মারুফ আহমেদ


করোনার প্রভাব বেড়ে গেলে সংক্রমন এড়াতে সরকার সারাদেশে কঠোর লগডাউন ঘোষনার পর গণপরিবহন নিষিদ্ধ করলেও ঘর মুখো মানুষের ¯্রােত বাড়ছে মহাসড়কে। এতে গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নন্দনপুর থেকে বুড়িচংয়ের নিমসার পর্যন্ত ফোরলেনের উভয় অংশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রচন্ড গরমে এসময় বিভিন্ন গন্তবমুখী হাজার হাজার যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।


সারাদেশে করোনার প্রভাব বেড়ে গেলে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য লক ডাউন ঘোষনা করে। পরবর্তীতে সংক্রমন ও মৃত্যুর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়ে গেলে সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে আরো এক সপ্তাহ কঠোর লগডাউনের পরবর্তী ঘোষনা দেয়। এসময় সবকিছু খোলা থাকলেও সরকার দুরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রাখে। এতে এমনিতেই জনদুর্ভোগ সৃষ্ট হয়। পরবর্তীতে আগামী ১৪ এপ্রিলের কঠোর লগডাউনের ঘোষনায় মানুষ অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি লগডাউন দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কায় মানুষ গ্রামমুখী হয়ে উঠে। একদিকে দুরপাল্লার যানবাহন বন্ধ,অন্যদিকে ঘরমুখো মানুষের স্রোত মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের বিভিন্নস্থানে হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়।

এসময় প্রাইভেটকার,মাইক্রোবাস,সিএনজি অটোরিক্সার,ইজিবাইক,ছোট পিক-আপ ,এম্ব্যুলেন্সযোগে বিভিন্ন গন্তব্যে পথে মানুষজনদের ছুটতে দেখা যায়। কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় নোয়াখালীগামী জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে কথা হয়। পরিবার নিয়ে তিনি কুমিল্লার কর্মস্থল থেকে তিনি নিজ বাড়ি নোয়াখালী ফিরছিলেন। তিনি জানান, লগডাউন বেড়ে গেলে ঈদে পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরতে কষ্ট হবে। এজন্য আগেই পরিবার বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সরকার গনপরিবহন বন্ধ করলেও সড়কে বাস ছাড়া বাকী সব যানবাহনই আছে। তবুও ৩/৪ গুন অতিরিক্ত ভাড়ায় বাড়ি যেতে হচ্ছে। যা এতটাই অতিরিক্ত যে, বলা চলে অস্বাভাবিক। এদিকে ঘরমুখো মানুষদের বহনে জেলার বিভিন্নস্থান থেকে হাজার হাজার বিভিন্ন শ্রেনীর যানবাহন মহাসড়কে যাত্রী নিতে ছুটে আসায় কুমিল্লা অংশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এতে কুমিল্লা সদর দক্ষিনের নন্দনপুর কোটবাড়ি রাস্তার মাথা থেকে বুড়িচং উপজেলার নিমসার পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফোরলেনের উভয় অংশে যানজটের সৃষ্ট হয়। একদিকে যানজন,অন্যদিকে অসহনীয় গরম ঘরমুখো নারী,শিশুসহ বয়স্ক লোকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মহাসড়কের আলেখারচরে কথা হয় মাইক্রোবাস চালক বাদলের সাথে। তিনি বলেন, ইজিবাইক,রিক্সাসহ হাজার হাজার হাজার এসব যানবাহন রাস্তায় নামায় প্রাইভেটকার,মাইক্রোবাস,কাভার্ডভ্যান,লরিসহ অন্যান্য গাড়ির সাথে গতিতে কুলিয়ে উঠতে না পারায় আস্তে আস্তে গাড়িগুলোর গতি কমতে থাকে একপর্যায়ে সেটা দীর্ঘ হতে হতে যানজটের সৃষ্টি হয়।

অনেক প্রাইভেটকার চালক আরো বলেন,ইজিবাইক,সিএনজি অটোরিক্সা না থাকলে এই যানজটের সৃষ্টি হতো না।
মহাসড়কের যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান জানান, রমজান,লকডাউন,পয়েলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা সারাদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ মহাসড়কে যানজন নিরসনে ছিলাম। তাছাড়াও নিয়ম না মানায় বেশ কিছু যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য পরিবহন আটক করি।
ক্যাপশনঃ ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা থেকে সোমবার দুপুর ও রাত ৮ টায় তোলা ছবি