ডা. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম,মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট অ্যান্ড ক্যানসার রোগ বিশেষজ্ঞ

লিম্ফোমা এমন এক ক্যানসার, যা লিম্ফেটিক সিস্টেমে হয়ে থাকে। লিম্ফনোড (লিম্ফ গ্র্যান্ড), স্পিøøন, থাইমাস গ্ল্যান্ড এবং বোনম্যারোর (অস্থিমজ্জা) মাধ্যমে লিম্ফেটিক সিস্টেম গঠিত। সাধারণত এসব অংশে লিম্ফোমা দেখা দেয়। এ ছাড়া শরীরের অন্যান্য অংশেও এ রোগ হতে পারে। এটি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। প্রধান দুটি লিম্ফোমা হলো-হজকিনস লিম্ফোমা এবং নন হজকিনস লিম্ফোমা।

এ রোগ হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। বিভিন্ন কারণে এ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। লিম্ফোমায় আক্রান্তদের মধ্যে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তা হলো-অবসাদ, ঘাড়ে শক্ত পি- দেখা দেওয়া, খাবার উগরে আসা, কর্কশ কণ্ঠস্বর, মাংসেপশিতে ব্যথা, মুখে ব্যথা, কুঁচকি ফুলে যাওয়া, মুখে ঘা, সারা শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া, কাঁধে শক্ত পি- দেখা দেওয়া, কানে চুলকানি ইত্যাদি।

হজকিনস লিম্ফোমার ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো হলো- আগে এপস্টাইন বার ভাইরাসের (এবিভি) কারণে ইনফেকশন অথবা মনোনিউক্লিওসিস দেখা দিলে। দুর্বল ইমিউন সিস্টেম। যাদের বয়স ১৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং যাদের বয়স ৫৫ বছরের বেশি তাদের এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ৫ শতাংশ ব্যক্তি বংশগত কারণে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

নন হজকিনস লিম্ফোমার ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো হলো- যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি, তাদের এ রোগ হতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু রাসায়নিক পদার্থ, যেমন-বেনজিন এবং কীটনাশকের সংস্পর্শে এলে এ রোগ হতে পারে। আগে কেমোথেরাপি অথবা রেডিয়েশন থেরাপি গ্রহণ করলে রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। রেডিয়েশন এক্সপোজার। দুর্বল ইমিউন সিস্টেম এবং এইচআইভি ইনফেকশন। এইচআইভি, এইচটিএলভি-১, এইচএইচভি বা এপস্টাইন বার ভাইরাসে (এবিভি) ইনফেকশন দেখা দিলে রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হ্যালাকোব্যাকটার পেলোরাইয়ের কারণে ক্রনিক ইনফেকশন দেখা এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

চিকিৎসা : এ রোগের ধরন, তীব্রতার ওপর নির্ভর করে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা করা হয়। কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন, স্টেমসেল ট্রান্সপ্লান্ট এবং ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়।

পরামর্শ : লিম্ফোমা প্রতিরোধে কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। ঘন ঘন হাত ধোঁয়া, নিরাপদ যৌন সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে এ ধরনের ইনফেকশন প্রতিরোধ করা যায়। এ ছাড়া অন্যের ব্যবহৃত ইনজেকশনের সুচ, রেজার, টুথব্রাশ ব্যবহার করা উচিত নয়।

হজকিনস লিম্ফোমা থেকে মুক্তি মেলে। তবে হজকিনস লিম্ফোমা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সুস্থ হতে বেশ সময় লাগে। অনেক ব্যক্তিই লিম্ফোমার চিকিৎসা করে সুস্থভাবে বেঁচেও আছেন।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট

ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা

চেম্বার : ল্যাব এইড, পল্লবী,

সেকশন-৭, মিরপুর, ঢাকা

০১৮১৯৪৯২৪২৩, ০১৯৮৮১১০৪১৮