বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে খাবার হোটেল, স্টেশনের স্নাকসবার ও চায়ের দোকানে দিন ভিত্তিক চাকরি করে দিন কাটতো মনির, জাহাঙ্গীর ও কৃষ্ণের। করোনা তাঁদের বানিয়েছে শাক বিক্রেতা। তারা বলছেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেঁচে থাকার উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই পথ।

জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল বগুড়া জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপর বন্ধ হয়ে যায় বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনসহ পৌর শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রায় দুই মাস এসব বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মচারী সকলেই। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়ে শতশত মানুষ। দীর্ঘ সময় এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চাকরি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন অনেক কর্মচারী। জীবিকার তাগিদে অনেকে বেছে নেন অন্য পেশা। তেমনি সান্তাহারের মনির হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও শ্রী কৃষ্ণসহ ৮ জন ব্যাক্তি তাঁদের চাকরি হারিয়ে এক প্রকার বাধ্য হয়ে চামঘাস বেচে সংসার চালাচ্ছেন।

তাঁরা জানান, ৬৬ দিন পর স্বল্প পরিসরে ট্রেন চলাচল ও দোকানপাট খোলা শুরু হয়। কিন্তু বাজারে লোক সমাগম ও আগের মতো স্টেশনে ট্রেন যাত্রী না থাকায় দোকানে বেচা বিক্রি আগের মতো নেই। তাই মালিকরা আমাদের আর নিচ্ছেন না। একারণে সংসার চালাতে আত্রাইয়ের বান্দাইখাড়া, মান্দার ফেড়িঘাট-জলছত্রসহ বিভিন্ন এলাকার নদীর পাড় ও জঙ্গলের মধ্যে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চামঘাস তুলে নিয়ে আসি। দিন ভর চামঘাস তুলে মাঝ রাত পর্যন্ত সান্তাহার স্টেশনের ১নম্বর প্লাটফরমে বসে আমরা যৌথভাবে সেগুলো পরিষ্কার করে বাজারজাত করি। পরের দিন জয়পুরহাট, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব বিক্রি করা হয়। এসব চামঘাস বেচে যা অর্থ উপার্জন হয় তা দিয়ে কোনো মতো পরিবার নিয়ে খেয়ে পড়ে দিন কাটছে।

তাঁরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হলে তারা আবারো চাকরিতে ফিরে যেতে পারবেন। নতুবা চামঘাসকে আকড়ে জীবন-জীবিকা চালানো ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।