করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অনেক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে গেলেও কোয়ান্টাম ল্যাবের কর্মীরা মানবতার এই চরম মুহূর্তে ল্যাবের সমস্ত কার্যক্রম যথাসাধ্য চালু রেখেছেন। প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে তারা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম ও কোয়ান্টাম ল্যাবের কো-অর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান জানান, করোনাভাইরাসের কারণে রক্তদাতাদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় রক্ত পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট রোগীরা। এ কারণে প্রাপ্তবয়স্ক সচেতন নাগরিকদের রক্তদান করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোয়ান্টাম জানায়, গত এক মাসে (১৪ এপ্রিল থেকে ১৩ মে) বিভিন্ন হাসপাতাল ভর্তি রোগীদের চার হাজার ৫৭৪ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করেছে কোয়ান্টাম ল্যাব।
গত বছর এই সময়ে ৮ হাজার ৫৮৫ ইউনিট রক্ত সরবরাহ করেছিল জানিয়ে এতে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মাসিক সরবরাহ কমে গেছে ৪ হাজার ১১ ইউনিট। ফলে আমরা ৪ হাজারেরও বেশি, অর্থাৎ ৪৭ শতাংশ রোগী বা রক্তগ্রহীতাকে রক্ত বা রক্ত উপাদান সরবরাহ করতে সম্ভব হয়নি।’
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাদের উপস্থিতি কমে গেছে। ফলে গত এক মাসে রক্ত সংগ্রহ হয়েছে তিন হাজার ১৩৫ ব্যাগ। যদিও গত বছর এই সময়ে চার হাজার ৫৮৯ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল। দেশের অন্যতম বড় রক্ত সংগ্রহ ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, গত এক মাসে তাদের রক্ত সংগ্রহ প্রায় ৩২ শতাংশ কমেছে।
রক্তদাতাদের কোয়ান্টামের স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের ‘প্রাণ’ উল্লেখ করে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রক্তদাতারা যদি স্বেচ্ছায় রক্ত দান না করেন, তাহলে অনেক থ্যালাসেমিয়া রোগী, সন্তানসম্ভবা নারী কিংবা অপারেশনের রোগীকে আমরা প্রয়োজনের মুহূর্তে রক্ত সরবরাহ করতে পারব না।
‘তাই স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি এবং সকল সুস্থ সবল প্রাপ্তবয়স্ক সচেতন নাগরিকদের প্রতি আমরা বিনীত আহ্বান জানাই, এই দুঃসময়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান করে হাজারো মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ভূমিকা রাখুন। মানবিকতার প্রমাণ রাখুন।’
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে, গণপরিবন বন্ধ করে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেয় সরকার। সাধারণ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত বাড়লেও কিছু বিধি-নিষেধ তোলা হয়েছে।