বিতর্কিত ইভ্যালির মতো ‘পঞ্জি’ মডেলে ব্যবসা চালাচ্ছে আরো পাঁচটি ই-কমার্স কম্পানি। এই কম্পানিগুলো হচ্ছে—থলে, শ্রেষ্ঠ, আকাশনিল, আনন্দের বাজার ও কিউকম। এদের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক মূল্য ছাড়, সময়মতো অর্ডার সরবরাহ না করা, ক্রেতার পণ্যমূল্য ফেরত না দেওয়া, ক্রেতাকে মিথ্যা তথ্যে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখানোসহ অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কম্পানিগুলো সম্পর্কে অনুসন্ধান চলছে। এ ছাড়া কর্মকাণ্ড ‘অস্বাভাবিক’ মনে হওয়ায় একটি গোয়েন্দা সংস্থা ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) কাছ থেকে এদের সম্পর্কে তথ্য নিয়েছে।

অভিযুক্ত পাঁচ কম্পানির ওয়েবসাইট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা বিশাল ছাড়ে আগাম টাকা নিয়ে নামিদামি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিকস আইটেম বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। মূলত ইভ্যালির মডেলেই এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার ধরন। ব্যাবসায়িক ভাষায় যাকে ‘ইনসেনটিভ’ মডেল ও ‘গ্রুপ বায়িং’ মডেল বলা হয়। ইনসেনটিভ মডেলে ডিসকাউন্ট অফার দিয়ে পণ্য বিক্রি করা হয়। আর গ্রুপ বায়িং মডেলে ক্রেতার কাছ থেকে প্রি-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা নিয়ে সেটা বাল্ক অর্ডারের মাধ্যমে কম মূল্যে পণ্য কিনে ডেলিভারি দেওয়া হয়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়ায় সেটা বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের সামান্য ঝুঁকিতে উচ্চ প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিনিয়োগ করার প্রলোভন দেখানো হয় ‘পঞ্জি স্কিমে’। স্বল্প সময়ে তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই দ্রুত অর্থ উপার্জনের বিতর্কিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করে মাঠে নেমেছে আরো অনেকে। ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলকে সস্ত্রীক গ্রেপ্তারের পর প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন কয়েকজন উদ্যোক্তা। এই খাত থেকে দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ‘শ্রেষ্ঠ’ ডটকমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অস্বাভাবিক মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে গ্রাহকের টাকা নিচ্ছে। এ ছাড়া ‘থলে’ এক্সওয়াইজেড একই রকম অস্বাভাবিক মূল্যছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করছে। ‘আকাশনিল’ ডটকম সময়মতো গ্রাহকের অর্ডারের বিপরীতে ডেলিভারি দিচ্ছে না।

এদিকে ই-কমার্স প্রতারণায় অভিযুক্ত কিউকমের পেমেন্ট গেটওয়ে বা পরিশোধ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (পিএসও) ফস্টার পেমেন্ট বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান নয়। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। ফস্টারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এরই মধ্যে ফ্রিজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিএফআইইউ। গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত করা হয়। মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা গেছে, প্রতারণার দায়ে গত রবিবার কিউকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অস্বাভাবিক ছাড়ে পণ্য বিক্রির নামে অর্থ সংগ্রহসহ বিভিন্ন অভিযোগে এর আগে গত জুনে যে ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকগুলো কার্ড লেনদেন স্থগিত করে তার মধ্যে কিউকম অন্যতম। ফস্টার পেমেন্ট লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করলেও এখনো তা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। সিআইডির অনুরোধে সম্প্রতি তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়।

গ্রাহকদের সঙ্গে ভয়ংকর প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে আরেক ই-কমার্স ‘আনন্দের বাজার’-এর বিরুদ্ধে। তারা রাতের অন্ধকারে গুলশানের জব্বার টাওয়ারের ১৩ তলার কার্যালয় ছেড়ে পালিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে কম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রাহকরা অনেকে সেখানে ভিড় করেন। জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে ব্যবসা শুরু করে ৩০-৪০ শতাংশ ছাড়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটরসাইকেল, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির অর্ডার নিয়েছে আনন্দের বাজার। ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা অমান্য করে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে কিছু গ্রাহকের কাছে পণ্য সরবরাহ করে আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালায় কম্পানিটি। এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির সিইও এ এইচ খন্দকার মিঠুর মোবাইল ফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। ই-ক্যাব বলছে, আনন্দের বাজার অস্বাভাবিক মূল্যছাড় দিয়ে ক্রেতাকে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করেছে।

