করোনা সনদ ছাড়াই বিদেশ থেকে ৭০ যাত্রী নিয়ে এসেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নির্দেশনা মেনে করোনার আরটি-পিসিআর প্রতিবেদন দেখাতে না পারায় তাঁদের সবাইকে রাজধানীর হজ ক্যাম্প ও দিয়াবাড়ীতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। করোনা সনদ ছাড়া এসব যাত্রীকে উড়োজাহাজে ওঠানোয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বেবিচকের কাছে বাংলাদেশ বিমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে বলে জানা গেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হেলথ ডেস্ক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আকরাম বলেন, গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মোট ৭১ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, তাঁদের মধ্যে ৭০ জনই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে এসেছেন। রিয়াদ থেকে আসা বিমানের বিজি-৪০৪০ ফ্লাইটে ৬৮ জন যাত্রী এসেছেন যথাযথ করোনা সনদ ছাড়া। দোহা থেকে আসা বিমানের ফ্লাইটে দুজনকে পাওয়া যায়, যাঁদের যথাযথ করোনা সনদ ছিল না। এ ছাড়া ওমান থেকে আসা সালাম এয়ারের একটি ফ্লাইটে একজনের করোনা সনদ ছিল না।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান বলেন, ‘বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সার্কুলার যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় আমরা রবিবার তাদের বিরুদ্ধে বেবিচকের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করব।’
আন্তর্জাতিক পথের কোনো যাত্রী যাত্রা শুরুর সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা আগে হাতে পাওয়া ‘করোনা নেগেটিভ’ সনদ ছাড়া বাংলাদেশে ঢুকতে পারবেন না, শুক্রবার মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিট অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর থেকে এমন নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর বিভিন্ন এয়ারলাইনস সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে বেবিচকের সদস্য, ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী এম জিয়াউল কবীর স্বাক্ষরিত নতুন নির্দেশনা পাঠানো হয়। নিয়মানুযায়ী, যাঁদের করোনা নেগেটিভ সনদ থাকবে না তাঁদের বোর্ডিং কার্ড দেওয়ার কথা নয়।
গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পাঁচটি ফ্লাইটে ৬৯২ জন যাত্রী বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা কিছু যাত্রী আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরির বদলে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার প্রতিবেদন নিয়ে এসেছেন কিংবা সনদ না নিয়েই দেশে ফিরেছেন। সনদ যাচাই ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। বিমানের এসব যাত্রী কী পরিস্থিতিতে এসেছেন সে বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশি যাত্রীদের স্বার্থেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস তাঁদের নিয়ে এসেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সভা করেছি। এখানে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আগামীকালই (আজ) আমরা বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে সব এয়ারলাইনসকে জানিয়ে দেব। ভবিষ্যতে আর কোনো এয়ারলাইনস যদি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’