটি ভাঙ্গা বাজারের থানা সংলগ্ন রোড়ে কালীবাড়ির সামনে আসা মাত্র কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার প্রতিবেশি ফাহিম মাতুব্বর চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমাকে ও আমার বন্ধু সাইম শেখকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা আমাদের দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। ফাহিম এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। ৮/৯ মাস আগে ওর সাথে আমার তর্ক বিতর্ক হয়েছিল। এছাড়া কোনো বিরোধ নেই।

এ ঘটনায় ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাক্তার তানসিভ জুবায়ের বলেন, দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় দুইজনেরই বামহাত, পেট সহ শরীরের একাধিক জায়গায় কোপানোর চিহ্ন রয়েছে । তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মো. হায়দার হোসেন বলেন, দুই শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবী করছি।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, এ বিষয় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্ব আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

]]>
বনানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি https://ucchakontha.com/archives/33534 Tue, 22 Apr 2025 04:23:36 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33534 বিশেষ প্রতিনিধি: মোঃ কামাল হোসেন

বনানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির বনানী থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মোঃ আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯) ২। আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও ৩। আল আমিন সানি (১৯)।

সোমবার (২১ এপ্রিল ২০২৫ খ্রি.) রাত আনুমানিক ১২:১৫ ঘটিকায় মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকাসহ আশেপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বনানী থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল ২০২৫ বিকেল আনুমানিক ০৪:৪০ ঘটিকায় বনানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ ও তার বন্ধু মোঃ তরিকুল ইসলামের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তার উপর কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। পরবর্তীতে হামলায় গুরুতর আহত পারভেজকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ২০ এপ্রিল ২০২৫ খ্রি. জাহিদুল ইসলাম পারভেজের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।

থানা সূত্রে আরো জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা উক্ত হত্যা মামলার তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ আসামি। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে উক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হামলার ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলো।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। হত্যার ঘটনায় জড়িত এজাহারনামীয় ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

]]>
হজ্জ ২০২৫ ব্যাগেজ ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত। https://ucchakontha.com/archives/33529 Mon, 21 Apr 2025 14:52:14 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33529 বিশেষ প্রতিনিধি: খালেদ খান

অদ্যকার ২১ এপ্রিল সোমবার রাজধানীর অভিজাত হোটেল লে মেরিডিয়ানে বীনা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির চেয়ারম্যান জনাব হাফেজ জিয়াউর রহমান এর সভাপতিত্বে হজ্জ ২০২৫ ব্যাগেজ ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।


উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবের আল ওকালা কোম্পানির চেয়ারম্যান ড. সাহির মাতার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হজ্জ এজেন্সীস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি জনাব সৈয়দ গোলাম সরওয়ার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন হজ্জ এজেন্সীস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর মহাসচিব জনাব ফরিদ আহমেদ মজুমদার।

বক্তারা রাজকীয় সৌদি সরকারের ‘রোড টু মক্কা’ ইনিশিয়েটিভ নিয়ে  আলোচনা করছেন যাতে এ বছর বাংলাদেশের হাজীদের লাগেজ নিয়ে পেরেশানি কম হয়। সম্মানিত হাজি সাহেবদের ব্যাগেজ সমস্যা নিরসন লক্ষ্যে বীনা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি এবং আল ওকালা কোম্পানির চেয়ারম্যান ড. সাহির মাতার এর সাথে একটি চুক্তি হয়েছে।
আসন্ন হজ্জে বাংলাদেশী হাজিদের ব্যাগেজ বহন প্রজেক্ট “রোড টু মক্কা’র সকল সুপারভিশন ও ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত হবে বীনা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির মাধ্যমে।

]]>
কোরআন সুন্নাহ ও বিজ্ঞানের আলোকে রোজা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তির নিরসন https://ucchakontha.com/archives/33452 Fri, 28 Mar 2025 16:45:35 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33452  

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা ! বর্তমানে রোজা-ঈদ পালনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে দুই ধরনের ফতোয়া শোনা যাচ্ছে।

এক. আমরা বলি, নিজ নিজ দেশে চাঁদ দেখে রোজা-ঈদ পালন করা আবশ্যক ।
দুই. আবার কেউ কেউ বলেন, সৌদি আরব অথবা বিশ্বের যে দেশে আগে চাঁদ দেখা যাবে, সে দেশের সংবাদের ভিত্তিতে রোজা-ঈদ পালন করা আবশ্যক।
দুই ফতোয়ার ক্ষতি
এ দুই ফতোয়ার সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে, আমাদের দৃষ্টিতে তারা গুনাহ্গার, তাদের দৃষ্টিতে আমরা গুনাগার, গড়ে সবাই গুনাগার। কেননা, যখন সৌদি কিংবা অন্য কোনো দেশে চাঁদ উঠার সংবাদ পাওয়া যায় তখন তারা এ দেশে রোজা শুরু করে; কিন্তু আমরা রোজা শুরু করি না । তাই তারা মনে করে আমরা রোজা বর্জন করে কবিরা গুনাহ করছি। অপর দিকে আমরা মনে করি, আমাদের দেশে চাঁদ উঠার আগেই রোজা শুরু করার কারণে তারা গুনাগার হচ্ছে।

