প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে কাউন্সিল গঠন

বাঙালি জাতির প্রতিটি মহৎ, শুভ ও কল্যাণকর অর্জনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত ও আধুনিক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে প্রিয় বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার (২৩ ‍জুন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সোমবার (২২ জুন) দেওয়া ওই বাণীতে তিনি আরও বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। দেশের বিভিন্ন খাতের জন্য প্রায় ১ লাখ ১ হাজার ১১৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

দলের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের অগণিত নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি স্মরণ করেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক সামসুল হকসহ অন্যান্য নেতাদের। তিনি বলেন, ‘আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে। আমি স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাসহ স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে শহীদ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ গণমানুষের এক সুবৃহৎ সংগঠনে পরিণত হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের গড়ে ওঠার ইতিহাস জানিয়ে বাঙালি জাতির বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এই দলের অবদান বাণীতে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বায়ান্নর ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, বাষট্টির আইয়ুবের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, চৌষট্টির দাঙ্গার পর সাম্পদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ষেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থানসহ সব আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। এ দেশের মাটি ও মানুষের দল হিসেবে স্বাধীনতা সংগ্রামেও নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতির জনকের নেতৃত্বে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।

তবে পঁচাত্তরে ফের ঘাতকেরা জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তথা জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যাসহ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এবং স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি। এরপর ১৯৯৬ সালে ফের আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা, ২০০৮ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সব অর্জনের ইতিহাসও তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বছরব্যাপী জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে আমরা মুজিবর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জনসমাগম না করে টেলিভিশনের মাধ্যমে সম্প্রচার করেছি। তবে মুজিববর্ষে গৃহহীনদের ঘর করে দেওয়া হবে। এ দেশে কেউ গরীব, গৃহহীন থাকবে না। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করব।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে, গণজমায়েত না করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বাসস।