শাওন আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি

কোভিড-১৯ মহামারীর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ঈদ উপলক্ষে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার।

বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে এসব সুবিধাভোগীদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে নগদ অর্থ পাঠানোর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার’ হিসেবে অসহায় মানুষদের এই টাকা দেওয়া হচ্ছে।

এই ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে ১৭ লাখ পরিবারের কাছে টাকা পৌঁছে দিচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’।

প্রথম দিনেই দুই লাখ পরিবারের কাছে এই টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, “এটা তো আসলে ‘প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার’; সে কারণে ঈদের আগেই সবাই যেনো টাকা পায় সে ব্যবস্থা করতে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সাত দিনের মধ্যে সব টাকা পৌঁছে দেবো।”

“অর্থমন্ত্রণালয় থেকে আমাদের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সেই তালিকা অনুযায়ী এমএফএস অ্যাকাউন্ট খুলে আমরা সুবিধাভোগীদের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছি।”

এদিকে এই টাকা যেনো সবাই ঈদের আগেই পায় সেজন্য চারটি মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।বৃহস্পতিবার এই নির্দেশনা দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী, মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এই নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় থেকে সরবরাহ করা সুবিধাভোগীর তালিকা মোতাবেক জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর (এনআইডি) যাচাই করে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে নগদ সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য এজেন্ট পয়েন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

এই কর্মসূচির জন্য সরকার ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতি পরিবারে চারজন সদস্য ধরে এই নগদ সহায়তার সুবিধা পাবে প্রায় দুই কোটি মানুষ।

এই সহায়তা দিতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষক এবং সমাজের ‘গণ্যমান্য ব্যক্তিদের’ সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করেছে।

রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, দোকান কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোল্ট্রি খামারের শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক ও হকারসহ নিম্ন আয়ের নানা পেশার মানুষের নাম এসেছে এই তালিকায়।

তালিকাভুক্তদের কাছে নগদ ছাড়াও বিকাশ, রকেট ও শিওরক্যাশের মাধ্যমে সরাসরি চলে যাবে এই টাকা, ফলে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না তাদের।

টাকা পাঠানোর খরচও সরকার বহন করবে। ওই টাকা ক্যাশআউট করতে সুবিধাভোগীদের কোনো খরচ দিতে হবে না।

নগদের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি পরিবারের কাছে এই টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে; ১৭ লাখ। বিকাশের মাধ্যমে ১৫ লাখ, রকেটের মাধ্যমে ১০ লাখ এবং শিওরক্যাশের মাধ্যমে ৮ লাখ পরিবারের কাছে টাকা চলে যাবে।