বিশেষ প্রতিনিধি:

মতিঝিলের নিহন মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা নিয়ে গাড়িযোগে রওনা দেন একজন ব্যবসায়ী। পথিমধ্যে মটর সাইকেলযোগে গাড়ির গতিরোধ করে ফিল্মি স্টাইলে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় একটি ডাকাত চক্র।

ঘটনাটি ঘটে গত ২৮শে আগষ্ট আনুমানিক দুপুর ১ঃ২০ মিনিটে মৌচাক ফ্লাইওভারের উপর। ৬ জনের একটি ডাকাত দল ৩টি মটর সাইকেল দিয়ে ব্যবসায়ীর গাড়ি গতিরোধ করে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য প্রথমে ২ রাউন্ড ফাকা গুলি করে এরপর হাতুরী দিয়ে পিটিয়ে গাড়ির দরজার গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে এবং গাড়ির ব্যাগডালা খুলে ভেতরে থাকা একটি কালো ব্যাগ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় ডিএমপির রমনা থানায় একটি মামলা রুজু হয়৷ মামলার তদন্তে নামে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিবির গোয়েন্দা রমনা বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত দলের ৩ সদস্য কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো – ১) জলিল মোল্লা, ২) রিয়াজ, ৩)দীপু। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ২ টি বিদেশী রিভলভার ৫০ রাউন্ড গুলি, ২টি মটর সাইকেল ও লুন্ঠিত ১ লক্ষ টাকা জব্দ করা হয়। বৃহস্পতিবার(২৩ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিঃ কমিশনার হাফিজ আক্তার।

এসময় তিনি আরও বলেন উদ্ধারকৃত অস্ত্র দুইটি জার্মানির তৈরি। ডাকাত চক্রটি খুবই চৌকস। তারা ঢাকা শহরে ঘুরে ঘুরে সিসি ক্যামেরা চিন্হিত করতো। এরপর সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে গিয়ে অত্যন্ত সুকৌশলে ডাকাতি সংঘটিত করে আসছিলো। ডাকাতির পর দ্রুত স্থান ত্যাগ করার জন্য অধকম জ্যামজট রাস্তা ব্যবহার করতো। বিশেষ করে শনিবার সরকারী ছুটি থাকায় রাস্তাঘাটে গাড়ির চাপ কম থাকে এই দিন টাকেই তারা ডাকাতির জন্য সুবিধাজনক দিন হিসেবে বেছে নিয়েছিলো।

ডিবির এই কর্মকর্তা আরও জানান, ডাকাত চক্রটি ডাকাতি সংঘটিত করার পূর্বে বিভিন্ন জায়গা জমি বা সম্পত্তি বায়না করে রাখতো। ডাকাতির টাকা সরাসরি জমি বা সম্পত্তির মালিক কে দিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রেশন করে নিতো। মূলত ডাকাতি করেই তারা বিপুল পরিমান সম্পত্তির মালিক বনে যায়। বিপুল পরিমান সম্পত্তির অধিকারী হয়ে তারা সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হবার নেশায় মত্ত হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটি পুলিশকে আরো বেশ কতগুলো ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে।উল্লেখ গত ৪ই সেপ্টেম্বর অপর এক ব্যবসায়ী মতিঝিল থেকে ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ফেরার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপার থেকে ডাকাত চক্র টাকা ছিনিয়ে নেয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীরাই উক্ত ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য প্রদান করেছে।