বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার বিকাল ৩টার দিকে বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
পরে শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী।
আদালতে আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসির, জিয়া উদ্দিন ও মোস্তফা কাদের।
বিকাল সোয়া ৩টার দিকে পুলিশের গাড়িতে করে মিন্নিকে আদালতে আনা হয়।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এদিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মাইঠা এলাকার নিজ বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ লাইনে আনা হয়।
গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। সকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয় এবং রাতে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
মামলার প্রধান আসামি মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানোর কারণ হিসেবে পুলিশ সুপার আরও বলেন, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ ও অন্যান্য সোর্স থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। তাই রাত ৯টার সময় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যায় জড়িত থাকা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় পুলিশ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার করল। তাকে রিমান্ডে নেয়া হবে কিনা প্রশ্নে পুলিশ সুপার বলেন, মামলার সঠিক তদন্তের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড চাওয়া হবে।
একই সময়ে পুলিশ সুপার জেলা বিশেষ শাখা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ মামলার ১ নম্বর সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং সুদীর্ঘ সময়ে পাওয়া তথ্যাদি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে হত্যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে রাত ৯টায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে মিন্নি সরাসরি সম্পৃক্ত এমন তথ্য দিয়ে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ব্যক্তিগত কারণ ও আক্রোশ থেকে এই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রিফাতের স্ত্রী মিন্নি সরাসরি সম্পৃক্ত। এ জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৩ জুলাই) রাত ৮টার দিকে নিহত রিফাত শরীফের বাবা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন তার ছেলে হত্যার ঘটনায় পুত্রবধূ মিন্নিও জড়িত বলে সন্দেহ করছেন তিনি। সেদিন মিন্নি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমন সন্দেহের পেছনে ১০টি কারণও বলেন তিনি। তার সন্দেহের বিষয়টিকে আমলে নেয় পুলিশ।