এন্ড্রু কিশোর

না ফেরার দেশে চলে গেলেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এ প্লে-ব্যাক সম্রাট। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তাঁর মৃত্যুতে দেশের সংগীত অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এন্ড্রু কিশোরের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুর আগে এন্ড্রু কিশোর বলে গিয়েছেন তাকে যেনো মায়ের কবরের পাশেই যেন সমাহিত করা হয়। সেই ইচ্ছানুযায়ী মায়ের পাশেই তাকে সমাহিত করা হবে। তবে কখন সেটা এখনো ঠিক করা হয়নি।

এন্ড্রু কিশোরের বোন জামাই ডা. প্যাট্টিক বিপুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি দিলেও ক্যানসার দূর হয়নি। চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাই এন্ড্রু কিশোরের ইচ্ছায় তাকে দেশে আনা হয়। এরপর থেকে বোনের বাসায় ছিলেন।

৯ মাস পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন এন্ড্রু কিশোর ১১ জুন রাত আড়াইটার একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেন। তারপর ঢাকার বাসায় বেশকিছু দিন অবস্থান করে শরীরের অবস্থা বিবেচনায় ও কোলাহলমুক্ত থাকতে তিনি গ্রামের বাড়ি রাজশাহী চলে যান।

গেল বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ক্যান্সারে (নন-হজকিন লিম্ফোমা) আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন এন্ড্রু কিশোর।

১৯৭৭ সালে মেইল ট্রেন চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মাধ্যমে তাঁর প্লেব্যাক যাত্রা শুরু। যদিও ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া প্রতীজ্ঞা সিনেমার ‘এক চোর যায় চলে’ গানের মাধ্যমে প্রথম জনপ্রিয়তা লাভ করেন এন্ড্রু কিশোর। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। বাংলা চলচ্চিত্রে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে প্লেব্যাক করে। পেয়েছেন ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

এন্ড্রু কিশোর সংসার জীবনে স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু এবং সংজ্ঞা (২৬) নামে এক মেয়ে ও সপ্তক (২৪) নামে এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন। তার দুজনই বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে পড়াশোনা করছেন। সংজ্ঞার পড়াশোনা প্রায় শেষের দিকে। সন্তানরা দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন।