বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মরতদের এবার কোনো ঈদ বোনাস দেবে না মালিকপক্ষ। এর মধ্যে আছেন শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। তারা বেতনও পাবেন ৬০ শতাংশ। তবে যারা হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী-তারা পুরো বেতনই পাবেন। করোনাভাইরাসের মহামারিতে ব্যবসায়ীক সংকটকে সামনে এনে মালিকেরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ২ মে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) কার্য নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিপিএমসিএর সাধারণ সম্পাদক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এবং সংগঠনের সভাপতি এম এ মুবিন খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের সকল বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালককে এ চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।
বিপিএমসিএর চিঠিতে বলা হয়, এপ্রিল মাসের বেতন যা মে মাসে দেওয়ার কথা তা সকল অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকরা মোট বেতনের ৬০ শতাংশ পাবেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সকল কর্মচারীরা তাদের শতভাগ বেতন পাবেন। কলেজ স্টাফ যারা অনুপস্থিত তারাও ৬০ শতাংশ বেতন পাবেন।
তবে যেসব চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন তারা পুরো বেতনই পাবেন।
চিঠিকে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মালিক পক্ষকে এই অনুযায়ী বেতন দেওয়ার জন্য বলা হয়।
বোনাস না দেওয়া এবং বেতন কর্তনের বিষয়টিকে খুবই অনৈতিক বলে মনে করেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেককে যার যার প্রাপ্য বেতন এবং বোনাস দেওয়া উচিত। এটা তো ব্যবসা। ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি সবই আছে। যারা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কাজ করেন তাদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।’
দুদকের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি মালিকপক্ষ মনে করেন যে করোনার কারণে তাদের ক্ষতি হচ্ছে তাহলে তারা সরকারের কাছে সাহায্য চাইতে পারে। সরকার সারা বছরের লাভক্ষতি হিসাব করে দেখে যে সত্যি তারা ক্ষতিগ্রস্ত. তাহলে অন্যান্য খাতের মতো সাশ্রয়ী সুদে ঋণ দিতে পারে বা অন্যকোনো সাহায্য দিতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকদের বেতন কর্তন করবেন বা বোনাস দেবেন না, এটা কোনোভাবেই নৈতিক বলে আমরা মনে করি না।’