আজ মহান বিজয় দিবস। যাদের হাত ধরে এসেছে বিজয় সেই শহিদদের স্মরণে সাভারের স্মৃতিসৌধে ছুটে গেছেন সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। বুধবার তাই সর্বস্তরের মানুষের জনস্রোত বয়ে চলেছে তিসৌধের দিকে।
১৯৭১ সালের যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। অর্জন করি গাঢ় সবুজের বুকে লাল সূর্য আকা চির গৌরবের দীপ্তিময় পতাকা। অনেক রক্ত আর মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা, আত্মদান অর্জন করেছি স্বাধীনতা, অর্জন করেছি বিজয়।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) দিবসটি উপলক্ষ্যে ভোর থেকেই সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এরপর শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ। এ সময় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব বয়সী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দেওয়া পুষ্পাঞ্জলির ফুলে ফুলে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধের বেদি। করোনা উপেক্ষা করেই লাখ মানুষের ঢল নামে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে। এবার শ্রদ্ধা জানাতে এসে করোনা থেকে মুক্তি ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার প্রত্যয় জানায় সর্বস্তরের মানুষ।
এদিন বিভিন্ন সংগঠনের মধ্য কৃষক লীগ, যুবলীগ, এফবিসিসিআই, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাসদ, বাসদ ও ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব ড্যাব ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
অন্যবছর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান বিজয় দিবসে সাভারে গিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে অন্য অনেক রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির মত এবারের বিজয় দিবসের কর্মসূচিও সীমিত করে আনতে হয়েছে। বিজয় দিবসের দিন জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজ (প্যারেড) এবার হচ্ছে না।
বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। একই সময়ে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভোরে সূর্যোদয়ের ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে। সকাল ৯টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে বিনষ্ট করার যে আশা নিয়ে ঘাতকের দল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তাদের সে স্বপ্ন সত্যি হয়নি। যে স্বপ্ন দেখে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন জাতির পিতার নেতৃত্বে, সে স্বপ্ন নতুন প্রজন্ম তুলে নিয়েছে। তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।