ঠিক তেমনিভাবে, রমজানের শেষেও উভয় দল গুনাহ্গার । কেননা, যখন কোনো দেশের চাঁদের সংবাদ আসে তখন তারা ঈদ করে; কিন্তু আমরা ঈদ করি না । আমরা মনে করি, তারা রোজার দিনে ঈদ করছে, যার কারণে তারা কবিরা গুনাহ করছে। আর তারা মনে করে, আমরা ঈদের দিনে রোজা রাখছি, ফলে আমরা কবিরা গুনাহ করছি ।
আর তাদের দৃষ্টিতে আমাদের কুরবানী সহীহ হলেও আমাদের দৃষ্টিতে তাদের কুরবানী সহীহ হয় না। কেননা, তারা আমাদের হিসেবে জিলহজ্জের ৯ তারিখে আর আমরা তাদের হিসেবে ১১ তারিখে কুরবানী করি I কোন ফতোয়া সঠিক ?
উভয় দলের ফতোয়া ও কর্ম একই দেশে, একই মুহূর্তে কিভাবে সঠিক হতে পারে? তাহলে একই দিনে একই দেশে রোজা ও ঈদ একত্রে হওয়া আবশ্যক হয়ে যাবে, যা কখনই সম্ভব নয় । এমন অসম্ভব বিষয় হওয়া সত্ত্বেও উভয় দল নিজেদেরকে হক ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন বলে বিশ্বাস করেন। দলিল হিসেবে উভয় দল একই আয়াত ও হাদীস পেশ করে বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা করে থাকেন। সাধারণ মুসলমানদের দলিল
রোজা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তির নিরসন ৩
যাচাইয়ের ক্ষমতা না থাকায় তারা চরম বিভ্রান্তিতে পতিত হচ্ছেন। আর বলে বেড়াচ্ছেন-
এই হুজুর বলে এই কথা, ঐ হুজুর বলে ঐ কথা, আমরা মানবো কার কথা ??
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা!
হতাশ হবেন না । বিভ্রান্ত হবেন না। সত্যের মাঝে কখনই হতাশা ও বিভ্রান্তি নেই । সত্যে আছে প্রশান্তি । সুতরাং রোজা-ঈদ পালনের বিষয়ে হতাশা এবং বিভ্রান্তি থেকে বেঁচে, সত্য ও সঠিক পথ পেতে আমরা কুরআন-সুন্নাহ ও বিজ্ঞানের আলোকে, একটি নকশা অংকন করেছি। আপনি যদি ভালোভাবে এ নকশা বুঝে নিতে পারেন, তাহলে আপনিও বুঝবেন কোন্ ফতোয়া সঠিক । আপনার মনে আর কোনো সন্দেহ সংশয় থাকবে না এবং আপনার অন্তর প্রশান্ত হবেই ইনশাআল্লাহ । নকশা বুঝার পূর্বে আমাদের যে সকল কথা মনে রাখতে হবে- এক. রোজা-ঈদ পালনের মূলনীতি কী ?

কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন- “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে সে যেন এই মাসে অবশ্যই রোজা রাখে।” (সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৮৫)
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে- “তোমরা নতুন চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং নতুন চাঁদ দেখে রোজা ছাড়ো। যদি মেঘ ইত্যাদির কারণে চাঁদ দেখা না যায় তাহলে শাবান মাসকে ৩০ দিনে (সহীহ বুখারী, হাদীস- ১৯০৯)
কর।

তাহলে বুঝা গেল রোজা-ঈদ পালনের মূলনীতি হচ্ছে চাঁদ দেখে রোজা রাখা এবং চাঁদ দেখে ঈদ করা। আর সেই সাথে যদি চাঁদ না দেখা যায়, তাহলে কী করতে হবে, তাও এ হাদীসে বলে দেওয়া হয়েছে। দুই. নতুন চাঁদ কখন কিভাবে দেখা যায়?
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর ইবাদতের সময় চেনার জন্য সূর্য ও চন্দ্রকে ঘড়ি হিসেবে দান করেছেন। উভয়টির ঘূর্ণনের মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকি না কেন, সময় বুঝে সকল ইবাদত করতে পারি। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন- “তিনি সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপতে বিচরণ করে।” (সূরা- আম্বিয়া, আয়াত- ৩৩)
এ আয়াত দ্বারা যা বুঝা যায়
এক. সূর্য, চন্দ্র, দিন ও রাত সবাই আপন আপন কক্ষপথে ঘুরে । দুই. আর তাদের সকলের কক্ষপথ পূর্ব থেকে পশ্চিম ।
তিন. সূর্য পূর্ব দিক থেকে উঠে পশ্চিম দিকে ডুবে । এটা তো সকলেই দেখে; কিন্তু চাঁদ কোন দিক থেকে উঠে কোন দিকে ডুবে, তা সকলে জানে না ।
চার. আসলে চাঁদও পূর্ব দিক থেকে উঠে পশ্চিম দিকে ডুবে। অর্থাৎ চাঁদের গতিও পূর্ব থেকে পশ্চিম
# প্রথম দলিল
মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- “শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের পিছনে পিছনে চলে।” (সূরা- শামস, আয়াত- ২)
# দ্বিতীয় দলিল
মহান আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন- “তিনি দুই উদয়স্থলের রব এবং দুই আস্থাচলের রব ।” (সূরা- রহমান, আয়াত- ১৭)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ তাআলা সূর্য এবং চন্দ্র উভয়ের উদয়স্থলের প্রভু এবং তিনি উভয়ের আস্থাচলেরও প্রভু । (সফওয়াতুত তাফসীর, খন্ড- ৩, পৃষ্ঠা-২৭৭) # তৃতীয় দলিল
আমরা যখন নতুন চাঁদকে পশ্চিম দিকে উঠতে দেখি, তখন কি চাঁদ উপরের দিকে যায়, না আস্তে আস্তে নিচের দিকে যায় ?
নিচের দিকে যায়।
তাহলে বুঝা গেল চাঁদ পশ্চিম দিকেই যাচ্ছে।
অমাবশ্যার পর নতুন চাঁদ এক স্থানে দৃশ্যমান হওয়ার পর পশ্চিম দিকে যেতে থাকে এবং দৃশ্যমান হতে থাকে। আর পূর্বাঞ্চলের মানুষেরা তাকে ডুবতে দেখে। অথচ চাঁদ পশ্চিম দিকে এগিয়ে চলছে । পশ্চিমের দেশ সমূহের লোকেরা স্বাভাবিক ভাবেই নিজ নিজ সন্ধ্যায় নতুন চাঁদ দেখতে পান। এভাবেই ২৪ ঘণ্টার ভিতরে পূর্ণ পৃথিবীর মানুষ
নতুন চাঁদ দেখতে পান। সমগ্র পৃথিবীর মানুষ মাসের শুরুতে নতুন চাঁদকে সন্ধ্যা বেলায় ডুবার সময় দেখতে পায় ।
চাঁদ ডুবার সময় দেখার হিকমত
যেহেতু সন্ধ্যার পর ইসলামে দিন রাতের হিসাব শুরু হয় সেহেতু সন্ধ্যার সময় চাঁদ দেখা যাওয়ার মাধ্যমে নতুন মাসের হিসাব আসা জরুরী ছিল।

