প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নারী সমাজকে নিজ নিজ অধিকার আদায়ে নিজেদের যোগ্যতর হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সমাজকে যদি আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই তাহলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমি নারীদের একটা কথাই বলব- নারীদের অধিকার দাও, অধিকার দাও বলে চিৎকার করা, বলা আর বক্তৃতা দেওয়া- এতে কিন্তু অধিকার আদায় হয় না। অধিকার আদায় করে নিতে হবে। অধিকার আদায়ের মতো যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

আজ সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির তিনি ভাষণে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সেই যোগ্যতা আসবে শিক্ষা-দীক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। যে কারণে দেশ স্বাধীন হবার পরই এদেশে নারী শিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং অবৈতনিক করে দেন জাতির পিতা।

শেখ হাসিনা অতীত স্মরণ করে বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে দেখেছেন কোনো নারীই ডিসি, এসপির কোনো পদ পেত না, উপজেলায় কোনো ইউএনওর পদ পেত না কিন্তু তার সরকার ক্ষমতায় আসা পর থেকে এখন সকল পদে নারীরা আসীন হয়েছেন।

তিনি উদাহরণ দেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদীয় উপনেতা সবাই মহিলা। এটাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় অর্জন। তিনি বলেন, অতীতে ধর্মের নাম নিয়ে বা সামাজিকতার কথা বলে নারীকে পশ্চাৎপদ করে রাখার অপচেষ্টা সমাজ থেকে দূর হয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে জীবন সংগ্রামে জয়ী নারীদের সম্মাননা দেওয়ার জন্য বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য প্রতি বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পাঁচজন ‘জয়িতা’কে জাতীয় পর্যায়ে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মানুষ করার পাশাপাশি যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জেলে থাকতেন তখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে দলের কার্যক্রম দেখা, আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলা সবকিছু তিনিই করেছেন পর্দার আড়ালে থেকে, কখনও কোনো প্রচার তিনি চাননি। কাজেই, আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি- তার পেছনে আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অনেক অবদান রয়েছে।

তাঁর মায়ের মতামতকে জাতির পিতা সব সময়ই অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো অর্জনের পেছনে একজন নারীর যে অবদান থাকে, সেটাই এখানে সবথেকে বড় কথা। নারীদের অবগুণ্ঠন মুক্ত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য এ সময় উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।