রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনায় ইবরাহীম হোসেন হৃদয় (১৯) প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে জানায়, স্কুল গেটে এক নারীর প্ররোচনায় সে এ কাজ করেছে।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় জানিয়েছে ঘটনায় দিন রেনু স্কুলে প্রবেশ করার সময় গেটে থাকা অন্য এক নারী অভিভাবক তার পরিচয় এবং বাসার ঠিকানা জানতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেনু ওই নারীকে তার নাম-ঠিকানা জানান। সে সময় ওই নারী রেনুকে দেখিয়ে ছেলেধরা বলে চিৎকার করেন।
হৃদয় জানায়, এর মধ্যে রেনুকে স্কুলের একটি কক্ষে বন্দি করা হয়। ছেলেধরার গুজবটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে কয়েকশ মানুষ ভিড় জমায় স্কুলের আশপাশে। এদের মধ্যে উৎসুক জনতা স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে রেনুকে বের করে পিটুনি দেয়। হৃদয়ও তাদের সঙ্গে অংশ নেয়।
হৃদয়ের ভাষ্য, সে স্কুলের পাশে একটি দোকানে সবজি বিক্রি করে। ওই দিন সবজি বিক্রি শেষে সে স্কুলের কাছে দাঁড়িয়েছিল। রেনুকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেখেছিল সে। ঘটনার পর সে (হৃদয়) যখন বুঝতে পারল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করবে তখন নারায়ণগঞ্জে পালিয়ে যায়।
আবদুল বাতেন বলেন, যে নারী ছেলেধরা বলে চিৎকার দিয়ে এ কাজটি করেছে সে পূর্ব পরিচিত কিনা খতিয়ে দেখতে হবে। ঘটনাটি পরিকল্পিত কিনা তা ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বলা যাবে।
এদিকে আজ বুধবার হৃদয়কে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জসিম পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে ইবরাহীম হোসেন হৃদয়কে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগের অবৈধ মাদক উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিম। তার বাড়ি উত্তর বাড্ডার হাজিপাড়ায়। তিনি উত্তর বাড্ডা বাজারে সবজি বিক্রি করতেন। বিভিন্ন ফুটেজ দেখে হৃদয়কে এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।