তাই আল্লাহ তাআলা চাঁদের গতি ও কক্ষপথ এভাবে নির্ধারণ করেছেন যে, নতুন চাঁদ সন্ধ্যা বেলায় দেখা যাবে। সমগ্র পৃথিবীর মানুষ আপন আপন অঞ্চলে সন্ধ্যা বেলায় নতুন চাঁদ দেখতে পাবে এবং মাস গণনা করতে পারবে। এ কথা ভালোভাবে মনে রাখবো, আমরা মাসের শুরুতে নতুন চাঁদকে ডুবার সময় দেখি। মাসের মধ্যখানে চাঁদকে উঠার সময় দেখি এবং মাসের শেষ দিকে আমরা চাঁদকে গভীর রাতে উঠতে দেখি। এখন নকশা বুঝবার চেষ্টা করি
১ম . ঘরে, ২৪টি দেশের নাম বসানো হয়েছে। এক দেশের সাথে অপর দেশের দূরত্ব ঘড়ির কাটায় এক ঘণ্টা। যেহেতু পুরো পৃথিবীতে সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় দিন-রাত হয় সেহেতু ২৪ ঘণ্টার হিসেবে এ নকশা তৈরি করা
হয়েছে।
২য়. ঘরে, ০. ১৫. ৩০ এগুলোকে ডিগ্রী বা দ্রাঘিমা বলে । এগুলো হল আমাদের প্রথম কথার দলিল। কেননা, সূর্যের আলো ১ ডিগ্রী অতিক্রম করতে ৪ মিনিট সময় লাগে । আর ৪×১৫=৬০ মিনিট। আর৬০ মিনিটে ১ ঘণ্টা ।
৩য়. ঘরে, সৌদি আরবে যখন সন্ধ্যা ৭টা হয় ঐ মুহূর্তে সমগ্র পৃথিবীতে কয়টা বাজে তা দেখানো হয়েছে। ভালো করে দেখে নিন। সৌদির পশ্চিমে ওই মুহূর্তে দিন দুপুর চলছে। আর সৌদির পূর্বে ওই মুহূর্তে রাত বা গভীর রাত চলছে। সমগ্র পৃথিবীতে একসাথে দিন বা রাত থাকে না; বরং কোথাও দিন থাকে আবার কোথাও রাত থাকে ।
সৌদির সাথে পশ্চিম দিক থেকে সূর্যের হিসেবে অন্যান্য দেশ কত ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থান করছে, তা দেখানো হয়েছে। এভাবে পূর্ণ পৃথিবীর হিসাব দেখে নিন ।
এবার মাসআলা বোঝার চেষ্টা করি
১. সৌদি আরবে সবসময় আগে চাঁদ দেখা যায় না। সৌদির আগেও কোনো কোনো দেশে চাঁদ দেখা যাওয়া প্রমাণিত আছে । যেমন, গত বছর ২০২২ এর ঈদুল ফিতরের চাঁদ আফগান, নাইজার ও মালি এই তিন দেশে আগে দেখা গিয়েছিল এবং মিডিয়াতে প্রচার হয়েছিল। তখন ঐ তিন দেশের লোকেরাই ঈদ করেছিল। সৌদিসহ পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ ঐ দিন ঈদ পালন করেনি।
রোজা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তির নিরসন ৬
২. তবে অধিকাংশ সময় সৌদিতে আগে চাঁদ দেখা যায় । তখন স্বাভাবিকভাবে পশ্চিমের দেশগুলোতে চাঁদ দেখা যেতে থাকে।
৩. চাঁদ দেখা যাওয়ার সময় হচ্ছে সন্ধ্যা। ধরুন! সৌদিতে সন্ধ্যা ৭টায় সূর্য ডুবে গেল আর সেখানে চাঁদ দেখা গেল। তার ১ ঘণ্টা
পর মিশরে সন্ধ্যা হবে, চাঁদটা সেখানে চলে যাবে। মিশরের আকাশে মেঘ ইত্যাদি না থাকলে স্বাভাবিকভাবেই চাঁদ সেখানে দেখা যাবে। সৌদির ২ ঘণ্টা পর তিউনিসিয়াতে সন্ধ্যা হবে এবং সেখানে চাঁদ দেখা যাবে। সৌদির ৩ ঘণ্টা পর লন্ডনে সন্ধ্যা হবে, চাঁদটা সেখানে দেখা যাবে। এভাবে পশ্চিম দিকে ঘুরতে ঘুরতে ২১ ঘণ্টা পর বাংলাদেশে সন্ধ্যা হবে এবং সেই সন্ধ্যায় স্বাভাবিকভাবে চাঁদটা বাংলাদেশের আকাশে দেখা যাবে । এভাবেই যুগ যুগ যাবত বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সকল দেশের আকাশে চাঁদ দেখা যাচ্ছে । আর এটাই চাঁদ দেখা যাওয়ার পদ্ধতি । যা বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে। কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও হয়ে থাকে। যা আমরা নকশার মাঝে “ফিত্না সৃষ্টি সম্ভাব্য এলাকাসমূহ” শিরোনামে লিখে দিয়েছি। একটি প্রশ্ন ও তার উত্তর
সবাই জানে সৌদির সাথে বাংলাদেশের ব্যবধান ৩ ঘণ্টা আর আমরা দেখাচ্ছি ২১ ঘণ্টা । বিষয়টা জটিল মনে হচ্ছে ?
তাহলে বুঝুন! সূর্য আমাদের দেশ থেকে সৌদিতে যেতে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে। আর সৌদি থেকে সূর্য পুনরায় আমাদের দেশে আসতে ২১ ঘণ্টা সময় লাগে। ২১ + ৩ = ২৪ ঘণ্টা হয়ে যায় ।
ঠিক তেমনিভাবে চাঁদ সৌদি থেকে আমাদের দেশে, পশ্চিম দিক থেকে ঘুরে আসতে ২১ ঘণ্টা সময় লাগে। যদি চাঁদ পূর্ব দিকে ঘুরতো তাহলে ৩ ঘণ্টার মধ্যে চলে আসতে পারতো।
মোটকথা, আমাদের দেশ থেকে চাঁদ-সূর্যের সৌদি যাওয়ার পথ ৩ ঘণ্টার দূরত্ব । সৌদি থেকে আমাদের দেশে আসার পথ ২১ ঘণ্টার দূরত্ব । আর চাঁদ-সূর্য গাড়ির মতো পিছনে আসে না। নিজ নিজ পথে পরিভ্রমণ করে । এটাই তাদের দায়িত্ব । চাঁদ সূর্যের পরিভ্রমণের মাধ্যমে আল্লাহ্ বান্দাগণ নিজ নিজ স্থানে নামাজ, রোজা, যাকাত, কুরবানী ইত্যাদি ইবাদতসমূহ যথাসময়ে বিনা সমস্যায় আদায় করতে পারেন এবং যুগ যুগ যাবৎ আদায় করে আসছেন ।
চাঁদের সংবাদ