নতুন পাঁচ কম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ই-ক্যাবের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম শোভন গতকাল বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকে এদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছিলাম। অভিযুক্ত পাঁচ কম্পানির অফারগুলো সন্দেহজনক। তারা ওয়েবসাইটে স্টকের পরিমাণ নেই, ডেলিভারি দিতে গড়িমসি করছিল। এমনকি পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য তারা ব্যাংকে আগাম টাকা ডিপোজিট নিচ্ছিল। এসব দেখে আমাদের কাছ থেকে একটি গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য নিয়েছে।’

অভিযুক্ত পাঁচ কম্পানির গ্রাহক ও লেনদেনের পরিমাণ কত জানতে চাইলে ই-ক্যাবের মহাব্যবস্থাপক বলেন, ‘কম্পানিগুলোর মধ্যে কয়েকটি নতুন, এটা বোঝা মুশকিল। এদের গ্রাহক ও লেনদেন সম্পর্কে জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ৩০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কিছু টাকা পেমেন্ট সিস্টেমে আটকে আছে। নতুন পাঁচটিসহ ২৫টি ই-কমার্স কম্পানির পেমেন্ট গেটওয়েতে প্রায় ২০০০ কোটি টাকা আটকে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকালও আমাদের কাছে শতাধিক গ্রাহক ফোন করে টাকা ফেরত পাওয়ার উপায় জানতে চেয়েছেন।’

প্রতারণার অভিযোগে বহুল আলোচিত ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এবার মামলা দায়ের করা হয়েছে চট্টগ্রামের আদালতে। প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জ মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নুরুল আবছার পারভেজ নামের এক ব্যক্তি। গতকাল বুধবার মামলাটি দায়ের করার পর আদালত এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছে। আসামিরা হলেন ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমান, ভাই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা, ই-অরেঞ্জের কর্মকর্তা আমানুল্লাহ, বীথি আক্তার, জায়েদুল ফিরোজ ও নাজমুল হাসান রাসেল।

বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের ২৭ মে পর থেকে ই-অরেঞ্জ পণ্য সরবরাহের নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করলেও পণ্য সরবরাহ করেনি। এরই মধ্যে ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে গ্রাহকদের জানায়, তারা পণ্য সরবরাহ করবে। কিন্তু এখনো পণ্য সরবরাহ করেনি। এরই মধ্যে বাদী জেনেছেন, ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সেই টাকার মধ্যে বাদী নুরুল আবছার পারভেজ, তাঁর পরিচিত গ্রাহক মোর্শেদ সিকদার ও মাহমুদুল হাসান খান নামের তিনজনের প্রায় ১১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে বিভিন্ন কম্পানির গ্রেপ্তারকৃতরা যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তাতে জানা যায়, অভিযুক্তরা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন। ইভ্যালির আত্মসাতের পরিমাণ ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ই-অরেঞ্জ ২৩২ কোটি টাকা, কিউকম ২৫০ কোটি টাকা, নিরাপদ ডটকম সাত-আট কোটি টাকা, ধামাকা শপিং ১১৭ কোটি টাকা, রিং আইডি (অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, এমএলএম মডেল) ২১২ কোটি টাকা ও এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস (এমএলএম মডেল) ২৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সিরাজগঞ্জ শপিং আত্মসাৎ করেছে ৪৭ কোটি টাকা। এগুলোর বাইরে আরো কয়েকটি ই-কমার্স গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। সেগুলো হলো—আলেশামার্ট, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস ডটকম ডট বিডি।

