করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও সংক্রমণ রোধে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী ‘কঠোর লকডাউন’। যেখানে ‘মুভমেন্ট পাস’ ছাড়া কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। এই লকডাউন পালনে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীকাল কাউকে সড়ক-রাস্তাঘাট এবং বাইরে দেখতে চাই না। বিনা প্রয়োজনে কাউকে দেখতে চাই না। আমরা চাপপ্রয়োগের চেয়ে নিজেদের উদ্যোগেই এই দায়িত্ব পালন করবে। এসব না মানলে সমগ্র বাংলাদেশকে আইসোলেশনে নিতে হবে’।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) লকডাউনে পুলিশের ‘মুভমেন্ট পাস’ অ্যাপসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘গত বছর যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি, এবারো দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ন্ত্রণ করব। তবে অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা বন্ধ করতে হবে। গত বছর লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। এবারো গত দুই দিন ধরে ঢাকা ছাড়ছেন, এগুলো ঠিক না। এগুলো নৈতিকভাবে খুবই অন্যায় কাজ। গতকাল বিভিন্নভাবে যারা যেখানে পৌঁছেছেন, তারা সেখানেই থাকবেন। গ্রামবাসীকে বলব, লক্ষ রাখবেন, যদি আক্রান্ত কেউ থাকেন, তাহলে সে গ্রামের অন্যকেও আক্রান্ত করবে। তারা সাতদিন ঘরে থাকবেন। সরকার যেভাবে বলছে সেভাবে নির্দেশ মানবেন’।
পুলিশ মহাপরিদর্শক আরো বলেন, ‘সীমিত কারণে বের হওয়া লাগতে পারে। তারা মুভমেন্ট পাস নেবেন। রাস্তাঘাটে কোনো আড্ডা দেবেন না। বিভিন্ন সড়কে, মোড়ে আড্ডা দেবেন না। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তরুণরা কেউ বের হবেন না। বের হতে হলে অবশ্যই দ্রুত ঘরে ফিরতে হবে’।
গাড়ি বের করার বিষয়েও নিরুৎসাহী করে তিনি বলেন, অবশ্যই মুভমেন্ট পাস নেবেন। পুলিশকে সবাই সহযোগিতা করবেন বলেও তিনি অনুরোধ করেন।
করোনা পরিস্থিতিতে সবাইকে সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে আইজিপি বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা কোনো প্রাণহানি চাই না। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের প্রধান উপায় হচ্ছে ব্যক্তিগত সচেতনতা। আমাদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। তা ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া। এসব বিধি আমাদের মনোযোগ ও আন্তরিকতা দিয়ে মানতে হবে’।
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া সর্বাত্মক লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলাচলের জন্য ১৪টি শ্রেণিতে ‘মুভমেন্ট পাস’ দেবে পুলিশ। মুদি দোকানে কেনাকাটা, কাঁচা বাজার, ওষুধপত্র, চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত, কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, পাইকারি বা খুচরা ক্রয়, পর্যটন, মৃতদেহ সৎকার, ব্যবসা ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে এই ‘মুভমেন্ট পাস’।
এ ছাড়া যাদের বাইরে চলাফেরা প্রয়োজন কিন্তু কোনো ক্যাটাগরির সঙ্গে মিল নেই, তাদের অন্যান্য ক্যাটাগরিতে পাস দেয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে বলেও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।