কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে শহরের একটি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে আজ রবিবার (৬ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সূত্র জানায়, ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ দেখে দুইজনকে শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা থেকে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। আটকদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আটকের সময় তাদের পরনে ছিল পায়জামা-পানজাবি, মাথায় টুপি। পানজাবির ওপর ছিল মুজিব কোটও।
গত শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যায়ই কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ।
গত নভেম্বর মাসের শুরুতে কুষ্টিয়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিচের দিকে আগেই জাতীয় চার নেতার ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। শহরের মজমপুরের অংশের দিকে নির্মাণাধীন ৭ই মার্চের ভাষণদানরত বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। শুক্রবার রাতে এই ভাস্কর্যের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা জানার পর পুলিশ জেলার সব ভাস্কর্যে নজরদারি শুরু করে। সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ একদল মানুষ শহরের এনএস রোডে জেলা বিএনপির অফিসে হামলা করে ভাঙচুর চালায়। রাত সাড়ে ৭টার দিকে একটি নোহা মাইক্রোবাস থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাঙচুর করা ভাস্কর্যে দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে সেটি ঝিনাইদহের দিকে চলে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। রাত ৯টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ লোক শহরের মজমপুর গেটে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিনের ভাইয়ের মালিকানাধীন এসবি পরিবহনের অফিস ও কাউন্টার ভাঙচুর করে। এ সময় ছবি তুলতে গেলে দুজন সংবাদকর্মী হামলার শিকার হন।