করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকারি বিধি-নিষেধের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হয়েছে শপিং মল। ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত। টানা ১১ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৫ এপ্রিল দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্য ফিরে আসে বিপণিবিতানগুলোতে।
দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দেওয়ার পর সাধারণ ছুটির দিন গত শুক্রবার রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ শপিং মল বসুন্ধরা সিটি ছিল ঈদ কেনাকাটায় ভীষণ ব্যস্ত। পছন্দের নতুন জামা, জুতা, অলংকার আর প্রসাধনসামগ্রী কিনতে ক্রেতাসাধারণ ছুটে এসেছিল বসুন্ধরা শপিং মলে।
গতকাল শনিবারও সরেজমিনে বসুন্ধরা শপিং মলে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতাসাধারণের সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার লম্বা লাইন। মুখে মাস্ক, হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে নিরাপত্তাকর্মীরা এই শপিং মলে প্রবেশের সময় নিশ্চিত করছেন স্বাস্থ্যবিধি। শপিং মলে প্রবেশের পরও নিরাপত্তাকর্মীর চোখে যদি পড়ে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের কোনো দৃশ্য, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে সচেতন করে দিচ্ছেন।
শপিং মলটির ভেতরে বিভিন্ন লেভেলে গিয়ে দেখা গেছে, মূলত পোশাক এবং জুতার দোকানে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভিড়। তুলনামূলক কম ভিড় দেখা গেছে মোবাইল ফোনের দোকানগুলোয়। আর অলংকার ব্যবসায়ীরা জানালেন, গত চার-পাঁচ দিনের তুলনায় গতকাল তাঁদের বিক্রি ছিল ভালো। সদ্য বিবাহিত বৃষ্টি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আসলে কেনাকাটা করতে আসতে তো হতোই। নতুন বিয়ে হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবার জন্য নতুন জামাকাপড় কিনলাম’।
বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নিশাত-রবিন দম্পতি এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। জানালেন, কেনাকাটা করতে তাঁদের প্রথম পছন্দ বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বসুন্ধরা সিটিতে বাড়তে থাকে ক্রেতার ভিড়। সঙ্গে বেচাবিক্রিও। কমপ্লেক্সটির পার্কিংয়ে গিয়ে দেখা গেছে, কেনাকাটা করতে আসা মানুষের গাড়িতে পার্কিং প্রায় পূর্ণ।
অন্যদিকে, রাজধানীর আরেক শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্কে গিয়েও দেখা গেছে নানা বয়সী মানুষের ব্যাপক ভিড়। মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের আনাগোনা ছিল এই শপিং মলে। জনপ্রিয় পোশাকের ব্র্যান্ডগুলোর শোরুমে পা ফেলার জায়গা ছিল না। দেশীয় ব্র্যান্ড আড়ংয়ে লম্বা লাইন ধরে ক্রেতাদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে রাখা হয়েছে বাই ওয়ান গেট ওয়ান, ২০-৬০% ডিসকাউন্ট অফার। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের বাইরে অন্য দোকানগুলোতেও নানা ছাড় দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে।
ঈদে পোশাকের বৈচিত্র্য কেমন জানতে চাইলে বনানী থেকে আসা বাপ্পী ও উষা বলেন, এবার কালেকশন অনেক বেশি। তবে নতুনত্ব কম। কিছু ব্র্যান্ডের দোকানে কালেকশন বেশ ভালো। তবে বেশির ভাগ শপে ডিজাইন গত বছরের মতো।
করোনা মহামারি বিবেচনায় রেখে যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজ, তাপমাত্রা মাপা ও মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করেছে।