সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কাল রবিবার বসছে জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশন। সকাল ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অধিবেশন শুরু হবে। অধিবেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অধিবেশনের শুরুতেই চলতি সংসদের সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন ও তা নিয়ে আলোচনা হবে। পরে অধিবেশন মুলতবি করা হবে। চলতি অধিবেশনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের কথা রয়েছে। বর্তমানে ১৪টি বিল সংসদে পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে স্বল্প সময়ের এই অধিবেশনে বিলগুলো পাস করা কঠিন হবে। কারণ বিগত দুটি অধিবেশনের মতো এই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হবে। যা সর্বোচ্চ  পাঁচ দিন চলতে পারে।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের ঝুঁকি এড়াতে সংসদ সদস্য ও সংসদ ভবন এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অধিবেশনে দায়িত্ব পালনকারী সবাইকে নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে করোনাভাইরাস নেগেটিভ নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংসদে যোগদানকারী সংসদ সদস্যদেরও করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত আগস্ট মাসেই আটজন সংসদ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। এ পর্যন্ত ৩৫ জন সংসদ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গত ১৩ জুন ও নওগাঁ-৬ আসনের মো. ইসরাফিল আলম ২৭ জুলাই মারা যান। এ ছাড়া সংসদ সচিবালয়ের দুই শতাধিক কর্মকর্ত-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হন।

সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঝুঁকি এড়াতে করোনা টেস্ট ছাড়াও শারীরিকভাবে অসুস্থ ও বয়স্কদের অধিবেশনে যোগ না দিতে বলা হয়েছে। অধিবেশনে এমপিদের উপস্থিতি যাতে কোনোভাবেই তিন অঙ্কে না পৌঁছে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। অধিবেশনের আসনবিন্যাসও গত দুটি অধিবেশনের মতোই থাকছে। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সংসদ সদস্যরা বসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশপাশের বেশ কয়েকটি আসন ফাঁকা রাখা হবে। অংশগ্রহণকারী সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর সবাইকে ডিসইসফেকশন চেম্বার দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। মূল ভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে থার্মাল স্ক্যানারে তাপমাত্রা মেপে নিতে হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণেই কড়াকড়িভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকটা বিবেচনা করা হচ্ছে। বাজেট অধিবেশনের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না। অধিবেশনে সাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

উল্লেখ্য, এর আগে কঠোর সতর্কতার মধ্যে গত ১০ জুন শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশন মাত্র ৯ কার্যদিবসে ৯ জুলাই সমাপ্ত হয়। একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন বসার বাধ্যবাধকতা থাকায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এই অধিবেশন আহ্বান করেন।