পবিত্র ঈদুল আযাহাকে সামনে রেখে বরগুনার আমতলীতে জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির গরুর হাটগুলো। তবে ক্রেতা সমাগম কম থাকায় কোরবানির গরুর বেচাকেনাও কম।

ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহখানেক সময় হাতে থাকায় এখনই তারা কোরবানির জন্য গরু ক্রয় করছেন না। কারণ হিসেবে জানা যায়, বর্তমানে বিক্রেতারা গরুর দাম একটু বেশী চাইছেন। এ ছাড়া আগেই গরু কিনে রাখা এবং লালন পালন করা অনেকেই ঝামেলা মনে করেন। ফলে ঈদের দুই থেকে তিন পূর্বে গরু কিনতে আগ্রহী অনেক ক্রেতা। বাজারে বিদেশি গরুর চাইতে দেশী গরুর কদর বেশি। এ বছর বাজারগুলোতে বিদেশি গরু তেমন একটা চোঁখেও পড়ছে না। 

ক্রেতা হারুন অর রশিদ বলেন, এখন বিক্রেতারা গরুর দাম একটু বেশী চাচ্ছেন। একারণে কোরবানি দেওয়ার জন্য এখনো গরু কিনিনি। হাতে সপ্তাহ খানেক সময় আছে তাই ভাবছি কোরবানির দুই তিন দিন পূর্বে গরু কিনবো। তখন গরুর দামও একটু কমবে।

উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরুর হাট- বাজার আমতলীসহ গাজীপুর, চুনাখালী, কলাগাছিয়া, গোজখালী, তালুকদার বাজার, খুড়িয়ার খেয়াঘাট, অফিস বাজার, বান্দ্রা ও আড়পাঙ্গাশিয়া ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন খামারিরা কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য গরু,মহিষ, ছাগল, ভেড়া নিয়ে এসেছেন।

উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের খামারি মনিরুল ইসলাম জানান, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে তিনি ৫টি গরু বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করেছেন। বাজারে দাম কম থাকায় এখনো গরু বিক্রি করতে পারিনি। কোরবানির পূর্বেই গাজীপুর হাটসহ কাছাকাছি যে হাটগুলো আছে সেখানে বিক্রির জন্য নিয়ে যাবো। দেখি বিক্রি করতে পাড়ি কি না। 

প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ছোট বড় মিলে ৪২৭৬টি গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ রয়েছে। এ বছর কোরবানি ঈদে ৩ হাজার ২৭৯টি পশু প্রয়োজন। চাহিদা মিটিয়ে বাকী পশুগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. আতিকুর রহমান বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ কর্তৃক উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারের জন্য মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। কোরবানির জন্য কেনা গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা- নিরীক্ষা করছেন এবং সকলকে স্বাস্থ্যসম্মত পশু ক্রয়ের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।

উপজেলার তালুকদার বাজার গরুর হাটের পরিচালক মো. মহিবউল্লাহ কিরন বলেন, হাটে বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত পশু থাকলেও বিক্রেতারা বেশী দাম চাওয়ায় বাজারে তেমন একটা পশু বিক্রি হচ্ছে না।

আমতলী গরু হাটের ইজারাদার ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, আমতলী উপজেলায় যে পরিমান পশু রয়েছে তাতেই কোরবানির চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। করোনার কারণে পশুর দাম গত বছরের চেয়ে তুলনায় কিছুটা কম। 

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহআলম হাওলাদার বলেন, করোনায় সামাজিক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই উপজেলার পশুর বাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে পশু ক্রয়-বিক্রয় করে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। তিনি আরো বলেন, জাল টাকা শনাক্তকরন মেশিনসহ প্রতিটি হাটে সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।