পক্ষান্তরে আপনি যদি বলেন, হাদীস শরীফে তো চাঁদের সংবাদ গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে । যেমন, আবু দাউদ শরীফের ২৩৩৯ নাম্বার হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাঁদের সংবাদ গ্রহণ করেছেন। তাহলে আপনারা কেন সৌদির বা সর্বপ্রথম যে দেশে চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ আসে সে দেশের চাঁদের সংবাদ গ্রহণ করছেন না ?
এর উত্তরে বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম দুটি সমাধান দিয়েছেন। ১.ব নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে চাঁদের সংবাদ গ্রহণের হাদীস পাওয়া যায়। আর সাহাবাগণের যুগে চাঁদের সংবাদ গ্রহণ না করার আমল পাওয়া যায় । যা সহীহ মুসলিমের ২৫২৮ নাম্বারে বর্ণিত হয়েছে। এখানে নবীজীর আমল ও সাহাবাগণের আমল পরস্পর বিরোধী দেখা যাচ্ছে। আর সাহাবাগণ সংঘবদ্ধ বা একাকীভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা অমান্য করবেন তা কিছুতেই হতে পারে না । সাহাবাগণ আমাদের থেকে অবশ্যই দ্বীন বেশি বুঝতেন। নবীজীকে বেশি ভালোবাসতেন।

