করোনার বড় আঘাত রাজস্ব আদায়ে

কাটছাঁট হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ২৫ হাজার কোটি টাকা

নভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কায় দেশের অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা। এবার সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে রাজস্ব আদায়ে। এ কারণে চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে ২২ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। আর সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কাটছাঁট হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। করোনা পরিস্থিতিতে এর আকার ২২ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে পাঁচ লাখ ১১ হাজার ৯০ কোটি টাকা করা হয়েছে। মূল বাজেট থেকে এটি ৪.২০ শতাংশ কমানো হয়েছে। গত (২০১৮-১৯) অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ চার লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। ওই অর্থবছরে মূল বাজেটের আকার ছিল চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার পরও গত অর্থবছরে মূল আকারে কাটছাঁট হয়েছিল ২২ হাজার ৩২ কোটি টাকা। অথচ চলতি অর্থবছরে করোনার ধাক্কার পরও প্রায় একই পরিমাণ বাজেট কাটছাঁট করা হয়েছে। মূলত রাজস্ব ঘাটতির কারণে এ পরিমাণ কাটছাঁট করা হয়েছে। যদিও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজেট কাটছাঁট আরো বাড়ানো উচিত ছিল।

বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেট কাটছাঁট করা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেট কাটছাঁট করা হয়েছিল প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যা ছিল ২৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ করোনার ভয়াবহ থাবায়ও সরকার কাটছাঁটের পুরনো পন্থা থেকে সরে আসেনি। সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত আট মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে এ ঘাটতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তাই এখন দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, এ ঘাটতি দাঁড়াবে লাখ কোটি টাকা। তবে সরকার এসব বাস্তবতা জেনেও সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা আট হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে।