সনি নর্দে, ওয়েডসন আনসেলমে, এমেকা ডার্লিংটনকে নিয়ে একসময় দুর্ধর্ষ আক্রমণভাগ ছিল শেখ জামালের। সেই স্মৃতি ফিরিয়ে এনে এবারও তিন বিদেশি—সলোমন কিং, ওমর জোবে ও সোলায়মান সিল্লাহকে দিয়ে ফরোয়ার্ড লাইন সাজিয়েছে তারা। এই ত্রয়ী জামালকে কত দূর নিয়ে যাবেন, তা দেখার এখনো বাকি। তবে কাল ঝলক দেখা গেছে কিছু। পুলিশের বিপক্ষে ফেডারেশন কাপের প্রথম ম্যাচটি তবু ২-২ গোলে ড্র নিয়ে শেষ করতে হয়েছে তাদের, নিজেদের দোষে। ডিফেন্ডার আরিফুল ইসলাম যে করেছেন আত্মঘাতী গোল।
আগের ম্যাচে আবাহনীর কাছে বিধ্বস্ত হওয়া মোহামেডান তবে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মৌসুমের প্রথম এ আসরে। মুক্তিযোদ্ধাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে সাদা-কালোরা। ড্রয়েও অবশ্য জামাল খুব ভালোভাবেই আছে শেষ আটের পথে। এই ড্রয়ে বরং ‘এ’ গ্রুপ থেকে শেষ আট নিশ্চিত হয়ে গেছে প্রথম ম্যাচে পুলিশকে হারানো শেখ রাসেলের। গ্রুপের শেষ ম্যাচে জামাল এখন রাসেলের সঙ্গে ড্র করলেই তাদের সঙ্গী হবে, সুযোগ থাকছে হারলেও। জামালের বিদেশি ফরোয়ার্ড লাইনের নিচে আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলছেন এশিয়ান কোটায় খেলা ভালিজনব ওতাবেক। মানেই হলো জামালের ডিফেন্স লাইন পুরো দেশিদের নিয়ে গড়া। আরিফ-কেষ্ট কুমারদের সেই ডিফেন্স লাইন ম্যাচের শুরু থেকে ভুগিয়েছে তাদের। দ্বিতীয় মিনিটেই বাল্লো ফামোসা তাঁদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন, গোলরক্ষক মামুন খান সে যাত্রা বাঁচান। কিন্তু ১০ মিনিটে একেবারে ছোট বক্সের সামনে ক্রস পেয়ে গেলে, মোহাম্মদ স্বাধীন সেই সুযোগ নষ্ট করেননি। পিছিয়ে পড়েও জামাল গুছিয়ে উঠতে সময় নেয়। তবে প্রথমার্ধে অন্তত পুলিশকে আর কোনো সুযোগ দেননি আরিফরা। দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি আক্রমাণত্মক চেহারা নিয়ে নামে তারা। সলোমন-ওমর জোবে-সিল্লাহ দারুণ সব মুভ উপহার দেন। পাঁচ মিনিটেই সমতা ফেরান জোবে। সলোমনের কাছ থেকে বাঁ দিকে বল পেয়ে আত্মবিশ্বাসী শটে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ান।
এরপর বারবারই পুলিশ ডিফেন্সে ভীতি ছড়িয়েছেন জামালের বিদেশিরা। ওতাবেক বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে ক্রসবার কাঁপিয়েছেন। ওতাবেকের ক্রসেই আবার জোবের হেড গেছে পোস্ট ঘেঁষে। এই ছন্দটাই নষ্ট হয় আরিফ হাস্যকর ভুলে আত্মঘাতী গোল করে বসলে। বক্সের ভেতর বল মামুন খান গ্রিপে নিতে যাবেন, কিন্তু আরিফ পুলিশের এক ফরোয়ার্ডের মুভে আতঙ্কিত হয়ে তাঁর হাতের সামনে থেকে বলটা ক্লিয়ার করতে গিয়ে জালে জড়িয়ে দিয়েছেন। অন্য প্রান্তে পরের মিনিটেই ওতাবেকের ফ্রি কিকে বক্সের ভেতর বল পেয়ে সলোমন লক্ষ্যভেদ করে ক্ষতিটা পুষিয়েছেন।
মোহামেডান-মুক্তিযোদ্ধা ম্যাচের প্রথম এক ঘণ্টায় অন্তত দুই দলকে আলাদা করা যায়নি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে সরাসরি ফ্রি কিক থেকে গোল করে সাদা-কালোকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হাবিবুর রহমান। ৬৮ মিনিটে সেই গোলই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মুক্তির উজবেক ফরোয়ার্ড আকবর আলী। কিন্তু ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটে ৩ গোল করে ৪-১ গোলের দারুণ এক জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে শন লেনের দল। কর্নার থেকে আতিকুজ্জামান ব্যবধান বাড়ানোর পর নাইজেরিয়ান আবিওলা নুরাত করেছেন জোড়া গোল।