দ্বীনের উপর শতভাগ আমল করতেন । তারা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনার উপরই আমল করেছিলেন।
নতুবা তাদের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যেত। কেননা, তাদের সবার মেজাজ ছিল “দ্বীনের সামান্যতম ক্ষতি হবে আর আমি জীবিত থাকবো তা হতে পারে না” । তাই হাদীস বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন, আবু দাউদ শরীফের হাদীস নিকটবর্তী এলাকার সংবাদ গ্রহণ করার পক্ষে দলিল হবার উপযুক্ত। আর সাহাবাগণের আমল যা সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে তা দূরবর্তী অঞ্চলের চাঁদের সংবাদ গ্রহণ না হওয়ার দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য । সুতরাং উভয় হাদীসের উপর আমল হয়ে গেল। কোনো হাদীসকে বর্জন করার প্রয়োজন হলো না। আর সাহাবাগণকে নবীজীর নির্দেশনার বিপক্ষে দাঁড় করানোর মত ক্ষতিকর কাজও করা লাগলো না। পক্ষান্তরে যারা সৌদি বা ভিন্ন দেশের চাঁদের সংবাদে রোজা ঈদ করতে চায় তারা সহীহ মুসলিমের ২৫২৮ নাম্বার এর হাদীসের উপর নানা রকমের আক্রমণ করে হাদীসটিকে শহীদ করতে চায় যা কখনোই কাম্য নয়।
২. তাদের ফতোয়া মোতাবেক যদি সৌদি বা ভিন্ন দেশের চাঁদের সংবাদ পৃথিবীর সকল দেশে গ্রহণ করা হয় তাহলে বিশ্ব মুসলিম ২১টি এমন
রোজা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তির নিরসন ৮
সমস্যার সম্মুখীন হবেন যার কোনো সমাধান নাই । পক্ষান্তরে যদি আমাদের ফতোয়া মুতাবেক আমল করা হয় । যে আমল নববী যুগ থেকে
চলে আসছে, তাহলে কোনো সমস্যা থাকবে না। ইনশাআল্লাহ । গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য
আমাদের দেশে এক শ্রেণীর মানুষ বলে বেড়াচ্ছেন যে, সমগ্র পৃথিবীর মুসলমানরা এক সাথে রোজা-ঈদ করে আর আমরা নাকি একদিন পরে করি ।
প্রিয় দেশবাসী! এটি একটি ভুল কথা। মারাত্মক ভুল কথা। খুব ভালো ভাবে মনে রাখবেন, সমগ্র বিশ্বের মুসলমানগণ নিজ দেশে চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করেই রোজা-ঈদ পালন করেন । আর এটাই শরীয়তের বিধান। প্রমাণ স্বরূপ দেখুন-
১৪৪৩ হিজরীর ঈদুল ফিতর
১৪৪৩ হিজরীর ঈদুল ফিতরের চাঁদ সর্বপ্রথম ৩০ শে এপ্রিল শনিবারে আফগান, নাইজার ও মালিতে দেখা গিয়েছিল । তাই উক্ত তিন দেশের মুসলমানগণ ১লা মে ২০২২ ইং রবিবারে ঈদ করেছিল। পৃথিবীর আর কোনো দেশে উক্ত তারিখে চাঁদ দেখা যায়নি। আর কোনো দেশে ১ লা মে ঈদ হয়নি । তাহলে একথা কিভাবে সত্য হয় যে, বিশ্বের সকল মুসলমান এক দেশের চাঁদের সংবাদে রোজা-ঈদ করে। সেই সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, “সৌদি আরব অন্য দেশের চাঁদের সংবাদের ভিত্তিতে রোজা-ঈদ করে না ।”যদি অন্য দেশের চাঁদের সংবাদের ভিত্তিতে রোজা ঈদ পালন করা শরীয়তে আবশ্যক হত, তাহলে অবশ্যই সৌদিসহ অন্য সকল মুসলিম দেশ আফগানিস্তানের সাথে তাল মিলিয়ে ঈদ পালন করত। বিস্তারিত জানতে গুগলে সার্চ করুন“আফগানিস্তান,নাইজার, মালিতে ঈদ উদযাপন। ” তবে আফগানিস্তানের সাথে তাল মিলিয়ে সাদ্রা পরিবারের একাংশ ঐ দিন ঈদ উদযাপন করেছিল । বিস্তারিত জানতে গুগলে সার্চ করুন

“আফগানিস্তানের সাথে মিল রেখে চাঁদপুরের দুই গ্রামে ঈদ উদযাপন।” ১৪৪৩ হিজরীর ঈদুল ফিতর
১৪৪৩ হিজরীতে বিশ্বে সর্বপ্রথম ঈদুল ফিতরের চাঁদ সৌদি আরবে দেখা গিয়েছে। তারপর পশ্চিমের দেশগুলোতে দেখা গিয়েছে। ফলে সৌদি ও তার পশ্চিমের দেশগুলোতে ২১ শে এপ্রিল ২০২৩ শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে । আর ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার পশ্চিমে নাওরু থেকে ওমান