ই-কমার্স উদ্যোক্তারা বলছেন, গুটিকতক প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স নিয়ে যে প্রতারণা করছে তাতে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু পদক্ষেপ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মের কারণে ই-কমার্স খাতে অগ্রিম টাকা গ্রহণ, ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা নেওয়া ও এসক্রো সিস্টেম (পণ্য ডেলিভারি হওয়ার আগ পর্যন্ত গেটওয়েতে টাকা ব্লক থাকা) চালুর ফলে এই খাতে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর গতকাল বলেন, ‘ইভ্যালিসহ যে ১০টি কম্পানি সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাংক সতর্কতা জারি করে কার্ডে লেনদেন স্থগিত রেখেছিল, এখনো তাদের কেউ কেউ প্রতারণা অব্যাহত রেখেছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। গত কয়েক মাসে আরো কিছু নতুন কম্পানিও গড়ে উঠেছে।’ তিনি বলেন, এসব কম্পানির নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে ই-কমার্স খাতে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। গ্রাহকদেরও অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেছে। তাঁরা বড় ডিসকাউন্ট ছাড়া পণ্যের অর্ডার করতে চান না।

এদিকে নজরদারির বাইরে থাকায় ফেসবুক পেজভিত্তিক এফ-কমার্স খাতের প্রতারণা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। অভিনব কায়দায় কোনো খরচ ছাড়াই শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেসবুক) একটি পেজ আর কিছু পণ্যের ছবি দিয়েই প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকটি চক্র। সম্প্রতি এমন অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ই-ক্যাবের কাছে।

বিতর্কিত এসব ই-কমার্স কম্পানির ব্যাবসায়িক মডেল প্রচলিত ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। তিনি বলেন, ‘আমরা বছরখানেক আগেই সরকারকে তাদের সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে জানিয়েছিলাম। ইভ্যালিসহ আমাদের যেসব সদস্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, আমরা তাদের প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। কিছু প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল যুগে বাস করে অ্যানালগ পদ্ধতিতে প্রতারণা মোকাবেলা করার চেষ্টা করছি। ই-কমার্স খাতে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা মোকাবেলায় আমাদের নজরদারি সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত লোকবল, শক্তিশালী মনিটরিং সিস্টেম নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যে ডিজিটাল কমার্স সেল গঠন করা হয়েছে, সেখানে আলাদা করে লোকবল নিয়োগ করা হয়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান গতকাল বলেন, ‘আমরা ৯টি কম্পানির অপারেশন ও আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য চেয়েছিলাম, তা খুব শিগগিরই পাব বলে আশা করছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত নতুন পাঁচ কম্পানিকেও আমরা নজরদারিতে রেখেছি। আর ই-অরেঞ্জ ও ইভ্যালির মতো যেসব কম্পানির বিরুদ্ধে যেহেতু মামলা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমরা আদালতের আদেশের অপেক্ষায় আছি।’

ই-ক্যাবের তথ্যানুযায়ী ২০১৬ সালে ই-কমার্সের ব্যবসা ছিল ৫৬০ কোটি টাকার। এ বছর ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হয়। মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে দেশের শীর্ষ ২৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে লেনদেন হয়েছে ছয় হাজার ৭০০ কোটি টাকার। আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে ওই ২৫টি ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছে ৪৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে পণ্য ডেলিভারি হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে ২০৪ কোটি টাকা ছাড় করেছে। এখনো ২৮৭ কোটি টাকা গেটওয়েতে আছে।

জানা যায়, এখন ই-ক্যাবের সদস্য এক হাজার ৬২০টি প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে পাঁচ হাজারেরও বেশি ই-কমার্স সাইট রয়েছে বলে ধারণা ই-ক্যাবের। ফেসবুক পেজভিত্তিক ই-কমার্স ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তার সংখ্যা দুই লাখের মতো।

ই-ক্যাব সাম্প্রতিক স্ক্যামের কারণে এখন পর্যন্ত আটটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে। এগুলো হলো ই-অরেঞ্জ, গ্রিনবাংলা ই-কমার্স লিমিটেড, এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড অ্যাগ্রো ফুড অ্যান্ড কনজিউমার লিমিটেড, টোয়েন্টিফোর টিকেটি ডটকম, ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপ ও গ্লিটার্স আরএসটি ওয়ার্ল্ড।