কুমিল্লা বীর চন্দ্রনগর গণপাঠাগার ও মিলনায়তনটি (টাউন হল) পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষিত হবে, নাকি সেটি ভেঙে আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হবে, সে বিষয়ে গতকাল শনিবার একটি ‘গণশুনানি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চে মতামত দিয়েছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৩৭ ব্যক্তি। তাঁদের সবাই টাউন হল ভেঙে আধুনিক ভবন নির্মাণের পক্ষে মত দেন। বক্তাদের বেশির ভাগই মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা এবং টাউন হলের স্থানে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণকারী সদর আসনের এমপি বাহাউদ্দিন বাহারের সমর্থক।
টাউন হল মাঠে গণশুনানিতে অংশ নিয়ে এমপি বাহার বলেন, ‘টাউন হল আধুনিকায়ন নিয়ে মাঠে নামার পর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। লেখালেখি শুরু হয়েছে। পুরাকীর্তি করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কুমিল্লায় যেমন ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের জন্ম হয়েছে, তেমনি খন্দকার মোশতাকেরও জন্ম হয়েছে। কুমিল্লা টাউন হল পুরাকীর্তি হবে না। নতুন কমপ্লেক্স হবেই।’
বাহার বলেন, ‘অনেকে বলেন টাউন হল আগরতলার মহারাজার সম্পদ। আগরতলার মহারাজা ভূমি দিয়েছেন এক টাকায়। কিন্তু আগরতলার মহারাজা এই বিল্ডিং করে দেননি। টাউন হল ও ক্লাব টিনের ঘরে চলেছে। ১৯৩৩ সালে এটি পুনর্নির্মিত হয়। এটি এখন জরাজীর্ণ দশায়।’
জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীরের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু হয়। টাউন হলটি পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে কি না, সে সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির আহ্বায়ক, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল মান্নান ইলিয়াসও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। শুনানি শুরুর আগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাহারের সমর্থক নেতাকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। এসব মানববন্ধনে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানানো হয়।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল মান্নান ইলিয়াস বলেন, ‘এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। আমরা কমিটির সদস্যরা গণশুনানি শুনলাম, আমাদের আরো প্রক্রিয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে টাউন হলকে পুরাকীর্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, নাকি ভেঙে আধুনিকায়ন করা হবে।’
শুনানিতে মতামত দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান পাখী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার শফিউল আলম বাবুল, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জহিনলি হক দুলাল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি হাসান ইমাম ফটিক, নারী নেত্রী পাপড়ি বসু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল, জেলা পিপি জহিরুল ইসলাম সেলিম, ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন, কুমিল্লা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জামাল নাসের, কাউন্সিলর জমির উদ্দিন খান জম্পি, কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মমিন ফেরদৌস প্রমুখ।