পর্যন্ত সকল দেশে ২২ শে এপ্রিল শনিবারে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। তাহলে বিশ্বের সকল মুসলমান একই দিনে রোজা-ঈদ করে শুধমাত্র বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের কিছু মানুষ করে না। এ কথাটি কত বড় ভুল । এটা আমাদের জেনে রাখা ভালো। বিস্তারিত জানতে সার্চ করুন- “৮ দেশে ঈদুল ফিতর শনিবার।”
ওমানের অবস্থা
ওমান সৌদি আরবের পার্শ্ববর্তী দেশ । তারাও সৌদির চাঁদের সংবাদের ভিত্তিতে রোজা-ঈদ পালন করে না । কখনো ওমান সৌদির সাথে চাঁদ দেখে থাকে আবার কখনো বাংলাদেশের পরে চাঁদ দেখে রোজা-ঈদ পালন করে। এভাবেই সমগ্র পৃথিবীর মুসলমানগণ রোজা-ঈদ পালন করেন । তবে দু’একটি দেশে আমাদের দেশের মত রোজা-ঈদ পালনের বিষয়ে ঝামেলা থাকতে পারে । সার্চ করুন “সৌদিতে হলেও ওমান ও মরক্কোয় ঈদ উদযাপন হচ্ছে না আজ ।”
ঈদ নকশা অনুযায়ী হয়েছে ?
১৪৪৩ হিজরীর ঈদুল ফিতর আমাদের নকশা অনুযায়ী হয়েছে। সর্বপ্রথম ২৯ রোজায় শুক্রবারে সৌদি আরব চাঁদ দেখেছে এবং সর্বশেষ ৩০ রোজা পূর্ণ করে শনিবারে ওমানে ঈদ হয়েছে। অথচ ওমান সৌদির প্রতিবেশী দেশ। তবুও ওমান সৌদির চাঁদের সংবাদে ঈদ করেনি এবং করেও না । তাহলে বুঝা গেল পূর্ণ পৃথিবী এক দেশের চাঁদের সংবাদে রোজা-ঈদ করে এ তথ্য সম্পূর্ণ ভুল; বরং সবাই নিজ নিজ দেশে চাঁদ দেখে রোজা-ঈদ করে । ১৪৪৪ হিজরীর ঈদুল আযহা
১৪৪৪ হিজরীর ঈদুল আযহা পূর্ণ পৃথিবীতে দুই দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওমান, সৌদিসহ পশ্চিমের দেশসমূহে ২৮শে জুন ২০২৩ রোজ বুধবারে এবং ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার পশ্চিমের দেশসমূহ যথা- ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানসহ আরো অনেক দেশে ২৯ শে জুন ২০২৩ রোজ বৃহস্পতিবার ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে । গুগলে সার্চ করে আপনি উক্ত বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন এভাবে লিখুন:- “মালয়েশিয়াসহ ৩ দেশে ঈদুল আযহার তারিখ ঘোষণা ।” তাহলে বুঝা গেল পূর্ণ পৃথিবীর মুসলমান সকলেই নিজ নিজ দেশে চাঁদ দেখেই রোজা-ঈদ পালন করছে। ইসলামের প্রাথমিক যুগ
থেকে ইন্টারনেট আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত সবাই এভাবেই আমল করতেন ।
খুব ভালো করে মনে রাখতে হবে, রোজা-ঈদ পালনের ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি হচ্ছে “চাঁদ দেখা কিংবা নিকটবর্তী এলাকা থেকে সঠিকভাবে চাঁদ উদয়ের সংবাদ পাওয়া। আর ফিৎনার এ যুগে এমন নীতিকে মাড়ির দাঁত দ্বারা আকড়ে ধরতে হবে। যেমন এক হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, “আমার পর তোমাদের মধ্যে যে জীবিত থাকবে সে অচিরেই নানারূপ মতানৈক্য দেখতে পাবে। তখন তোমরা আমার সুন্নত এবং সুপথপ্রাপ্ত খুলাফাদের (সাহাবাগণের) সুন্নতকে মাড়ির দাঁতে কামড়ে ধরার ন্যায় মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবে।”
(আবু দাউদ- ৪৬০৭, তিরমিযী- ২৬৭৬) মিডিয়ার সংবাদে বিভ্রান্তি
অনেক ভাই মনে করেন আধুনিক এ যুগে মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা সকল ধরনের বিভ্রান্তি থেকে বেঁচে থাকতে পারি। তাই তারা মিডিয়ার সংবাদকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন । আর বলেন মিডিয়ার এ যুগে চর্ম চক্ষে চাঁদ দেখার প্রয়োজনীয়তা আর বাকি নাই । অথচ দেখুন মিডিয়ার সংবাদেও বিভ্রান্তি রয়েছে। বৈপরিত্য রয়েছে।
গত ১৪৪৫ হিজরী সনের জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া নিয়ে সৌদি আরবে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সৌদির সুপ্রিম কোর্ট সন্ধ্যা ৭টায় জিলহজ্জের চাঁদ দেখা যায়নি মর্মে ঘোষণা দিয়েছে। অপর দিকে পবিত্র দুই মসজিদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে চাঁদ দেখার সংবাদ প্রচার করেছে। বিস্তারিত জানতে গুগলে সার্চ করুন “সৌদিতে চাঁদ দেখা নিয়ে ধোঁয়াশা।”
প্রিয় ভাই ও বোনেরা ! তাহলে বলুন আমরা কিভাবে মিডিয়ার সংবাদের উপর আস্থা রেখে ঘুমিয়ে থাকবো । আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমীন ।
সর্বশেষ আবেদন
প্রিয় দেশবাসী! রোজা-ঈদ এটি ধর্মীয় বিষয়। এ বিষয়ে ধর্মীয় পন্ডিত, হক্কানী ওলামাদের সিদ্ধান্তই গ্রহণযোগ্য। এটি কোনো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মাস্টার, মিস্টার বা কবিরাজের বিষয় নয় । তাই হক্কানী আলেমদের সিদ্ধান্তকে বর্জন করে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এটি কখনোই হেদায়েতের কারণ হতে পারে না; বরং ভ্রষ্টতার কারণ হতে পারে । আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে দ্বীনি বুঝ দান করুক।

আমিন সুম্মা আমীন

 

মুফতি জুবায়ের বিন আব্দুল কুদ্দুছ
শিক্ষক লালবাগ মাদ্রাসা
খতিব আজিমপুর ছাপড়া জামে মসজিদ

