বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালের অনলাইন ক্লাসে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেই নেওয়া যাবে পরীক্ষা। এ ছাড়া আগামী মাস থেকে অনলাইনে ভর্তিও করা যাবে। এসব বিধান রেখেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস, পরীক্ষা ও ভর্তির গাইডলাইন প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
আজ বৃহস্পতিবার কমিশনের ওয়েবসাইটে এই গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়। এর ফলে করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ ও ভর্তিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো বাধা থাকল না। তবে গাইডলাইনে দুটি বিকল্প প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ইউজিসিকে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেকোনো একটি পদ্ধতিতে তাদের কার্যক্রম অব্যহত রাখতে পারবে।
প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়, চলতি সেমিস্টারের কোর্সসমূহের অসমাপ্ত পাঠ্যসূচির উপর অনলাইনে ক্লাস চলমান থাকবে। তবে ল্যাবরেটরিভিত্তিক সকল কোর্সের ব্যবহারিক ক্লাস করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর শ্রেণিকক্ষে সম্পন্ন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর চলমান নিয়ম অনুযায়ী গ্রহণ করবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়, স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব সক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের উপযোগী ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস পরিচালনা করবে। চলমান সেমিস্টারের অসমাপ্ত প্রায় ৩০ শতাংশের মতো পাঠ্যসূচি সম্পন্ন হয়ে গেলে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। তবে চলমান সেমিস্টারের বিভিন্ন বিষয়ের আগের ক্লাস উপস্থিতি, পারফর্ম্যান্স, ক্লাস টেস্ট এরং মিডটার্ম পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করতে হবে। একইসঙ্গে অনলাইনে পঠিত অংশের উপর অ্যাসাইনমেন্ট, কেইস স্টাডি, ভাইভা, ভার্চুয়ুাল প্রেজেন্টেশনের নিয়ে মূল্যায়ন সম্পন্ন করে ফল প্রকাশ করা যাবে। তবে ব্যবহারিক পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর ক্লাসে নিতে হবে।
উভয় প্রস্তাবের যেকোনো একটি গ্রহণ করতে হলে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমপক্ষে ৬০ শতাংশ হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে পদ্ধতি গ্রহণ করবে তা লিখিতভাবে আগামী ১৭ মের মধ্যে ইউজিসিকে জানাতে হবে। আর যারা এখনও অনলাইনে ক্লাস শুরু করেনি বা এখনও করতে চান না তারা কোনো প্রক্রিয়ায় চলমান সেমিস্টার শেষ করতে তাও আগামী ১৭ মের মধ্যে লিখিতভাবে ইউজিসিকে জানাতে হবে।
ভর্তির ব্যাপারে গাইডলাইনে বলা হয়, ১ জুন থেকে অনলাইনে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। চলমান সেমিস্টার অধ্যয়নরতরা পরবর্তী সেমিস্টারের কোর্স রেজিস্ট্রেশন ও ক্লাস করার সুযোগ পাবে। পরবর্তী সেমিস্টারের ক্লাস আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হবে। করোনা পরিস্থিতি অব্যহত থাকলে ওই সেমিস্টারের ক্লাসও অনলাইনে নেওয়া যাবে।
এ ছাড়াও বিশ্বিবিদ্যালয়গুলোর প্রতি ১৪টি নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেখানে টিউশন ফি আদায়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিক আচরন করা; অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ, হ্রাস ও ইনস্টলমেন্টে প্রদানের সুযোগ রাখা; শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গত ৩০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা ও ভর্তির ব্যাপারে সকলে সম্মত হয়েছিলেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই এ ব্যাপারে বিস্তারিত গাইডলাইন প্রকাশ করলো ইউজিসি। এতে সব বিশ্ববিদ্যালয় একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে থেকে করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাক্রম পরিচালনা করতে পারবে।