নিজস্ব প্রতিবেদক

মোহাম্মদ ওমর ফারুক কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা আওয়ামিলীগের পোড় খাওয়া ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের একজন। পারিবারিক ভাবেই পিতার দেখাদেখি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সেই ছোট বেলা থেকেই নিবিড় সম্পর্ক তার। ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়ন এলাকার রামপুরের বাসিন্দা পিতা মরহুম মুক্তিযুদ্ধা আয়েত আলী ব্যাপারি ছিলেন আপাদমস্তক বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। তৎকালীন সময়ে দেবপুর বাজার এলাকায় ব্যাবসা করতেন তিনি সেই সাথে আওয়ামীলীগের রাজননীতির সাথে জড়িত ছিলেন অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে। তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর সহচর হিসেবে পরিচিত, মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার চেয়ারম্যান এর সাথে তার রাজনৈতিক সখ্যতা ছিলো বেশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের এ অঞ্চলে আওয়ামিলীগের রাজনীতিকে চাঙ্গা করতে, প্রফেসর খোরশেদ আলম, মরহুম বাশার চেয়ারম্যান, মতিন খসরু, আফজাল খান সহ আরো যারা ছিলেন তাদের সাথে প্রতিনিয়ত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন দেবপুর বাজারের দোকানে বসেই।

৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ময়নামতির মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বাসার চেয়ারম্যানের সাথে হাতিমারা ক্যাম্পে চলে যান তিনিও। বাবা যুদ্ধে গেলে মায়ের সাথে বড় ভাই শাহজাহান সহ নদীর ওপারে সামপুর এলাকায় ডেঙ্গুর বাড়িতে যুদ্ধকালীন সময়ে ৯মাস ওখানেই ছিলেন।

ওমর ফারুক স্কুল জীবন থেকেই নৌকার মিছিলে ছোটাছুটি। ১৯৮৯ সালে কুমিল্লা সরকারী কলেজে ছাত্রসংসদ নির্বাচনে সম্পাদক পদে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ। ৯০ সালে স্বৈরাচার বিরুদ্ধি আনন্দোলনে কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান আজাদ ও সাধারন সম্পাদক পার্থসারথী দত্তের নেতৃত্বে কুমিল্লা কলেজের ভিপি চিত্ত বাবুর সাথে রাজপথে আনন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকায় ছিলেন তিনি । ৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুল মতিন খসরুর নৌকা প্রতীকের নির্বাচনে দলের পক্ষে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন। ৯২ সালে বুড়িচং থানা ছাত্রলীগের যুগ্মআহবায়ক পদে দায়িত্ব পালন করেন। বলিষ্ঠ সাংগঠনিক ভুমিকা ও দক্ষতার কারনে ৯৩ সালে সম্মেলনের মাধ্যামে বুড়িচং থান ছাত্রলীগে বিনাপ্রতিদ্বনীতায় সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ এর ১৫ই ফেব্রুয়ারী বিএনপির ভোটারবিহীন তামাশার নির্বাচনে অসহযোগ আনন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আনন্দেলন সংগ্রামে ছিলেন রাজপথে । ৯৮ সালে বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হলেও প্রথম অধিভেশনের পর দ্বিতীয় অধিবেশনে সম্মেলন পন্ড হয়ে যায় সেবার। এতেও থেমে থাকেন নি ফারুক। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দলের পক্ষে । ২০০৪ সালে বুড়িচং উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
এরপর ১/১১ পর্যন্ত সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে কারামুক্ত করতে রাজপথে অবরোধ সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ওমর ফারুক। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে বৃহত্তর ভারেল্লা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটির সদস্য ছিলেন। এরপর ২০১৫ সালে ভারেল্লা দক্ষিন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ন আহবায়ক নির্বাচিত হন ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ কাউন্সিল ভোটে পাশ করে নৌকা প্রতিকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তবে সে যাত্রায় জনগণের ভোট পেলেও প্রশাসনের বিমুখী ভুমিকা প্রতিপক্ষ সতন্ত্র পার্থীর অর্থ আর স্বার্থান্বেষী দলীয় কিছু নেতার কারনেই তাকে পরাজিত হতে হয়েছে বলেই তিনি মনে করেন। এতোকিছুর পরেও মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন নি আওয়ামিলীগ থেকে। দলের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কমতি হয়নি কখনোই। দলের জন্য নিজের সর্বস্ব দিয়ে খেটে গেছেন ওমর ফারুক। ২০১৯ সালে বুড়িচং উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন, ২০২০ সালে বুড়িচং উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন এখনো। দলের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ।

অতিরিক্ত রাজনৈতিক ঝোকের কারনে এইচএসসি পাশের পর ডিগ্রিতে ভর্তি হলেও লেখাপড়া আর করা হয়নি তার। ব্যবসা আর রাজনীতিতেই সময় দেন পুরোদস্তুর। আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত প্রাণ নিরহংকারী রাজনৈতিক কর্মী ওমর ফারুক জনপ্রতিনিধি না হলেও এলাকার মানুষের কল্যাণে তাদের পাশে রয়েছেন সব সময়। স্থানীয় ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নবাসীর যে কোন সমস্যা, সামাজিক আচার অনুষ্ঠান, খেলাধুলা সহ সামাজিক সমস্যা নিরসনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি। সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুব ও তরুণ সমাজের কাছে নিজেকে মেলে ধরেছেন নতুন ভাবে। করোনায় বিপর্যস্ত এলাকাবাসীর পাশে থেকে সাহায্য সহায়তা করেছেন যতটুকু সম্ভব। তার বড় ভাই শাহজাহান দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কমিটির সহ সভাপতি। ওমর ফারুকের বড় ছেলে আরাফাত অর্ণব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছাত্রলীগের কর্মী এবং সামাজিক সংগঠন উইনিটি ফর হিউম্যানিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।

আসছে ইউপি নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতিকে চেয়ারম্যান পদে ভোট যুদ্ধে নামতে আগ্রহী ত্যাগী ও বঞ্চিত বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক আদর্শের কর্মী ওমর ফারুক। সব ঠিক থাকলে তিনিই নৌকা প্রতিক পাবেন বলেও শতভাগ আশাবাদী তিনি। সকলের দোয়ায় মনোনয়ন পেলে নিজের সর্বস্ব দিয়ে এলাকার অসহায় নিপিড়ীত মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চান তিনি। সচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ভাবে গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে সুষম উন্নয়নের পাশাপাশি আধুনিক ও নান্দনিক ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে গড়ে তুলতে চান দক্ষিণ ভারেল্লা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকাকে। নির্বাচিত হলে ইউনিয়নের সকলকে নিয়ে উন্মুক্ত আলেচনার মাধ্যমে সমন্বয় করে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন বলেও জানান।