]]>
গাজীপুররস্থ বাকেরগঞ্জ ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতারের আয়োজন https://ucchakontha.com/archives/33449 Thu, 27 Mar 2025 05:57:52 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33449 মিজানুর রহমান স্বাধীন:

স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন গাজীপুরস্থ বাকেরগঞ্জ ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে বুধবার ২৬-০৩-২০২৫ ইং গাজীপুরের গাজীপুরা এলাকার সোয়াদ কমিউনিটি সেন্টারে দোয়া ও ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গুণীজন ব্যক্তিবর্গ, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল জেলার, বাকেরগঞ্জ উপজেলার, খয়রাবাদ সিকদার বাড়ির কৃতি সন্তান নিউ ঢাকা ইসলামিয়া হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ শাহিন শিকদার।

অনুষ্ঠানে শাহীন শিকদার বলেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার যে সকল ব্যক্তিরা গাজীপুরে বসবাস করেন তাদের মধ্যে একটি ঐক্য সংঘটিত করতে এই সংগঠনের নিরলস চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, তিনি আরো বলেন, এই সংগঠনের উদ্দেশ্য গাজীপুরে বসবাসকারী বাকেরগঞ্জবাসির বিভিন্ন সমস্যায় একে অপরের সহযোগিতার মধ্য দিয়ে একটি সম্প্রীতি ও ভালোবাসা তৈরির লক্ষে স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন গাজীপুররস্থ বাকেরগঞ্জ ঐক্যপরিষদের মূল লক্ষ্য।

]]>
বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণের চ্যালেঞ্জ ও সমাধান https://ucchakontha.com/archives/33441 Mon, 24 Mar 2025 13:00:56 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33441 বিশেষ প্রতিনিধি: মুস্তাফা কামাল

প্লাস্টিক দূষণ একটি বিস্তৃত পরিবেশগত সমস্যা, যা বিশ্বব্যাপী বাস্তুতন্ত্র, মানব স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। বাংলাদেশে এ চ্যালেঞ্জটি বর্তমানে পৌঁছেছে উদ্বেগজনক পর্যায়ে, যা শহর ও গ্রামীণ উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেশে দ্রুত নগরায়ণের পাশাপাশি বাড়ছে জনসংখ্যা। কিন্তু সে তুলনায় অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; গড়ে উঠছে না পরিকল্পিত পরিকাঠামো। এ অবস্থায় প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলা হয়ে ওঠেছে অত্যন্ত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার।
প্লাস্টিক বর্জ্যের একটি বড় অংশ ভাগাড়, জলাশয় ও নদীতে ফেলা হয়। থ্রি আর কৌশল তথা রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল বা ব্যবহার হ্রাস, বারবার ব্যবহার ও নতুন করে অন্য কিছু তৈরি করার কৌশল অবলম্বন করে প্লাস্টিকের চক্রাকার ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করা সম্ভব।
ঢাকার মোট প্লাস্টিক বর্জ্যের মাত্র ৩৭.২ শতাংশ রিসাইকেল বা অন্য কাজে লাগানো হয়। বাংলাদেশের তুলনায় ইউরোপের দেশগুলোতে মাথাপিছু প্লাস্টিক ব্যবহারের গড় ১০০ কেজির বেশি। কিন্তু তারপরও প্লাস্টিক বর্জ্যের অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ এখন শীর্ষ প্লাস্টিক-দূষিত দেশগুলোর অন্যতম।

গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে বার্ষিক মাথাপিছু প্লাস্টিক ব্যবহার ২০০৫ সালের ৩ কেজি থেকে ২০২০ সালে তিনগুণ বেড়ে ৯ কেজি হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারিকালে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বাড়ায় এর দূষণ আরও বেড়েছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, ঢাকায় বার্ষিক মাথাপিছু প্লাস্টিক ব্যবহার শহরাঞ্চলের জাতীয় গড় থেকে তিনগুণেরও বেশি, যা বর্তমানে ২২.২৫ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়, যা পুরো বাংলাদেশে উৎপন্ন বর্জ্যের ১০ শতাংশ।

সমস্যার মাত্রা কতটা
১৬ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্যাপক চাপের সম্মুখীন। দেশে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে, যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নদী, খাল এবং বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ছে।

এ সমস্যায় বড় ভূমিকা রাখছে রাজধানী শহর ঢাকা। কারণ এর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং শিল্প কার্যক্রম একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন করছে।

প্লাস্টিকের পরিবেশগত প্রভাব
প্লাস্টিক দূষণের পরিবেশগত পরিণাম মারাত্মক। বুড়িগঙ্গা ও যমুনা নদীসহ বাংলাদেশের নদ-নদী ও জলাশয় প্লাস্টিকে ব্যাপকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে।

এ দূষণ শুধুমাত্র জলজ জীবনের ক্ষতি করছে না, মাছ ধরা ও কৃষিকাজের জন্য এ জলাশয়ের ওপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়ের জীবিকাকেও ব্যাহত করছে। সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র বিশেষ ঝুঁকির মুখে। প্লাস্টিক বর্জ্য সামুদ্রিক প্রাণীদের মৃত্যু এবং প্রবাল প্রাচীরের অবক্ষয় ঘটাচ্ছে।

মানব স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ
মানব স্বাস্থ্যের ওপর প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব গভীর। যেখানে-সেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা এবং পোড়ানোর ফলে বাতাসে বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়, যা শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে।

