করোনাভাইরাসের কারণে রোগীর শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বেঁধে বাড়াছে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীর ধমনী-শিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। ফলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এক বা একাধিক শিরার গভীরে রক্ত জমাট বাঁধলে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রেও মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়। যা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠিলে দেয়।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (মেডিসিন) ড. শুদ্ধসত্ত্ব চট্টপাধ্যায় বলেন, এই সমস্যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় পালমোনারি এম্বোলিজম বলা হয়। একইভাবে পায়ে রক্ত জমাট বাঁধলে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিসের সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো রোগীর মধ্যে কোনোরকম উপসর্গ দেখা নাও দিতে পারে!
তিনি জানান, করোনাভাইরাস হলো আরএনএ ভাইরাস যা মানুষের শরীরে ‘ভাইরাল লোড’ বাড়িয়ে দ্রুত সংক্রমিত ও প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অতিসক্রিয় করে দেয়। এ সময় আক্রান্তের শরীরের শিরা-ধমনীর বিভিন্ন অংশে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। ফলে ফুসফুস, হৃদযন্ত্র এমনকি মস্তিষ্কেও রক্তের শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে।
করোনা আক্রান্ত বয়স্ক রোগীর ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়েই দেখা যাচ্ছে তাদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা মারাত্মক শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু হচ্ছে। এ ধরনের রোগীকে ভেন্টিলেশনে রেখেও বাঁচানো যাচ্ছে না।
যেভাবে বুঝবেন শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করেছে-
ড. চট্টপাধ্যায় বলেন, এই সমস্যা বোঝার জন্য রোগীর রক্তের ডি-ডাইমার পরীক্ষা করানো হয়। এই পরীক্ষা থেকেই বোঝো যাবে সমস্যা রয়েছে কিনা।
কীভাবে রোগীকে বাঁচানো যেতে পারে? ড. চট্টপাধ্যায় বলেন, এই সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে তখন অ্যান্টি-কোয়াগুলেশনের ওষুধ দেয়া হয়। এই ওষুধের প্রয়োগে আক্রান্তের শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না।
তিনি বলেন, তবে এই অ্যান্টি-কোয়াগুলেশনের ওষুধ সেই সব রোগীকেই দেয়া যেতে পারে যাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। রোগী ভেন্টিলেশনে চলে গেলে এসব ওষুধের তেমন কোনো কাজে দেয় না।