বড় প্লাস্টিকের জিনিসগুলো ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরি হয়, যা পানীয় জলের উৎসগুলোতে পাওয়া গেছে। এটি মানব শরীরে জমা হয় এবং স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।

সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব
প্লাস্টিক দূষণের উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক প্রভাবও রয়েছে। পর্যটন শিল্প দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যাবশ্যক। কিন্তু সৈকত ও পর্যটন স্পটগুলো প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে ভরে যাওয়ায় এ শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদী ও জলাশয়ের দূষণের কারণে মাছের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। ফলে মৎস শিল্প চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, যা লাখ লাখ মানুষের জীবিকাকে প্রভাবিত করছে।

সরকারি উদ্যোগ ও নীতি
পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ সরকার প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০০২ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করার লক্ষ্যে এটা ছিল একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। যদিও আইনটির প্রয়োগে বেশ অসঙ্গতি রয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞার প্রভাবও সীমিত।

সরকার প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করার জন্য বেশকিছু নিয়মও চালু করেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ২০১০ সালে চালু করা হয় ন্যাশনাল থ্রি আর (রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল) কৌশল, যার লক্ষ্য বর্জ্য উৎপাদন কমানো এবং পুনর্ব্যবহার পদ্ধতির উন্নত করা।

এছাড়া, বাংলাদেশের গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

তৃণমূল আন্দোলন ও সামাজিক উদ্যোগ
সরকারি প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অসংখ্য তৃণমূল আন্দোলন এবং সামাজিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এবং সুশীল সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা এবং প্লাস্টিকের টেকসই বিকল্প প্রচারে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

‘ক্লিন কক্সবাজার’ অভিযান এবং ‘প্লাস্টিক মুক্ত নদী’ প্রকল্পের মতো উদ্যোগগুলো মানুষের উল্লেখযোগ্য মনোযোগ আকর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করেছে।

চ্যালেঞ্জ ও সামনে এগোনোর পথ
এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ প্লাস্টিক দূষণের কার্যকর ব্যবস্থাপনাকে বাধাগ্রস্ত করছে। বিদ্যমান আইনের দুর্বল প্রয়োগ, জনসচেতনতার অভাব এবং বর্জ্য সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহারের জন্য অপর্যাপ্ত অবকাঠামো প্রধান বাধা। এ চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে একটি বহুমুখী পদ্ধতি প্রয়োজন।

আইনের প্রয়োগ জোরদার
প্লাস্টিক নিষেধাজ্ঞা এবং নিয়ন্ত্রণ আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রয়োজন দৃঢ় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা এবং আইন অমান্যকারীদের জন্য জরিমানা।

টেকসই বিকল্পের প্রচার
প্লাস্টিকের পরিবেশ-বান্ধব বিকল্প যেমন পাটের ব্যাগ ও সহজেই পচনশীল প্যাকেজিং ব্যবহারে উৎসাহিতকরণ প্লাস্টিক বর্জ্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অবকাঠামোর উন্নয়ন
আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা যেমন — রিসাইক্লিং বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা এবং বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরির প্ল্যান্টের মতো খাতে বিনিয়োগ করা প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য অপরিহার্য।

জনসচেতনতা ও শিক্ষণ
প্লাস্টিক দূষণের পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার বিষয়টি আচরণগত পরিবর্তন আনতে পারে এবং যথাযথ বা নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলার চর্চাকে উৎসাহিত করতে পারে।

সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব
সরকার, শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের দায়ীত্বশীলদের কাজে লাগানো প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় একটি সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে।

বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপের দাবি রাখে। যদিও নীতিগত পদক্ষেপ এবং সমাজের নানা উদ্যোগের মাধ্যমে এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

তবে পরিবেশ, মানব স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য আরও অনেক কিছু করা দরকার। একটি সামগ্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি অবলম্বন করে বাংলাদেশ একটি পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও আরও টেকসই ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করতে পারে।

]]>
বেগম জিয়ার সুস্থতা কামনায় নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের ইফতার কর্মসূচি পালিত https://ucchakontha.com/archives/33438 Mon, 24 Mar 2025 08:43:02 +0000 https://ucchakontha.com/?p=33438 বিশেষ প্রতিনিধি: মোঃ রুবেল আহমেদ

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুর্থানে নিহত ও আহতদের স্মরনে ঢাকা মহানগর পূর্বের অন্তগর্ত নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও পথচারীদের ইফতার বিতরন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বাদ আসর মিলাদ শরীফ পাঠ ও ধানমন্ডি ৩২ নং সড়কে নানা শ্রেনীর মানুষ, রোজাদার ও দুস্থদের ইফতার বিতরনের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে বেগম জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি ও আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার নিরাপদে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া আবেদন জানান।
নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ অডিটোরিয়ামে কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক মোঃ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো : রহিমের সঞ্চালনায় সাধারন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে বক্তারা আগামীতে সুন্দর দেশ ও স্বনির্ভর জাতি গঠনের জন্য সুষ্ঠধারার ছাত্ররাজনীতি ও ক্যাম্পাসে সকলের নিরাপত্তা এবং সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিতে গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা রোমান খান, ছাত্রনেতা তামজিদ হোছাইন, শাওন পাটোয়ারী, আল-আমিন,নয়ন ইসলাম সহ কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

]]>